ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

পাখির ‘হট স্পট’ চবি, ক্যাম্পাসজুড়ে ২১৫ প্রজাতির পাখি

জমির উদ্দিন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৯
পাখির ‘হট স্পট’ চবি, ক্যাম্পাসজুড়ে ২১৫ প্রজাতির পাখি চবি ক্যাম্পাসে জীববৈচিত্র্য

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েক দশকে বেড়েছে পাখির সংখ্যা। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ২১৫ প্রজাতির পাখির অস্থিত্ব রয়েছে বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে। অথচ কয়েক দশক আগেও পাখির সংখ্যা ছিল  ৭৯ প্রজাতির। 

২০১৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গবেষণাটি পরিচালনা করেন প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মো.ফরিদ আহসান, মো. তারিক কবির, মো. মিজানুর রহমান ও মো. মনিরুল ইসলাম। যেটি ওই বছরের জুনে ভারতের থ্রেটেন্ড ট্রেক্সা জার্নালে প্রকাশিত হয়।

ভারতের থ্রেটেন্ড ট্রেক্সা জার্নালে প্রকাশিত হওয়া পাখি নিয়ে পরিচালিত জরিপটি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ ক্যাম্পাসে পাখির অবস্থান ও সংখ্যার অনুসন্ধানে এ পর্যন্ত চারটি জরিপ পরিচালনা করা হয়।

১৯৮৫ সালে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক গাজী সৈয়দ মোহাম্মদ আসমত ও অধ্যাপক বেনজির আহমেদ এবং চট্টগ্রাম বন গবেষণা ইন্সটিটিউটের সাবেক পরিচালক মোখলেসুর রহমান এই জরিপগুলো পরিচালনা করেন।

গাজী সৈয়দ আসমত বাংলানিউজকে জানান, ১৯৮৫ সালের জরিপে ক্যাম্পাসে ৭৯ প্রজাতির পাখি রেকর্ড করা হয়েছিল।

প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মো.ফরিদ আহসানের গবেষণার পরিপত্রে উল্লেখ করেন, ১৯৯৭ সালের নভেম্বর থেকে ১৯৯৯ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পাখির উপর একটি জরিপ পরিচালনা করা হয়। এতে ১১টি বর্গের ৩১টি গোত্রের ৬৮টির মধ্যে ৯২ প্রজাতির পাখি রেকর্ড করা হয়। ৯২ প্রজাতির মধ্যে ৩৮টি ছিল অগায়ক ( যা শতকরা ৪১ দশমিক ৩ শতাংশ) ও ৫৪টি গায়ক ( যা শতকরা ৫৮ দশমিক ৭) এবং ৭৬টি স্থায়ী (যা শতকরা ৮২ দশমিক ৬) ও ১৬টি পরিযায়ী(যা শতকরা ১৭ দশমিক ৪)।  

অগায়ক প্রজাতির মধ্যে ৩৫টি স্থায়ী (যা শতকরা ৯২ দশমিক ১) এবং ৩টি পরিযায়ী (যা শতকরা ৭ দশমিক ৯)। গায়ক প্রজাতির মধ্যে ৪২টি স্থায়ী (যা শতকরা ৭৭ দশমিক ৮) এবং ১২টি পরিযায়ী (যা শতকরা ২২ দশমিক ২)।

২০১৭ সালের ক্যাম্পাসে পাখির উপর চালানো জরিপের তথ্য বিবরণী।

সর্বশেষ ২০১৭ সালে অধ্যাপক মো.ফরিদ আহসান পাখিদের উপর যে জরিপটি পরিচালনা করেন সেখানে ৬২ টি গোত্রের মোট ২১৫ প্রজাতির পাখির রেকর্ড পান তিনি।

মো.ফরিদ আহসান বাংলানিউজকে জানান, ২১৫ প্রজাতির পাখির মধ্যে ১০৮টি গায়ক ও ১০৭টি অগায়ক পাখি রয়েছে। পাখিগুলোর মধ্যে ১৬০টি প্রজাতির পাখির স্থায়ী নিবাসই ক্যাম্পাসে। ৫১টি অতিথি পাখি হিসেবে মৌসুমে ক্যাম্পাসে আসে আবার চলে যায়। চারটি প্রজাতির পাখি রয়েছে যারা মাঝে মধ্যেই আসে।

 গবেষকরা গবেষণা করে দেখেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন কিছু পাখির প্রজাতির রয়েছে যা খুবই দুর্লভ। যেমন- মথুয়া, পিটা, গ্রিন ম্যাগপাই, কানাকুয়া, মালকোহা, রেড হেডেড ট্রাগল ও রুপাস নেকড লাফিং প্রাস।

চিত্রের মাধ্যমে দেখানো হয়েছে ক্যাম্পাসে কোথায় পাখির আশ্রয়স্থল
 প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক গাজী সৈয়দ মোহাম্মদ আসমত সম্প্রতি বাংলানিউজকে জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েক দশকে বন্যপ্রাণির সংখ্যা কমলেও পাখির সংখ্যা বেড়েছে। এর কারণ স্থানীয়রা কিছু কিছু বৃক্ষ লাগিয়েছেন। তারা জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। এছাড়া উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগ এবং বন ও পরিবেশ বিদ্যা ইনস্টিটিউটও বৃক্ষরোপণ করায় পাখির প্রজাতি বেড়েছে।  এছাড়া  দেশে পাখির হট স্পট হিসেবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে অন্তর্ভুক্ত করেছে বিশ্লেষকরা।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৯
জেইউ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।