ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

তারা টাকা ফেরত দেন, রক্ত দিয়ে সুস্থও করেন

জমির উদ্দিন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০১৮
তারা টাকা ফেরত দেন, রক্ত দিয়ে সুস্থও করেন সুস্থ হওয়ার পর রোগীকে টাকা ফেরত দিচ্ছেন নায়েক অামির হোসেন

চট্টগ্রাম: কর্ণফুলী থানা এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন বাবা বাদশা মিয়া ও ছেলে এরশাদ উল্লাহ। মুমূর্ষু অবস্থায় দু’জনকে নিয়ে আসা হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে।

ঠিকানা জানতে পকেটে হাত দেওয়ার পর বাদশার কাছে পাওয়া যায় সাড়ে ৮ হাজার টাকা। তার রক্তের প্রয়োজন হলে রক্তও দেয়া হয়।

ছেলে এরশাদ সুস্থ হওয়ার পর বুঝিয়ে দেওয়া হয় ওই সাড়ে ৮ হাজার টাকা। ঘটনাটি ২১ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) দুপুরের।

শুধু এটি নয়, এরকম কয়েকটি ঘটনায় অনন্য নজির গড়েছেন চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরত সদস্যরা। উপ-পরিদর্শক আলাউদ্দিন তালুকদার, নায়েক মো. আমির হোসেন ও প্রান্ত বড়ুয়ারা মানবতা ও সততার এ কীর্তি গড়ে যাচ্ছেন নিয়মিত।

এরশাদ উল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, পেকুয়ার রাজাখালি থেকে শহরে আসার পথে কর্ণফুলী এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় বাবা ও আমি আহত হয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হই। পরে সুস্থ হলে আমির নামে এক পুলিশ সদস্য বাবার কাছ থেকে পাওয়া সাড়ে ৮ হাজার টাকা ফেরত দেন। তার এমন সততা দেখে আমি মুগ্ধ।

২০১৭ সালের ১৩ আগস্ট নিমতলা এলাকায় লরি চাপায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন মোশারেফ হোসেন ও জসীম শিকদার। চমেক হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান ওয়াজেদ আলী নামে আরও একজন। গুরুতর আহত হন দু’জন।

এদের মধ্যে আহত একজনের কাছে পাওয়া যায় রক্তমাখা সাড়ে ১৩ হাজার টাকা। রক্তের প্রয়োজন হলে পুলিশের নায়েক আমির হোসেন রক্তও দেন। পরে সুস্থ হলে যথারীতি টাকা বুঝিয়ে দেন নায়েক আমির।

চলতি বছরের মার্চের দিকে সীতাকুণ্ডের কালু ফকির মাজার এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় ঢাকার গাজীপুরের দুই ব্যবসায়ী গুরুতর আহত হন। এদের মধ্যে একজনকে চমেক হাসপাতালে আনার পর মারা যান। তার পকেটে পাওয়া যায় ৬৫ হাজার টাকা। পরে তার আহত বন্ধু সুস্থ হলে টাকাগুলো বুঝিয়ে দেন পুলিশ সদস্যরা।

নায়েক মো.আমির হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ভালো কাজ করার সুযোগ পেলেই করার চেষ্টা করি। একদিকে পুলিশ হিসেবে আমার দায়িত্ব, অন্যদিকে মানুষ হিসেবে এটা কর্তব্যও। দেশটাতো আমাদের। আমরা চাইলে এভাবে দেশটাকে এগিয়ে নিতে পারি।

উপ-পরিদর্শক আলাউদ্দিন তালুকদার বলেন, কেউ আহত হলে ঠাঁই হয় এ চমেক হাসপাতালে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ঠিকানা সংগ্রহ করতে হয়। মুমূর্ষু থাকায় তাদের মানিব্যাগে কিংবা পকেটে থাকা কাগজপত্র থেকে ঠিকানা জানার চেষ্টা করি।  অনেক সময় টাকাসহ অন্যান্য মূল্যবান জিনিস পেলে নিরাপদে রেখে সুস্থ হলে বুঝিয়ে দিই। এমনকি, অজ্ঞাত রোগী হলে রক্ত দিয়েও সুস্থ করে তুলতে আমরা চেষ্টা করি।

চমেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক আখতারুল ইসলাম বলেন, মাঝে-মধ্যে এরকম সততা ও মানবিকতার খবর আসে। এটা অবশ্যই অন্যের জন্য শিক্ষণীয় বিষয়।

বাংলাদেশ সময়: ১০০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০১৮
জেইউ/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad