ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ফারাজের প্রতিবাদের মুখে ‘ছাত্রীহত্যার’ ঘটনায় মামলা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৯
ফারাজের প্রতিবাদের মুখে ‘ছাত্রীহত্যার’ ঘটনায় মামলা

চট্টগ্রাম: রাউজানের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর ছেলে ফারাজ করিম চৌধুরীর প্রতিবাদের মুখে বাসের ধাক্কায় ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় মামলা হয়েছে।  

সোমবার (২১ জানুয়ারি) উপজেলা পরিষদ ভবনের সামনে রেশমা আকতার নামের ওই ছাত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় মামলা না করে রেশমার বাবা মো. মনির হোসেনকে ৩০ হাজার টাকা ‘ক্ষতিপূরণ’ দিয়ে আপস মিমাংসার চেষ্টা চালায় একটি পক্ষ।

খবর পেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন ফারাজ করিম চৌধুরী। যাতে তিনি লেখেন, আমি স্তব্ধ, আমি নির্বাক! মাত্র ৩০ হাজার টাকা দিয়ে কি একটি প্রাণ ফিরে আসবে ? শুনলাম মেয়ের বাবা-মা নাকি ভয়ে মামলা করছে না।

ভাবতে অবাক লাগে, আমাদের মধ্যে থাকা সিনিয়র নেতারা বাবাকে (সংসদ সদস্য) ফোন করে এ মামলা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। নোংরামি কোন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে দেখুন।

প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির পদত্যাগ দাবি করছি। ড্রাইভারকে গ্রেফতার করার পর শুনেছি মেয়ের বাবা মামলা করতে চাচ্ছে না। যদি কোন ধরনের ভয়ভীতি দেখানো হয়ে থাকে তবে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করুন। আপনি মামলা না করলে সরকার বাদী হয়ে মামলা করবে। রাজনীতি যে কত নোংরা তা আমার বলার ভাষা নেই। যে যার অবস্থান থেকে এগিয়ে আসুন, রুখে দিন সকল অন্যায়কে।

এরপর আরেক স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘অভিযুক্ত ড্রাইভারকে বাঁচানোর জন্য বিদেশ থেকে ফোন আসা  শুরু করে। আমাদের নিজ দলের অনেকে পরোক্ষভাবে তদবির করছে। আপনারা যত ইচ্ছে বাস মালিকের পক্ষে তদবির করুন, আমি ন্যায় বিচারের পক্ষেই লড়ে যাবো। সত্য ও সুন্দরের জয় অবশ্যই হবে। ’

মামলা হওয়ার পর ফারাজ করিম চৌধুরী লেখেন, ‘‘অবশেষে থানায় মামলা করেছে মেয়েটির বাবা। প্রথমে তাকে কিছু নেতা চাপে রেখে ভয়ভীতি দেখিয়ে মামলা করতে দেয়নি। পুলিশ মামলা নিতে চাননি। পরে আমার পরামর্শে সেন্ট্রাল বয়েজ অব রাউজানের সদস্যদের প্রচেষ্টায় মামলাটি করা হয়।

শুনেছি কয়েকটি সমিতি/সংগঠন এই ঘটনাটি টাকা-পয়সা দিয়ে মিমাংসা করতে চেয়েছিল। কিন্তু এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী বলেছেন, ‘রাউজানের প্রতিটি সন্তানই আমার ছেলেমেয়ে, আমার মেয়ের হত্যার বিচার হতেই হবে। ’

আমি ফারাজ করিম চৌধুরী, আমার জীবনে উপরে এক আল্লাহ্ ছাড়া কাউকে ভয় করি নি। মুখে মুখে জাতির পিতার আদর্শ সবাই পালন করে আজকাল। আমি স্রোতে থেকেও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় ও সত্যিকার অর্থে জনগণের হৃদয়ের কথাগুলো বলতে ভয় করি না। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু। ’’

জানতে চাইলে ফারাজ করিম বাংলানিউজকে বলেন, একজন তরুণ হিসেবে আমি সবসময় ন্যায়ের পক্ষে থাকবো। একজন ছাত্রীর জীবনের মূল্য ৩০ হাজার টাকা হতে পারে না। আমি যদি সোচ্চার না হতাম তবে এ ঘটনায় মামলাই হয়তো হতো না। ব্যক্তিগতভাবে আমি এ ঘটনায় দায়ী চালকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। শাস্তি হলে রাউজানে শুধু নয়, দেশে কোনো মায়ের বুক খালি হবে না মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায়। ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি হবে।

রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কেপায়েত উল্লাহ বাংলানিউজকে জানান, ওই ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে সোমবার অভিযুক্ত চালকের বিরুদ্ধে মামলা (নম্বর: ১১) করেছেন। নতুন সড়ক পরিবহন আইনের ১০৫ ধারায় মামলাটি হয়েছে। এ আইনে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ৫ বছর কারাদণ্ড ও ৫ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে।

তিনি জানান, আসামি গ্রেফতারসহ গাড়িটি জব্দ করা হয়েছে। রেশমার মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে কবর দেওয়া হয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ২১০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০১৯
এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।