ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

সকালে ধর্মঘটের ডাক, দুপুরে প্রত্যাহারের ঘোষণা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১৯
সকালে ধর্মঘটের ডাক, দুপুরে প্রত্যাহারের ঘোষণা বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সদস্যসচিব উজ্জ্বল বিশ্বাস। ছবি: সোহেল সরওয়ার

চট্টগ্রাম: শ্রমিক নেতাকে মারধরের বিচারসহ কয়েকটি দাবিতে বৃহত্তর চট্টগ্রামে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মাথায় তা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন শ্রমিক নেতারা।

রোববার (১৩ জানুয়ারি) সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে শ্রমিকদের একটি অংশ ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিলেও দুপুরে জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেনের সঙ্গে বৈঠকের পর ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন তারা।

বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন বাংলানিউজকে জানান, ভুল বোঝাবুঝির কারণে শ্রমিকদের একটি অংশ বৃহত্তর চট্টগ্রামে ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট আহ্বান করে।

এর পরপরেই আমরা তাদের সঙ্গে বসেছি। কথা বলেছি।
দুই পক্ষের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে তাদের মধ্যে মিমাংসা করে দেওয়া হয়েছে। শ্রমিকরা ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন।

বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের চট্টগ্রাম আঞ্চলিক শাখার সভাপতি মোহাম্মদ মুছা।  ছবি: সোহেল সরওয়ারএর আগে রোববার (১৩ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে শ্রমিক নেতাকে মারধরের বিচার দাবিতে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলায় সোমবার (১৪ জানুয়ারি) সকাল ছয়টা থেকে ৪৮ ঘণ্টা ধর্মঘটের ডাক দেয় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন।

সংবাদ সম্মেলনে ফেডারেশনের চট্টগ্রাম আঞ্চলিক শাখার সভাপতি মোহাম্মদ মুছা অভিযোগ করে বলেন, গত ১০ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১০টায় সীতাকুণ্ডের সংসদ সদস্য দিদারুল আলম ফেডারেশনের চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক অলি আহামদ ও জেলা হিউম্যান হলার মালিক সমিতির (৮ নম্বর রুট) নেতাদের বাসায় ডেকে নিয়ে যান। সংসদ সদস্য অলি আহামদকে ৮ নম্বর রুটের গাড়ি পরিচালনা ও সমিতির নিয়ন্ত্রণ লিখিতভাবে ছেড়ে দিতে বলেন। তখন অলি আহামদ শ্রমিকদের মতামত ছাড়া এটা দেওয়া যায় না বলে জানান। একপর্যায়ে সংসদ সদস্য হিউম্যান হলার মালিক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক খোরশেদ আলমকে মারধর করেন।   

মুছার সংবাদ সম্মেলন শেষ হওয়ার ঘণ্টাখানেক পর একই জায়গায় পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে বৃহত্তর চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। পরিষদের সদস্যসচিব উজ্জ্বল বিশ্বাস ধর্মঘট প্রত্যাখ্যান করে আহ্বানকারীদের ফৌজদারি আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানান।  

তিনি বলেন, বৃহত্তর চট্টগ্রামে গণপরিবহনের প্রকৃত শ্রমিক নন এমন গুটিকয়েক নেতা ফেডারেশনের গঠনতন্ত্রের ২১ ধারা পরিপন্থী চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কমিটির নেতৃত্বকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে চট্টগ্রামকে অস্থিতিশীল করার অশুভ উদ্দেশ্যে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। যা বেআইনি ও অযৌক্তিক। তাদের ঘোষিত দাবি হলো-চাঁদাবাজিসহ নানাবিধ অপকর্মের বৈধতা দেওয়া। কারণ তারা অধিকাংশই মাদকাসক্ত। নিজেদের মধ্যে চাঁদাবাজির ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে ঘটনা ঘটিয়ে সংসদ সদস্য দিদারুল আলমের ওপর দোষ চাপিয়ে অপকর্মের বৈধতা নিতে ধর্মঘট ডেকেছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সীতাকুণ্ড আসনের সংসদ সদস্য দিদারুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, এসব অভিযোগ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে, পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতারা আমার বাসায় এসেছিলেন ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে। তখন আমি গণপরিবহনের ভাড়া কমাতে বললে তারা জানান, এ রুটের ২৬৫ গাড়ি থেকে প্রতিদিন ৩৮০ টাকা করে চাঁদা নেন শ্রমিকরা। তাই ভাড়া কমানো সম্ভব নয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১৯
এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।