ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বৃদ্ধের অসহায়ত্ব, পুলিশের মানবিকতা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৮
বৃদ্ধের অসহায়ত্ব, পুলিশের মানবিকতা চমেক হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরছেন নজির আহমদ। ছবি: বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: ষাটোর্ধ্ব নজির আহমদ ১২ ডিসেম্বর সকালে পাহাড়তলী চক্ষু হাসপাতালের সামনে সিএনজি অটোরিকশার ধাক্কায় আহত হন। পথচারীরা তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। ১৬ ডিসেম্বর তার জ্ঞান ফিরে। চারদিন তার পাশে ছিলো না পরিবারের কেউ। কিন্তু এতে থেমে যায়নি নজির আহমদের চিকিৎসা।

‘পুলিশে ছুঁলে ছত্রিশ ঘা৷’ কিন্তু সবক্ষেত্রে এমন নয়- সেটি আবারও প্রমাণ করেছেন চমেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জহিরুল হক ভূঁইয়া। চিকিৎসার অভাবে যখন ষাটোর্ধ্ব নজির আহমদ হাসপাতালের শয্যায় কাতরাচ্ছেন, তখন ‘দেবদূত’ হয়ে তার পাশে হাজির হন পুলিশ কর্মকর্তা জহির।

নাজির আহমদের জন্য ২ ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করে দেন। ওষুধসহ যাবতীয় জিনিস নিজ খরচে কিনে দেন তিনি।

পরে জানা যায়, নজির আহমদ লক্ষীপুর জেলার কমলনগর থানার ইসলাম বাজার এলাকার মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে। এরপর ইনচার্জ জহির কমলনগর থানার ওসির সঙ্গে যোগাযোগ করে নাজির আহমদের পরিবারের খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, অসুস্থ স্ত্রী ছাড়া নাজির আহমদের কেউ নেই।

মঙ্গলবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয় নজির আহমদকে। এরপর ইনচার্জ জহির ৫ হাজার টাকায় অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করেন। বেলা ১১টার দিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে অ্যাম্বুলেন্স যোগে নাজির আহমদকে তার বাড়িতে পাঠানো হয়।

হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার সময় নাজির আহমদের সঙ্গে কথা হয় বাংলানিউজের। এ সময় তিনি বলেন, চোখের চিকিৎসার জন্য লক্ষীপুর থেকে পাহাড়তলী চক্ষু হাসপাতালে আসি। ওইদিন রাস্তা পার হওয়ার সময় একটি গাড়ি আমাকে ধাক্কা দেয়। এরপর হাসপাতালে আনা হয় আমাকে। এতদিন আমার দেখভাল করেছে হাসপাতালের পুলিশ জহির। সে নিয়মিত আমার খোঁজ-খবর নিতো। যখন যা প্রয়োজন কিনে দিতো। এক মাসের ওষুধ্ও কিনে দিয়েছে।

বাংলানিউজকে ইনচার্জ জহিরুল হক ভূঁইয়া বলেন, বাড়িতে আমার বাবা আছেন। তিনিও নাজির আহমদের বয়সী। মানবিক দায়বদ্ধতা থেকেই আমি তাকে দেখশোনা করেছি।

চমেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আখতারুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, পুলিশের খারাপ দিকগুলোই বেশি মুখরোচক হয়ে ওঠে। কিন্তু পুলিশ যে জনগণের বন্ধু, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিরলসভাবে কাজ করার পাশাপাশি তারা যে মানবিক কাজের ক্ষেত্রেও পিছিয়ে নেই তা আমরা ভুলে যাই।

তিনি বলেন, জহিরুল হকের মতো এমন অনেক পুলিশ কর্মকর্তা আছেন যারা সাধারণ মানুষকে সহযোগিতার মতো মানবিক কাজগুলোও নৈতিক দায়িত্ব বলে মনে করেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৮
এসইউ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।