চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড সূত্র জানায়, এ বছর ১ হাজার ৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ১৯০টি কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে। এরমধ্যে চট্টগ্রাম নগর ও জেলার ৬৯৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১ লাখ ৪ হাজার ৩১০ জন শিক্ষার্থী ১১২টি কেন্দ্রে, কক্সবাজারের ১৩৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২১ হাজার ৩৫০ জন শিক্ষার্থী ২৬টি কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নেবে।
এছাড়াও তিন পার্বত্য জেলার মধ্যে রাঙামাটির ৮০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৯ হাজার ২৭ জন শিক্ষার্থী ১৯টি কেন্দ্রে, খাগড়াছড়ির ৭৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১০ হাজার ৭২০ জন শিক্ষার্থী ২১টি কেন্দ্রে এবং বান্দরবানের ৪০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৪ হাজার ২৮২ জন শিক্ষার্থী ১২টি কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নেবে।
বরাবরের মতো এবারও ছেলে পরীক্ষার্থীর চেয়ে মেয়ে পরীক্ষার্থীর সংখ্যাই বেশি চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে।
ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক পরীক্ষার্থী অংশ নেবে এ বছর। ৬৫ হাজার ২৭১ জন পরীক্ষার্থী এ বিভাগ থেকে পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়াও মানবিক বিভাগ থেকে ৫১ হাজার ৫৭ জন এবং বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৩৩ হাজার ৫৩৯ জন পরীক্ষার্থী এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে।
প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে দুই স্তরের নিরাপত্তা:
এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র কেন্দ্রে পাঠাতে এ বছর দুই স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হচ্ছে। বিগত বছরগুলোতে বাদামি রঙের কাগজের খামে সিলগালা করে প্রশ্নপত্র কেন্দ্রে পাঠানো হলেও এবার অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলের প্যাকেটে ভরে প্রশ্নপত্র কেন্দ্রে পাঠানো হবে।
অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলের প্যাকেট যাতে কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না হয়, সে জন্য এসব প্যাকেটের উপর আরেকটি নিরাপত্তা প্যাকেট ‘নিরাপত্তা ট্যাগ’ দিয়ে মোড়ানো থাকবে। এতে কেন্দ্রে পাঠানোর সময় প্রশ্নপত্র ফাঁসের কোনো সম্ভাবনা থাকবে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে ৩০ মিনিট আগে:
পরীক্ষার পূর্ব মুহুর্তে প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে গত বছরের এইচএসসি ও জেএসসি পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট সময়ের ৩০ মিনিট আগে কেন্দ্রে উপস্থিত থাকার নির্দেশনা দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এবছর এসএসসি পরীক্ষায়ও পরীক্ষার্থীদের এ নিদের্শনা মেনে চলতে হবে। অর্থাৎ পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগেই কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে।
ভিজিল্যান্স টিমের সংখ্যা বাড়ছে:
এসএসসি পরীক্ষা সুষ্ঠু এবং সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে এ বছর চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের ৭০টি ভিজিল্যান্স টিম এবং ১০টি স্পেশাল ভিজিল্যান্স টিম মাঠে কাজ করবে। গত বছর ৫০টি ভিজিল্যান্স টিম এবং ১০টি স্পেশাল ভিজিল্যান্স টিম মাঠে কাজ করে।
প্রশ্নফাঁসকারী চক্র পুরোপুরি হতাশ হবে:
চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ মাহবুব হাসান বাংলানিউজকে জানান, এসএসসি পরীক্ষা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে বোর্ডের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি আমরা নিয়েছি। প্রশ্নফাঁস করতে যেসব চক্র মাঠে কাজ করে, এবার তারা ব্যর্থ হবেন বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস। কারণ প্রশ্নপত্রের নিরাপত্তায় আমাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে বিজি প্রেস থেকে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলের প্যাকেট ও নিরাপত্তা ট্যাগ সম্বলিত প্যাকেটে ভরে প্রশ্নপত্র সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের ট্রেজারি শাখায় পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে ম্যাজিস্ট্রেট, ট্যাগ অফিসার এবং কেন্দ্র সচিব প্রশ্নপত্র কেন্দ্রে নিয়ে যাবেন। পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে সেট কোড নির্দেশনা পাওয়ার পর ট্যাগ অফিসার এবং পুলিশের উপস্থিতিতে কেন্দ্র সচিব প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খুলবেন। ফলে পথে প্রশ্নফাঁসের যে সম্ভাবনা থাকে, তা পুরোপুরি বন্ধ হবে।
মোহাম্মদ মাহবুব হাসান বলেন, ২০১৮ সালের এসএসসি পরীক্ষায় পরীক্ষা শুরুর আগমুহূর্তে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ এসেছে। সারাদেশে অভিন্ন প্রশ্নপত্রের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নির্বাচনের বছরে সরকার এবং দেশের শিক্ষা খাতের অসামান্য অর্জনকে বিতর্কিত করতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই কুচক্রী মহল এ কাণ্ড ঘটিয়েছে। পরীক্ষার্থী-অভিভাবকসহ দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে। তবে এবার তারা পুরোপুরিই হতাশ হবেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০১৯
এমআর/টিসি