ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

দেশি মুরগির চাহিদা মেটাবে সিভাসুর নতুন জাত

মিজানুর রহমান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১২৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০১৮
দেশি মুরগির চাহিদা মেটাবে সিভাসুর নতুন জাত সিভাসু অধ্যাপক ড. মো. কবিরুল ইসলাম খান উদ্ভাবিত নতুন জাতের মুরগি। ছবি: বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: মিশরের ফাউমি মুরগি ও দেশীয় হিলি মোরগের ক্রস ব্রিডিং করে নতুন জাতের মুরগি উদ্ভাবনের পর তা লাইন ব্রিডিং শেষে বাজারে আনা হচ্ছে। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) উদ্ভাবিত মুরগির নতুন এ জাত দেশে ক্রমবর্ধবান দেশি মুরগির চাহিদা অনেকখানি পূরণ করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, ২০০১ সালে ডেনিস ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি (ডানিডা) ও এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিভাসু) মাংস ও ডিমের জন্য ক্রস ব্রিডিং নিয়ে গবেষণা শুরু হয়।

পরবর্তীতে এ গবেষণা কার্যক্রমটি অব্যাহত রাখতে বিশেষ অনুদান দেয় সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।

সিভাসুর জেনিটিক্স অ্যান্ড অ্যানিম্যাল ব্রিডিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. কবিরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে পরিচালিত এ গবেষণায় মিশরের ফাউমি মুরগির সঙ্গে দেশীয় হিলি মোরগ এবং দেশীয় হিলি মুরগির সঙ্গে মিশরের ফাউমি মোরগের মিলনের মাধ্যমে ক্রস ব্রিডিং করে মোরগ ও মুরগির নতুন জাত উদ্ভাবন করা হয়।

গবেষণার জন্য ব্যবহৃত খামার (ইনটেনসিভ সিস্টেম) এবং খামারিদের খামারে (সেমি ইনটেনসিভ সিস্টেম) মোরগ ও মুরগির ক্রস ব্রিডিং কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্নের পর লাইন ব্রিডিং করে তা খামারিদের হাতে তুলে দেওয়ার উদ্যোগ নেয় সিভাসু কর্তৃপক্ষ।

লাইন ব্রিডিংয়ে কয়েকটি জেনারেশন বদলের পর নতুন জাতের এ মোরগ ও মুরগি শিগগির বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাত করা হবে বলে জানিয়েছেন গবেষক অধ্যাপক ড. মো. কবিরুল ইসলাম খান।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ক্রস ব্রিডিং এর মাধ্যমে সফলভাবে নতুন জাতের মোরগ ও মুরগি উদ্ভাবনের পর লাইন ব্রিডিং কার্যক্রমও আমরা শেষ করেছি। ইতিমধ্যে কয়েকজন খামারি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। লাইন ব্রিডিং এর মাধ্যমে কয়েকটি জেনারেশন পরিবর্তন শেষে শিগগির নতুন জাতের এ মোরগ ও মুরগি বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাত করা হবে।

অধ্যাপক ড. মো. কবিরুল ইসলাম খান জানান, সাধারণত একটি দেশি মুরগি বছরে ৭৫টি ডিম দিলেও নতুন জাতের এ মুরগি ১০২টি ডিম দিতে পারবে। ১২ সপ্তাহ শেষে একটি দেশি মুরগি ৪০০ গ্রাম ও মোরগ ৫০০ গ্রাম ওজনের হলেও নতুন জাতের একটি মুরগির ওজন ৮৫০ গ্রাম এবং মোরগের ওজন ১ কেজি ছাড়িয়ে যাবে। মাংসে দেশি স্বাদও অক্ষুণ্ন থাকবে।

তিনি বলেন, আমরা হিসাব করে দেখেছি ১২ সপ্তাহের একটি মোরগ বা মুরগির জন্য পাঁচ কেজি খাদ্য লাগে। যার বাজার মূল্য ২৫০ টাকার কম। কিন্তু এক কেজি মোরগ বা মুরগি বিক্রি হয় ৩৫০ টাকায়। অর্থাৎ ১ কেজি মোরগ বা মুরগি বিক্রি করেই ১০০ টাকার চেয়ে বেশি লাভ করা সম্ভব হবে। যদিও পূর্ণ বয়সের একটি মুরগির ওজন ১ কেজি ৩৭০ গ্রাম এবং মোরগের ওজন ১ কেজি ৮৭২ গ্রাম এর বেশি হবে। ফলে দেশি মুরগির ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাবে সিভাসু উদ্ভাবিত মুরগির নতুন এ জাত।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০১৮
এমআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।