ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বিলকিস-ফুলমালার জিপিএ-৫, খুশির বান উপলব্ধিতে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৮
বিলকিস-ফুলমালার জিপিএ-৫, খুশির বান উপলব্ধিতে উপলব্ধির অন্য শিশুদের সঙ্গে বিলকিস ও ফুলমালা

চট্টগ্রাম: ‘শিশুর ঠিকানা ফুটপাত-রাস্তা আর না’ স্লোগানে ১২.১২.১২-তে যাত্রা শুরু করা বেসরকারি সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠান উপলব্ধির বিলকিস আকতার ও ফুলমালা খাতুন জেএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে।

এ সাফল্যে খুশির বান ডেকেছে নগরের ফিরিঙ্গিবাজারের প্রতিষ্ঠানটিতে থাকা ঠিকানাবিহীন আরও ৬০ শিশুসহ উদ্যোক্তা ও দাতাদের মধ্যে।

উপলব্ধির প্রতিষ্ঠাতা শেখ ইজাবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বিলকিস-ফুলমালার সাফল্যে আমরা অত্যন্ত খুশি।

এর মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হলো নানা কারণে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া শিশুদের মধ্যে প্রতিভা ও মেধা আছে। সুযোগ পেলে তারাও সাফল্য পাবে।

বিলকিস অপর্ণা চরণ সিটি করপোরেশন স্কুলের ছাত্রী। সে জানায়, শিক্ষক ও উপলব্ধির ‘মা’দের পাশাপাশি উপলব্ধিতে থাকা নবম শ্রেণির তিন আপু-আসমা, মৌ, সাহেদা পড়াশোনায় সহযোগিতা করেছে। ভবিষ্যতে সে একজন ডাক্তার হতে চায়।

ফুলমালা আলকরণ সুলতান আহমেদ সিটি করপোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী। সে জানায়, উপলব্ধিতে নিজেদের কাজের পাশাপাশি পড়াশোনা করেছে। কোচিং করেছে। ভবিষ্যতে সে-ও ডাক্তার হতে চায়।

শেখ ইজাবুর রহমান বলেন, চট্টগ্রাম রেল স্টেশন দিয়ে যাতায়াতের সময় প্রায়ই দেখতাম ঘরছাড়া, ঘরহারা কন্যাশিশু। কিছু দিন পর তারা হারিয়ে যেত। শঙ্কা ছিল হয়তো পাচার হয়েছে, নয়তো অন্ধগলিতে বিক্রি হয়ে গেছে। পঙ্গু করে ভিক্ষাবৃত্তিতে বাধ্যও করা হতে পারে। সেই দুষ্টুচক্র থেকে ঠিকানাবিহীন কন্যা শিশুদের রক্ষায় উপলব্ধির যাত্রা শুরু। শুরুতে ছিল ১৫ জন। ক্রমে এ সংখ্যা বেড়ে এখন ৬২। প্রত্যেকের নামে থানায় ডায়েরি করা হয়েছে। দুইটি ফ্লোর নিয়ে তাদের থাকা-খাওয়া। চারজন ‘মা’ তাদের দেখভাল করে। ঘরভাড়া আসে মাসে ৬০ হাজার। জনপ্রতি খরচ ৫ হাজার।

তিনি বলেন, উপলব্ধি কোনো বিদেশি সংস্থার অর্থ গ্রহণ করে না। স্থানীয় দাতাদের কাছ থেকে সহায়তা নিয়ে থাকে। একটি শিশুর দায়িত্ব নেন একজন দাতা। এভাবেই চলে আসছে।   

তিনি বলেন, এখানে ১০ জন শিশু সনাতন ধর্মাবলম্বী। ৮০ ভাগ শিশুই জানে না তাদের বাড়ি কোথায়, বাবা-মা কে। ২০ ভাগ ভাঙা পরিবারের। ৭-৮ জন আছে যারা বাবা-মা’র সঙ্গে সড়কে ভিক্ষা করত।     

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমরা চাই লেখাপড়ার পাশাপাশি তারাও মানুষের মতো মানুষ হোক। সে জন্য বিদ্যালয়ে পাঠানোর পাশাপাশি তাদের গান, নাচ, আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কনসহ সব ধরনের সংস্কৃতিচর্চার ব্যবস্থা করি। ইতিমধ্যে তারা বিতর্ক, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বইপড়া প্রতিযোগিতা, জাতীয় নৃত্য প্রতিযোগিতা, বিজয় দিবসে এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে কুচকাওয়াজে দ্বিতীয় পুরস্কারসহ অনেক সাফল্য পেয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৮
এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।