ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

‘টিআইবির প্রতিবেদন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৯
‘টিআইবির প্রতিবেদন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। ছবি: উজ্জ্বল ধর

চট্টগ্রাম: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এর দেওয়া প্রতিবেদন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং প্রতিবেদনে ঐক্যফ্রন্টের বক্তব্য প্রতিফলিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রচার এবং প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

বুধবার (১৬ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় নগরের দেওয়ানজী পুকুরপাড়ে নিজ বাসভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘দেশে কয়েকটি সংগঠন আছে যারা দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করা নয়, বরং দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার কাজে লিপ্ত থাকে।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে এবং বলে তাদের গবেষণাপ্রসূত প্রতিবেদন। আমরা অতীতেও দেখেছি, তারা যে গবেষণার কথা বলে সে গবেষণাগুলো প্রকৃতপক্ষে কোনো সঠিক গবেষণা নয়, বেশিরভাগ প্রতিবেদন হচ্ছে ত্রুটিপূর্ণ, একপেশে এমনকি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

তিনি বলেন, ‘পদ্মাসেতু নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল মনগড়া কল্পকাহিনী সাজিয়েছিল এবং দেশের বিরুদ্ধে নানা ধরণের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। পদ্মাসেতুতে যে কোনও দুর্নীতি হয়নি সেটি শুধু দেশে নয় বিদেশেও প্রমাণিত হয়েছে। বিশ্বব্যাংক কানাডার আদালতে মামলা করেছিল, সে মামলায় বিশ্বব্যাংক হেরে গেছে। এরপর টিআইবিসহ যে সমস্ত সংস্থা পদ্মাসেতু নিয়ে দুর্নীতির কল্পকাহিনী সাজিয়েছিল তাদের উচিত ছিল জনগণের কাছে ক্ষমা চাওয়া এবং এ ধরণের মনগড়া  রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রতিবেদন প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকা, যেটি তারা করেনি। ’

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে গবেষণার কথা বলে যে বক্তব্য বা প্রতিবেদন গতকাল (মঙ্গলবার) টিআইবি প্রকাশ করেছে এই প্রতিবেদন আর বিএনপির বক্তব্যের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। প্রকৃতপক্ষে এটি বিএনপি-জামায়াতের পক্ষে টিআইবি একটি প্রতিবেদন দিয়েছে মাত্র, অন্য কোনো কিছু নয়। ’
**নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ টিআইবির

ড. হাছান মাহমুদ দাবি করেন, ‘এই নির্বাচন দেশে-বিদেশে সব জায়গায় প্রশংসিত হয়েছে। যারা আমাদের দেশে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে এসেছিল তারা সবাই এ নির্বাচনের প্রশংসা করেছে। বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে যত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে সমস্ত সাধারণ নির্বাচনগুলোর মধ্যে ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচন অপেক্ষাকৃত অনেক শান্তিপূর্ণ হয়েছে। এই নির্বাচন অত্যন্ত উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ’

তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর বিভিন্ন রাষ্ট্র এ নির্বাচনের পর বিজয়ী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও নেতৃত্বাধীন জোট এবং আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছে। বিদেশী রাষ্ট্রদূতরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে অভিনন্দন জানিয়েছেন, তার সঙ্গে কাজ করার অভিপ্রায় পুনর্ব্যক্ত করেছেন। এমনকি পাকিস্তানও অভিনন্দন জানিয়েছে। অথচ টিআইবি গবেষণার কথা বলে যে প্রতিবেদন দিয়েছে, ইতিপূর্বে বিএনপি যে বক্তব্য রেখেছিল সেটির সঙ্গে বা ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে যে বক্তব্য রাখা হয়েছে সেটির সঙ্গে টিআইবির এই প্রতিবেদনের কোনো পার্থক্য খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ’

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো রাজনৈতিক দল ৩০০ আসনে ৮০০ প্রার্থী মনোনয়ন দেয়নি। বিএনপি লজ্জাসকরভাবে যেভাবে মনোনয়ন বাণিজ্যের মাধ্যমে এ নির্বাচনে ৮০০ প্রার্থীকে ৩০০ আসনে অর্থাৎ প্রায় তিনগুণ প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়েছে তা নিয়ে টিআইবির প্রতিবেদনে কোনো বক্তব্য নেই। ’

টিআইবির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে কী না সাংবাদিকদের করা এমন প্রশ্নের উত্তরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘টিআইবি বেশ কয়েক বছর ধরে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে ত্রুটিপূর্ণ গবেষণার নামে যে সমস্ত প্রতিবেদন সময়ে সময়ে প্রকাশ করেছে এতে টিআইবির গ্রহণযোগ্যতা অনেক নষ্ট হয়ে গেছে। টিআইবির যে গ্রহণযোগ্যতা, ক্রেডিবিলিটি ছিল সেটি এখন আর নেই। জনগণ চাইলে যেকোনো কিছু হতে পারে। আমরা মনে করি ক্রেডিবল বিভিন্ন অরগানাইজেশন থাকা প্রয়োজন যেগুলো বস্তুনিষ্ট সমালোচনা করে। আশা করি টিআইবি তাদের কার্যক্রমকে ঢেলে সাজাবে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৩০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৯
এসকে/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।