প্রকল্পের জন্য ৪৬৮ কোটি টাকায় ব্যক্তিমালিকানাধীন শ্রেণির অধিগ্রহণ করা ৬৮ একর জমি সাগরে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে ভরাটের পর সীমানাপ্রাচীর তৈরির কাজ শুরু করবে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এরপর ওই জমিতে নির্মিত হবে বন্দরের ডেলিভারি ইয়ার্ড ও ট্রাক টার্মিনাল।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল জুলফিকার আজিজ বাংলানিউজকে বলেন, জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে অধিগ্রহণ করা জমি ভরাট করে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সপ্তাহখানেকের মধ্যে প্রাথমিক কাজ শুরু করতে পারবো আশা করি।
তিনি বলেন, বে টার্মিনালের ডিপিপি তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর অপেক্ষা। এরপর অনুমোদন পেলেই বে টার্মিনালের প্রথম ধাপের কাজ দৃশ্যমান হবে।
বন্দরের এস্টেট বিভাগের প্রধান জিল্লুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ৮৮৮ একর জমি নিয়ে বে-টার্মিনাল হবে। প্রথম দফায় ব্যক্তিমালিকানাধীন ৬৮ একর জমি অধিগ্রহণ করে গত ২৯ নভেম্বর জেলা প্রশাসন সরেজমিন হস্তান্তর করেছে। দ্বিতীয় দফায় ৮২০ একর খাস জমি রয়েছে। ওই জমি নিয়েও মামলা, বিবাদ থাকায় বন্দোবস্তির বদলে এখন অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
তিনি জানান, ২০১৩ সালে সরকারি অনুমোদন পাওয়ার পর বে টার্মিনালের জমির জন্য আবেদন করা হয়। তখন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (চউক) ছাড়পত্র পেতে সময় লাগে ১৮ মাস।
বে টার্মিনাল ছাড়াও মিরসরাই-সীতাকুণ্ডে ১২ মিটার ড্রাফটের (জাহাজের পানির নিচের অংশ) মুরাদপুর টার্মিনালের জন্য ১২৯৯ একর এবং মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে ১২২৫ একর জমি নিয়ে গভীর সমুদ্রবন্দরের আদলে ১৬ মিটার ড্রাফটের নতুন টার্মিনাল নির্মিত হবে। বে টার্মিনাল, মুরাদপুর ও মাতারবাড়ী টার্মিনালে জাহাজ আনা-নেওয়ার জন্য জোয়ারের জন্য যেমন অপেক্ষা করতে হবে না তেমনি রাতের বেলাও জাহাজ আনা-নেওয়া করা যাবে। বর্তমানে কর্ণফুলী চ্যানেল কেন্দ্রিক চট্টগ্রাম বন্দরে দিনের বেলায় শুধু জোয়ারের সময় বহির্নোঙর থেকে জাহাজ আসা-যাওয়া করে।
সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে হালিশহর উপকূলে প্রস্তাবিত বে টার্মিনাল এলাকার চ্যানেলটি ৭-১০ মিটার গভীর। চরের পশ্চিম পাশে বহির্নোঙরে গভীরতা ১২-১৩ মিটার। টার্মিনালের জন্য জমি অধিগ্রহণ শেষে সমুদ্র থেকে ভূমি পুনরুদ্ধার করলে জমির পরিমাণ দাঁড়াবে ২ হাজার ৫০০ একর। বন্দর জেটিতে যেখানে জোয়ারে ১৯০ মিটার দীর্ঘ সাড়ে ৯ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভিড়তে পারে সেখানে বে টার্মিনালে ১২ মিটার ড্রাফটের ৩০-৩৫টি বড় জাহাজ ২৪ ঘণ্টা ভিড়তে পারবে। যেখানে ২০ ফুট দীর্ঘ ৫ হাজার কনটেইনার নিয়ে আসতে পারবে একেকটি জাহাজ। বে টার্মিনাল নির্মাণে ব্যয় হবে ২ বিলিয়ন ডলার। যা মাত্র ১১ বছরে উঠে আসবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০১৯
এআর/টিসি