ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

কর্ণফুলীতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু সোমবার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৯
কর্ণফুলীতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু সোমবার ফাইল ফটো

চট্টগ্রাম: দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে কর্ণফুলী নদীর দুই পাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। সোমবার (৪ ফেব্রুয়ারি) থেকে এ অভিযান শুরু হবে।

বৃহস্পতিবার (৩১ জানুয়ারি) সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কর্ণফুলীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ সংক্রান্ত জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন বাংলানিউজকে জানান, কর্ণফুলী নদীর দুই পাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে হাইকোর্টের একটি আদেশ রয়েছে।

কিন্তু অর্থ বরাদ্দের অভাবে এতদিন উচ্ছেদ অভিযান শুরু করতে পারেনি জেলা প্রশাসন।

তিনি বলেন, অর্থ বরাদ্দের বিষয়ে ভূমিমন্ত্রীর আশ্বাসে আমরা উচ্ছেদ অভিযানে যাচ্ছি।

সোমবার থেকে কর্ণফুলীর দুই পাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান শুরু করা হবে।

আরও খবর>>
** 
কর্ণফুলীর তীরের ২১৮১ অবৈধ স্থাপনা অপসারণের নির্দেশ

 

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ২০১৫ সালে কর্ণফুলীর সীমানা নির্ধারনের পর নদীর দুই পাশে সীমানা পিলার স্থাপন করে প্রশাসন। তবে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ায় কিছু পিলার ক্ষতিগ্রস্ত এবং কিছু পিলার দখলদাররা ভেঙ্গে ফেলে।  

এ জন্য উচ্ছেদ অভিযানের আগে শুক্রবার (১ ফেব্রুয়ারি) থেকে সীমানা পিলার ঠিক করা এবং অবৈধ দখলদারদের নিজ দায়িত্বে সরে যেতে মাইকিং কার্যক্রম চালাবে জেলা প্রশাসন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে পতেঙ্গা সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাহমিলুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, উচ্ছেদ অভিযানের আগে আমরা সীমানা পিলার ঠিক করবো। অবৈধ দখলদারদের নিজ থেকে সরে যেতে মাইকিং করবো। এরপর সোমবার থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হবে।

তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে কর্ণফুলীর উত্তর পাশে (শহরের অংশে) সীমানা পিলার ঠিক করার কাজ ও উচ্ছেদ অভিযান শুরু হবে। এ পাশে কাজ শেষ হলে দক্ষিণ পাশে (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) অংশে) সীমানা পিলার ঠিক করার কাজ ও উচ্ছেদ অভিযান শুরু করা হবে।

২০১০ সালের ১৮ জুলাই পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস পিস ফর বাংলাদেশ এর পক্ষে জনস্বার্থে করা এক রিট আবেদনে হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ কর্ণফুলী নদী দখল, মাটি ভরাট ও নদীতে সব ধরনের স্থাপনা নির্মাণ বন্ধের নির্দেশ দেয়। একইসঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনকে পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে নদীর প্রকৃত সীমানা নির্ধারণ করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।

আদালতের নির্দেশের পর চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ২০১৪ সালের ৯ নভেম্বর কর্ণফুলীর দুই তীরে সীমানা নির্ধারণের কাজ শুরু করে। নগরের নেভাল অ্যাকাডেমি সংলগ্ন নদীর মোহনা থেকে মোহরা এলাকা পর্যন্ত অংশে ২০১৫ সালে জরিপের কাজ শেষ করা হয়।

জরিপে নদীর দুই তীরে প্রায় আড়াই হাজার অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করে জেলা প্রশাসন। প্রতিবেদনটি ২০১৫ সালের ৯ নভেম্বর উচ্চ আদালতে দাখিল করা হয়।

এরপর ২০১৬ সালের ১৬ অগাস্ট হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ কর্ণফুলীর দুই তীরে গড়ে ওঠা স্থাপনা সরাতে ৯০ দিনের সময় বেঁধে দেয়। ২০১৭ সালের ২৫ নভেম্বর উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এক কোটি ২০ লাখ টাকা অর্থ বরাদ্দ চেয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।

এরপর আরও কয়েকবার অর্থ বরাদ্দ চেয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিলেও সাড়া মেলেনি। ফলে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযানও শুরু করতে পারেনি জেলা প্রশাসন।

সর্বশেষ অর্থ বরাদ্দের বিষয়ে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের আশ্বাসে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৯
এমআর/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।