ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ব্যালট ছোঁয়ার অপেক্ষায় তারা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৮
ব্যালট ছোঁয়ার অপেক্ষায় তারা চট্টগ্রামের ৬ তরুণ ভোটার

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামে সাত লাখের বেশি নতুন ভোটার আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবার ভোট দেবেন। এছাড়া বিগত নির্বাচনে অনেক আসনে ভোট না হওয়ায় অনেকে এবার প্রথম ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন।

জেলা নির্বাচন অফিসের হিসাব অনুযায়ী, গত ১০ বছরে চট্টগ্রামে ১২ লাখের বেশি ভোটার বেড়েছে। এর মধ্যে গত পাঁচ বছরে ভোটার বেড়েছে ৭ লাখ ১৪ হাজার ৯৮৮ জন।

চট্টগ্রাম জেলায় সংসদীয় আসন রয়েছে ১৬টি। মহানগর ও ১৫টি উপজেলা নিয়ে এসব আসন গঠিত।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এসব আসন থেকে ১১৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

চূড়ান্ত তালিকানুযায়ী, জেলায় বর্তমান ভোটার সংখ্যা ৫৬ লাখ ৩৭ হাজার ৪৬৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২৯ লাখ ১২ হাজার ৭৫ ও মহিলা ভোটার ২৭ লাখ ২৫ হাজার ৩৯০ জন। ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত দশম সংসদ নির্বাচনের চট্টগ্রাম জেলায় ভোটার সংখ্যা ছিল ৪৯ লাখ ২২ হাজার ৪৭৭ জন।

বিশ্লেষকদের ধারণা, নতুন ভোটারদের ভোট যেদিকে যাবে, জয়ের পাল্লাও সেদিকে হেলে পড়বে। বিষয়টি উপলব্ধি করে প্রার্থীরাও নতুন ভোটারদের মন জয়ের প্রয়াস চালাচ্ছেন। তারা কৌশলে নতুন ভোটারদের মন জয়ের চেষ্টা করছেন। নিজ নিজ পরিকল্পনা অনুযায়ী কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে নির্বাচনী মাঠ গরম রাখছেন তারা।

এদিকে প্রথম সংসদ নির্বাচনে ভোট দেয়া নিয়ে নবীন ভোটারদের মধ্যে দারুণ কৌতূহল দেখা গেছে। অনেকেই ভোট দিতে পারবেন কিনা, তা নিয়েও শংকা প্রকাশ করেছেন। নতুন ভোটারদের প্রত্যাশা-নির্বাচনে ভোট দেয়ার মতো সুষ্ঠু পরিবেশ থাকবে, বিজয়ীরা তরুণদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবেন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ’র শিক্ষার্থী আইরিন সরকার রুবি চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনের ভোটার। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ব্যালট ছোঁয়ার অপেক্ষায় আছি।

‘আমার আসনে যেসব প্রার্থী নির্বাচন করছেন, তাদের প্রতিশ্রুতিগুলো বিশ্লেষণ করে দেখব। এছাড়া পুরনো কোনো প্রার্থী নির্বাচন করলে তিনি কি কি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং কতটুকু পূরণ করেছেন খোঁজ নিব। এরপর যোগ্য প্রার্থীকে বেছে নিব। ’

চট্টগ্রামে বিগত দিনে যে উন্নয়ন হয়েছে, ভোটদানের মাধ্যমে আমরা সেই উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে চাই। তাকেই ভোট দেবো যিনি আগামি দিনগুলোতে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখবেন-এমনটাই জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক ইসলামিক ইউনিভার্সিটি চট্টগ্রামের শিক্ষার্থী আবদুল আজিজ জিসান। তিনি বলেন, ‘জনগণ যাতে ভোট দিতে পারে, সে ব্যবস্থা প্রশাসনকে করে দিতে হবে। ’

জীবনের প্রথম ভোটটা একজন যোগ্য প্রার্থীকে দিতে চান চট্টগ্রাম কলেজ অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী নুসরাত ইয়াছমিন। তিনি চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনের ভোটার। নুসরাত ইয়াছমিন বাংলানিউজকে বলেন, ‘শুনেছি ভোটকেন্দ্রের ঝামেলা হয়। সুষ্ঠুভাবে যাতে ভোট দিতে পারি এবং যারা সরকার গঠন করবে তারা যেন দেশের উন্নয়নে কাজ করে এ প্রত্যাশা করি। ’

জামিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থী রাজীবুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, যারা বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল থেকে উন্নত দেশে রূপান্তরে কাজ করবে, আমি তাদের ভোট দিতে চাই।

চট্টগ্রাম-৮ আসনের ভোটার ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান বাংলানিউজকে বলেন, ‘বিগত ১০ বছরে দেশে যে পরিমাণ উন্নয়ন হয়েছে তা অভূতপূর্ব। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষার্থে তাই যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দেব। ’

প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী সূর্য দাশ বলেন, তরুণদের নিয়ে যে প্রার্থী কাজ করতে আগ্রহী, তাকেই ভোট দিব।

তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিক ও চট্টগ্রাম-১০ আসনের ভোটার নাসরিন ‍সুলতানা বাংলানিউজকে বলেন, দেশ এগিয়ে গেলেও এখনো বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে নারীদের অংশগ্রহণ অনেকটাই কম। এজন্য এমন একজনকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে চাই, যিনি নারীদের আর্থসামাজিক উন্নয়নে কাজ করবেন।

বোয়ালখালী এলাকার বাসিন্দা ও প্রবাসী এহতেশামুল হক বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচনে ভোট দেওয়ার আশায় দেশে এসেছি। আশা করি জীবনের প্রথম ভোট যোগ্য প্রার্থীকে দিতে পারবো।

‘চট্টগ্রামে অনেক প্রাকৃতিক সম্পদ ও সম্ভাবনা রয়েছে। সেগুলো উন্নয়নের মাধ্যমে যে দল আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশকে ফুটিয়ে তুলবেন এবং সবার জন্য সমান অধিকার নিশ্চিত করবেন, সে দলের প্রার্থীকে ভোট দেব। ’

নতুন ভোটারদের ব্যাপারে সচেতন নাগরিক কমিটি চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি অ্যাডভোকেট আকতার কবির চৌধুরী বলেন, ‘প্রার্থীদের যোগ্যতা, নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি, ব্যক্তিগত ইমেজসহ বিভিন্ন বিষয় নতুন ভোটারদের প্রার্থী বাছাইয়ের সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলবে। তাই নতুন ভোটাররা নির্বাচনের ফল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৮
এসইউ/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।