ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চালের বাজারে অস্থিরতায়ও দাম কমছে খাতুনগঞ্জে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০১৯
চালের বাজারে অস্থিরতায়ও দাম কমছে খাতুনগঞ্জে চালের বাজারে অস্থিরতায়ও দাম কমছে খাতুনগঞ্জে। ছবি: বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: আবশ্যিক ভোগ্যপণ্য চালের বাজারে অস্থিরতার মধ্যেও দাম কমছে খাতুনগঞ্জের চাক্তাইয়ে। এ অস্থিরতার কারণে ভোক্তাদের পাশাপাশি উদ্বেগ বাড়ছে পাইকারদেরও।

চালের বাজারে অস্থিরতার মধ্যেও দিনাজপুর, কুষ্টিয়া, নওগাঁ, আশুগঞ্জের মিলমালিকদের কাছ থেকে বেশি দামে চাল কিনে লোকসানও দিয়েছেন অনেকে।

দাম কমবে এমন ধারণার কারণে খুচরা ক্রেতাদের আনাগোনা কমেছে পাইকারি বাজারে।

দামও কিছুটা কমতে শুরু করেছে।

সোমবার (১৪ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় চালের পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জের চাক্তাই ও পাহাড়তলীতে এমন চিত্র দেখা গেছে।

নতুন বছরের শুরুতে বেড়ে যাওয়া চালের দাম থেকে কমেছে ৫০ কেজির বস্তাপ্রতি ২৫ থেকে ১০০ টাকা।

নতুন চাক্তাইয়ের মেসার্স লিটন রাইস এজেন্সির স্বত্বাধিকারী লিটন সাহা বাংলানিউজকে জানান, ৯ জানুয়ারি মা-মণি অটো রাইস মিল থেকে ২৮০ বস্তা ‘নূরজাহান’ ব্রান্ডের চাল কিনেছি। বস্তায় পরতা পড়েছে ১ হাজার ৬৭৫ টাকা। আজকের (সোমবার) চাক্তাইয়ে এ চালের বাজার দর ১ হাজার ৬২০ টাকা। তা-ও বাজার ক্রেতাশূন্য।

মেসার্স আরিফুর রহমান ট্রেডার্সের ব্যবস্থাপক এম সরোয়ার চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, চট্টগ্রামের চাক্তাই বা পাহাড়তলীতে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ হয় না। দিনাজপুর, কুষ্টিয়া, নওগাঁ, আশুগঞ্জের মিলগুলো থেকেই এখানে চাল আসে। আমরা দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে মিলমালিকরা বলেছেন, সরকার চাল কিনছে তাই ধানের দাম বেড়েছে। চালের দাম সহনীয় রাখতে হলে মিলগুলো এবং খুচরা বাজারের প্রতি নজর দিতে হবে। আমরা বেশি দামে কিনলে বেশি দামে বিক্রি করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই বস্তাপ্রতি ১০-২০ টাকার বেশি লাভ করি না।

পাইকাররা জানান, চাল খুবই স্পর্শকাতর পণ্য। এর সঙ্গে একদিকে কৃষকের উৎপাদিত ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা অন্যদিকে ভোক্তাদের সুলভে চাল সরবরাহের বিষয় জড়িত। তাই সরকারের নীতি, আমদানি শুল্ক, কঠোর নজরদারি, কৃষকদের প্রণোদনা, ভর্তুকির ওপর নির্ভরশীল চালের বাজার।

সোমবার চাক্তাইয়ে মিনিকেট আতপ ৫০ কেজির বস্তা ২ হাজার ১০০ টাকা থেকে কমে ২ হাজার টাকা, বেতি ২৮ নম্বর ১ হাজার ৯০০ টাকা থেকে কমে ১ হাজার ৮৫০ টাকা, পাইজাম ২৫ কেজির বস্তা ১ হাজার ১২৫ থেকে কমে ১ হাজার ১০০ টাকা বিক্রি হয়েছে।

স্বর্ণা সিদ্ধ (৫০ কেজি) ১ হাজার ৬৫০ টাকা থেকে কমে ১ হাজার ৬০০ টাকা, পারি সিদ্ধ ১ হাজার ৭৫০ থেকে কমে ১ হাজার ৭০০ টাকা, বাসমতি বা জিরা সিদ্ধ ২ হাজার ৪৫০ থেকে কমে ২ হাজার ৪০০ টাকা বিক্রি হয়েছে।

গোবিন্দভোগ (৫০ কেজি) ২ হাজার ৭০০ টাকা, চিনিগুঁড়া মান ভেদে ৩ হাজার ৮০০ থেকে ৪ হাজার ১০০ টাকা, কাটারি ২ হাজার ৬০০ টাকা বিক্রি হয়েছে।

মেসার্স নিউ দরবার স্টোরের বিক্রয়কর্মীরা জানান, নতুন ইরি আতপ বিক্রি হচ্ছে ৫০ কেজি ১ হাজার ২৮০ টাকায়।

খাতুনগঞ্জের চাল আমদানিকারক বিএসএম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল বশর চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, কৃষিনির্ভর এদেশে চালের দাম কত হবে, ভোক্তারা কত দামে চাল পাবে তা নির্ধারণে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। সর্বশেষ আমরা যে চাল আমদানি করেছি তাতে লোকসান হয়েছে।   

চট্টগ্রাম চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওমর আজম বাংলানিউজকে বলেন, চালের বাজার ক্রমে স্থিতিশীল হচ্ছে। বস্তাপ্রতি ৫০-১০০ টাকা কমেছে। সরকারের চাল কেনা কর্মসূচি, আমদানিতে ২৮ শতাংশ শুল্ক, সীতাকুণ্ডে ওজন স্কেলের কারণে ১৩ টনের বেশি চাল পরিবহন করতে না পারা, পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধিসহ বেশ কিছু কারণ ছিল দাম বাড়ার।

কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি এসএম নাজের হোসাইন বাংলানিউজকে বলেন, চাল নিয়ে চালবাজি হয়েছে। হঠাৎ করে বাজার অস্থির হওয়ার যৌক্তিক কারণ কী? যদি চালবাজি হয় তবে সরকারের উচিত বিষয়টি খতিয়ে দেখা এবং আইনের আওতায় আনা। একই সঙ্গে চালের উৎস বা মোকাম, পাইকারি বাজার, গুদাম, খুচরা বাজারসহ সর্বস্তরে নজরদারি বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে কৃত্রিম সংকট যাতে না হয়, দাম বাড়বে আশঙ্কায় ভোক্তারা যাতে অস্বাভাবিক চাহিদা তৈরি না করে সে ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।     

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৯
এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।