‘এমভি বাংলার জয়যাত্রা’, ‘এমভি বাংলার অর্জন’, ‘এমটি বাংলার অগ্রযাত্রা’ নামের তিনটি জাহাজে অবস্থান করছেন ১৭ জন নারী অফিসার ও ক্যাডেট। বহরে যুক্ত হওয়ার অপেক্ষায় থাকা ‘এমটি বাংলার অগ্রদূত’ জাহাজের জন্য প্রস্তুত আছেন আরও ৬ জন।
>> বিএসসির বহরে নতুন জাহাজ, দিনে আয় ২৯ হাজার ডলার
এর বাইরে জাহাজে ওঠার জন্য চীন যাওয়ার ফ্লাইট ভাড়া, কর্মরত থাকাবস্থায় থাকা-খাওয়া, ২ সেট ইউনিফর্মসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সব জিনিসপত্র বিনামূল্যে পাবেন তারা। মেরিটাইম বিশ্বের নিয়ম অনুযায়ী তাদের প্রত্যেকের থাকবে ইন্স্যুরেন্স এবং প্রটেকশন অ্যান্ড ইনডেমনিটি (পিঅ্যান্ডআই) কাভারেজও। বন্দরে অবস্থানকালীন ইন্টারনেটের আওতায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ই-মেইল ও টেলিফোনে পরিবার সদস্যদের কুশল জানতে পারলেও জরুরি মুহূর্তে স্যাটেলাইট ফোনে জাহাজ থেকে স্বজনদের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন তারা।
বাংলানিউজকে এসব বিষয় নিশ্চিত করেছেন বিএসসির মহাব্যবস্থাপক ক্যাপ্টেন জামাল হোসাইন তালুকদার।
তিনি বলেন, বিএসসির তিনটি নতুন জাহাজ বিশ্বের বিভিন্ন বন্দর ও সমুদ্রে অবস্থান করছে। এসব জাহাজের চিফ ইঞ্জিনিয়ার ও মাস্টারদের সঙ্গে কথা হয়েছে আমার। তারা জানিয়েছেন, আমাদের নারী অফিসার ও ক্যাডেটরা সব চ্যালেঞ্জ জয় করে সততা, পেশাদারিত্ব ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, বিএসসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর ইয়াহ্ইয়া সৈয়দের আন্তরিকতায় প্রথম আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সমুদ্রগামী জাহাজে সাহসী নারীরা কাজ করে যোগ্যতা প্রমাণের সুযোগ পেয়েছেন। এটি একটি বড় মাইলফলক।
সূত্র জানায়, ‘বাংলার জয়যাত্রা’জাহাজে রয়েছেন ক্যাডেট আতিয়া সৈয়দা, আনজুমান আরা, সৈয়দা সাবরিনা বাবুর, সোহানা পারভিন ও শতাব্দী হোসাইন। তারা জাহাজে উঠেছেন জাহাজটি উদ্বোধনের পর পণ্য পরিবহনের জন্য বিদেশ যাওয়ার সময়।
‘বাংলার অর্জন’ জাহাজে চীনের সাংহাই থেকে উঠেছেন থার্ড অফিসার বিউটি আক্তার, ফোর্থ ইঞ্জিনিয়ার লাভলী দাস, ক্যাডেট মৌটুসি তালুকদার বৃষ্টি, ইসরাত জাহাজ সেতু, তাসনিমুল বাহার ও সাজিয়া আফরিন।
‘এমটি বাংলার অগ্রযাত্রা’য় নিয়োগ পেয়ে বর্তমানে চীনে অবস্থান করছেন ফোর্থ অফিসার ফারজানা আক্তার ফাইজা, ফোর্থ ইঞ্জিনিয়ার খাদিজা আক্তার, ক্যাডেট কানিজ ফাতেমা, মেমি আফরোজা রুমা, নাফিসা আহমেদ নোভা ও ফারজানা ইয়াসমিন।
‘এমটি বাংলার অগ্রদূত’ জাহাজটি ফেব্রুয়ারিতে বিএসসির বহরে যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে। এ জাহাজে নিয়োগের জন্য চূড়ান্ত করা হয়েছে ক্যাডেট সানজিদা করিম মুমু, বিলকিস আক্তার, আয়েশা সিদ্দিকা এলিনুর, সাবিনা ইয়াসমিন, সুস্মিতা দাস ও রিক্তা আজিজ।
অনুভূতি জানতে চাইলে সানজিদা করিম মুমু বাংলানিউজকে বলেন, মেরিন একাডেমির ৪৯তম ব্যাচে (২০১৪)ছিলাম আমি। সেটি নারী ক্যাডেটদের দ্বিতীয় ব্যাচ। বিএসসির জাহাজে আমাদের এক বছরের ব্যবহারিক প্রশিক্ষণের সুযোগ দিলেও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কাজ করার সুযোগ মেলেনি। পরিবারের সদস্য, অভিভাবক ও স্বজনরা প্রেরণা দিয়েছেন, আমাদের শিক্ষকরা সাহস দিয়েছেন। আমরা ধৈর্য ধরেছি। যোগ্যতা প্রমাণের অপেক্ষায় থেকেছি। এখন নতুন জাহাজগুলো বিএসসির বহরে যুক্ত হওয়ায় আমাদের স্বপ্নযাত্রা শুরু হচ্ছে। জানি কাজটা চ্যালেঞ্জের। কিন্তু ইতিমধ্যে যারা জাহাজে অবস্থান করছেন তারা কাজের পরিবেশের সঙ্গে চমৎকার মানিয়ে নিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৯
এআর/টিসি