ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

হামলায় ইন্ধন নজিবুল বশরের, অভিযোগ আ.লীগের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৮
হামলায় ইন্ধন নজিবুল বশরের, অভিযোগ আ.লীগের ফটিকছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: ফটিকছড়িতে মহাজোটের প্রার্থী ও তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারীর ইন্ধনে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের উপর হামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা।

মঙ্গলবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে নগরের নাসিরাবাদে আওয়ামী লীগ নেতা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এটিএম পেয়ারুল ইসলামের বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দিন মুহুরী।

নাজিম উদ্দিন মুহুরী অভিযোগ করেন, ‘নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারীর প্রত্যক্ষ মদদে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হামলা হয়েছে।

আবু তৈয়বের নেতৃত্বে অ্যাম্বুলেন্সে করে এসে আমাদের উপর গুলি করা হয়েছে। ’

‘নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী বলেছেন-আওয়ামী লীগকে তার প্রয়োজন নেই বরং তাকেই নাকি আওয়ামী লীগের প্রয়োজন, তাকেই নাকি শেখ হাসিনার প্রয়োজন।

অথচ তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য হয়েছেন। এমন বিষদগারের পর আমরা উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা করে বলেছি- তাকেও আওয়ামী লীগের প্রয়োজন নেই। তিনি আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার মিশন নিয়ে নেমেছেন’, অভিযোগ করেন নাজিম উদ্দিন মুহুরী।

তিনি বলেন, ‘নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত, নিন্দিত কয়েকজন সন্ত্রাসীকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হুমকি দিচ্ছেন। সোমবার (১০ ডিসেম্বর) ধর্মপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুল হকের বাড়িতে হামলা করেছে তারা, তাকে হত্যা করার হুমকি দিয়ে এসেছে। আমরা উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা তার বাড়িতে গিয়েছিলাম। ফেরত আসার পথে আমাদের উপর হামলা করা হয়েছে অ্যাম্বুলেন্স, মোটরসাইকেলে করে এসে। ’

তৃণমূল নেতাকর্মীদের চাপে প্রার্থী হন পেয়ারুল ইসলাম

আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীদের চাপের মুখে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন বলে দাবি করেছেন উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এটিএম পেয়ারুল ইসলাম।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা দলীয় প্রার্থী চেয়েছিল। তারা আওয়ামী লীগের যেকোনো একজনকে তাদের প্রার্থী হিসেবে চেয়েছিল। এ নিয়ে অনেক আগে কেন্দ্রীয় নেতাদের বরাবরে চিঠিও দিয়েছে কিন্তু দলের হাইকমান্ড তা বুঝতে চান নি। ’

এটিএম পেয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগের কর্মী, শেখ হাসিনার কর্মী, আমার পুরো জীবন এ দলের জন্য দিয়েছি। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে কখনও যেতেও চাইনি। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা যে পরিমাণ নির্যাতনের শিকার হয়েছে নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারীর কাছ থেকে তা তারা ভুলতে পারছেন না। তারা নির্যাতনের কষ্ট ভুলতে দলীয় প্রার্থী চেয়েছিলেন। ’

তিনি বলেন, ‘নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপিতে গেছেন, সেখানে সুবিধা করতে না পেরে নিজে একটি দল করেছেন। তিনি নিজের স্বার্থের জন্য ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের ১৭ জন নেতাকর্মীকে হত্যা করিয়েছেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের অন্তত ২ হাজার নেতাকর্মীর নামে মামলা দিয়েছেন। ’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুজিবুল হক, সহ-সভাপতি আবু তালেব, যুগ্ম সম্পাদক মুজিবুর রহমান স্বপন, যুগ্ম সম্পাদক আমান উল্লাহ চৌধুরী লিটন, শফিউল আজম ও অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর সালামত উল্লাহ চৌধুরী।

সোমবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে নানুপুর বাজারে এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, নাজিম উদ্দিন মুহুরীসহ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের উপর হামলা অভিযোগ উঠে বহিষ্কৃত আওয়ামী লীগ নেতা আবু তৈয়বের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় গুলিবদ্ধসহ অন্তত পাঁচজন আহত হয়।

অভিযোগের বিষয়ে যা বললেন নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী

অভিযোগ অস্বীকার করে নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী বাংলানিউজকে বলেন, ‘তারা নিজেরা হামলা করে এখন আমাকে জড়ানোর চেষ্টা করছে। তারা আমার নাম ধরে হুমকি দিয়েছে জনসম্মুখে, আমাকে দেখে নিবে বলেছে। ’

তিনি বলেন, ‘আমি নৌকা প্রতীকের প্রার্থী, শেখ হাসিনার প্রার্থী। নৌকার বিরোধিতা করা মানে শেখ হাসিনার বিরোধিতা করা। স্রোতের বিপরীতে গিয়ে কেউ কখনও টিকতে পারেনি, পেয়ারুল ইসলামের ক্ষেত্রেও তাই হবে। ’

তিনি বলেন, ‘কে কার উপর হামলা করেছে সেটা তো বাজারের মানুষ দেখেছে। পুলিশ হামলার বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিবে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৮
এসকে/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad