চট্টগ্রামের ১৬টি আসনের মধ্যে ১৫টি আসনে ব্যালটের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ চললেও তাসমিয়া যে আসনের ভোটার সেই চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী) আসনে এবার ইভিএমের মাধ্যমেই নেওয়া হচ্ছে ভোট। জীবনের প্রথম ভোট, তার মধ্যে ইভিএম নিয়ে কৌতুহল- সব মিলিয়ে দারুণ শিহরিত তিনি।
ভোট প্রদান শেষে কথা প্রসঙ্গে তাসমিয়া তাবাচ্ছুম বাংলানিউজকে জানান, প্রথম ভোট, তার মধ্যে ইভিএম- তাই স্বাভাবিকভাবেই শিহরিত ছিলাম। শঙ্কা আর কিছুটা চিন্তাও ছিলো।
তিনি বলেন, এত সহজে নিজের ভোটটা দিতে পেরে অসম্ভব ভালো লাগছে। খুশি লাগছে জতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ইভিএমে ভোট দিয়ে ইতিহাসের স্বাক্ষী হতে পেরে।
তাসমিয়ার মতো এমন উচ্ছ্বাস দেখা গেছে, শাহ ওয়ালী উল্লাহ ইনস্টিটিউট, জামালখান কুসুম কুমারি উচ্চ বিদ্যালয়, অপর্ণা চরণ সিটি করপোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়, ঘাটফরহাদবেদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাজেম আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ, কাপাসগোলা সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সহ কোতোয়ালী আসনের বেশ কয়েকটি ভোটকেন্দ্রের ভোটারদের মধ্যে।
কাপাসগোলা সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে আসা স্কুল শিক্ষক রেহানা আক্তার বাংলানিউজকে জানান, ইভিএম প্রযুক্তি পৃথিবীর অনেক দেশে ব্যবহার করা হলেও আমাদের দেশে এবারই প্রথম। তাই আমরা যারা প্রথমবারের মতো এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভোটাধিকার প্রয়োগ করছি তাদের মধ্যে কিছুটা ভালোলাগা আছেই।
অপর্ণা চরণ সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোটার রমিজ আলম বাংলানিউজকে জানান, ব্যালট বক্স ছিনতাই, ভোট কেন্দ্র দখলসহ নানা কারণে ব্যালটের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ ঝুঁকিপূর্ণ। এর বিপরীতে ইভিএমের মতো স্মার্ট প্রযুক্তি আশাদায়ক। ফিঙ্গার প্রিন্ট প্রযুক্তি থাকায় জাল ভোটের শঙ্কাও নেই। আশা করি, ভবিষ্যতেও নির্বাচন কমিশন ইভিএম চালু রাখবে।
তবে আঙ্গুলের ছাপ মিলাতে না পেরে দুর্ভোগের কথাও জানিয়েছেন কয়েকজন ভোটার। এছাড়াও কাজীর দেউড়ী এলাকার আঞ্চলিক লোকপ্রশাসন কেন্দ্রের একটি বুথে ইভিএম বিকল হয়ে যাওয়ায় ভোটগ্রহণ বন্ধ থাকে বেশ কিছুক্ষণ।
সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন খান বাংলানিউজকে বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকার দু’টি, রংপুরের একটি, খুলনার একটি এবং সাতক্ষীরার একটি আসনের সঙ্গে চট্টগ্রামেরও একটি আসনে (চট্টগ্রাম-৯) ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হচ্ছে। ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ এবং দ্রুত করতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
তিনি জানান, ফিঙ্গার প্রিন্ট মিলানো নিয়ে সামান্য ঝামেলা ছাড়া সু্ষ্ঠু এবং সুন্দরভাবেই ইভিএমে ভোটগ্রহণ করা হচ্ছে। ভোটাররা উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে ইভিএমে ভোট দিচ্ছেন।
নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী) আসনের ১৪৪টি কেন্দ্রের ৯২০টি ভোটকক্ষে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হচ্ছে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ১৫ থেকে ২৩ ও ৩১ থেকে ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত এ আসনে ভোটার রয়েছেন ৩ লাখ ৯০ হাজার ৪৩১।
রোববার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অনুষ্ঠেয় এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল (নৌকা) ও বিএনপির শাহাদাত হোসেন (ধানের শীষ) ছাড়াও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির মৃণাল চৌধুরী (কাস্তে), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের রশিদুল হক (বটগাছ), ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মো. ওয়াহেদ মুরাদ (চেয়ার), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. শেখ আমজাদ হোসেন (হাতপাখা), বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের আবু আজম (মোমবাতি), জাতীয় পার্টির (জেপি) মো. মোরশেদ সিদ্দিকি (বাইসাইকেল)।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৮
এমআর/এসি/টিসি