বাড়ির উঠোনো চলছে গরু ও পেডেল থ্রেসার মেশিনের সাহায্যে ধান মাড়াইয়ের কাজ। এসব ধান রোদে শুকানোর কাজে কৃষাণীকে সহায়তা করছেন কৃষক।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় রাঙ্গুনিয়ার শস্যভাণ্ডার গুমাই বিলসহ ১৫টি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় এবার আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, গুমাইবিলে মোট জমি ৩ হাজার ২শ ৩৮ হেক্টর। চন্দ্রঘোনা, মরিয়মনগর, হোছনাবাদ ও স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া ইউনিয়ন নিয়ে এই বিলের অবস্থান। ১২টি ব্লকে আমন চাষ করেছেন ৭ হাজার ৫শ কৃষক। এবার ৩ হাজার ২শ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে।
এছাড়া ১৫টি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় ১১ হাজার ৬শ ৯০ হেক্টর জমিতে ব্রী-৪৯, ব্রী-৫১, ব্রী-৫২, ব্রী-৭৫, বিআর-১১, বিআর-২২, বিআর-২৩ ও পাইজাম জাতের আমন চাষ হয়েছে।
তবে বিলের প্রায় ৩৮ হেক্টর জমিতে সেচ সংকট, অত্যধিক ব্যয় ও বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণের ফলে চাষাবাদ করা হয়নি বলে জানা গেছে। দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়ার পদুয়া, শিলক, কোদালা ও সরফভাটায় শত শত একর জমিতে বন্য হাতির তাণ্ডবে ফসল নষ্ট হয়েছে।
গুমাইবিল চন্দ্রঘোনা ব্লক সিআইপি ফসল সমবায় লিমিটেড এর সভাপতি ফোরকান উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, ৭ কানি জমিতে আমনের চাষ করতে ৮৪ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ব্রী-৪৯ জাতের ধান ও সাদা পাঞ্জা (স্থানীয় জাত) চাষ করেছি। প্রতি কানি জমিতে ধান উৎপাদন হয়েছে গড়ে ৭০-৯০ আড়ি।
হোছনাবাদ ব্লকের কৃষক মো. ফয়সাল বলেন, দুই কানি জমিতে ২৫ হাজার টাকা খরচ করে আমন চাষ করেছি। প্রতি কানি জমিতে ১শ আড়ি (এক আড়ি ১০ কেজি) ধান হয়েছে।
বাজারে ধানের দাম ভালো থাকলে লাভবান হওয়ার আশা করছেন কৃষকরা। তারা বলছেন, দেশের বিভিন্ন এলাকার শ্রমিকরা ধান কাটা থেকে শুরু করে মেশিনে মাড়াইয়ের কাজ করছে। জমি চাষ থেকে শুরু করে ধান গোলায় তোলা পর্যন্ত যে খরচ হচ্ছে, তা তুলতে ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে হবে।
নেত্রকোনা থেকে আসা শ্রমিক মো. সেলিম উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ, খুলনা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে এখানে ধান কাটতে আসেন। দৈনিক মেলে ৫শ টাকা মজুরি।
রাঙ্গুনিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কারিমা আকতার বাংলানিউজকে বলেন, গুমাইবিলসহ ১৫টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার প্রায় ১৪ হাজার ৮শ ৯০ হেক্টর জমিতে আমনের চাষাবাদ হয়েছে। হেক্টর প্রতি গড়ে ৩.৪৫ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, সঠিক জাত নির্বাচন ও কৃষকদের আধুনিক প্রযুক্তি হস্তান্তরের ফলে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৭৭ হাজার মেট্রিক টন ছাড়িয়ে গেছে। আমন ধানে রোগবালাইও কম হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০১৮
এসি/টিসি