ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

‘রাজাকার পুত্রের দৌড়ঝাঁপ ব্যথিত করে’

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৫৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৮
‘রাজাকার পুত্রের দৌড়ঝাঁপ ব্যথিত করে’ রাজাকার ফোরক আহমদ ভূঁইয়ার নাম মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রাম নামক গ্রন্থে

চট্টগ্রাম: বিজয়ের মাসে মহান জাতীয় সংসদে যাওয়ার জন্য কোনো রাজাকার পুত্রের দৌড়ঝাঁপ তাদের ব্যথিত করে বলে মন্তব্য করেছেন মুক্তিযোদ্ধারা।

সীতাকুণ্ড উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল বাকের ভূঁইয়া সম্পর্কে এক বিবৃতিতে এমন মন্তব্য করেন তারা।

আবদুল্লাহ আল বাকের ভূঁইয়ার বাবা ফোরক আহমদ ভূঁইয়া ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সীতাকুণ্ড এলাকায় পাকিস্তানী বাহিনীর অন্যতম সহযোগী শান্তি কমিটির প্রধান নেতা ছিলেন।

এর তথ্যপ্রমাণও রয়েছে।

ফোরক আহমদ ভূঁইয়ার জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায় মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রাম নামক গ্রন্থে।

বইয়ে উল্লেখিত রাজাকারের তালিকায় ৫৪ নম্বরে রয়েছে ফোরক আহমদ ভূঁইয়ার নাম। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের চট্টগ্রাম জেলা ইউনিট কমান্ড ২০১৩ সালে বইটি প্রকাশ করে।

জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মোহাম্মদ সাহাবউদ্দিন বলেন, ফোরক আহমদ ভূঁইয়া একজন কুখ্যাত রাজাকার। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য তার ছেলে আবদুল্লাহ আল বাকের ভূঁইয়া আজ বড় আওয়ামী লীগ নেতা। শুনেছি এখন এমপি হওয়ারও ইচ্ছা জেগেছে তার। ফোরক আহমদ ভূঁইয়া ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সীতাকুণ্ড এলাকায় পাকিস্তানী বাহিনীর অন্যতম সহযোগী শান্তি কমিটির প্রধান ছিলেন। পাকিস্তানী বাহিনীকে সহায়তা করেছেন এদেশের মুক্তিকামী মানুষকে নিশ্চিহ্ন করার কাজে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ তো মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের দল। এই দলের প্রতিনিধি হয়ে কেন কোনো রাজাকার পুত্র বা তার পরিবারের সদস্য জাতীয় সংসদে যাবে? বিজয়ের মাসে মহান জাতীয় সংসদে যাওয়ার জন্য কোনো রাজাকার পুত্রের দৌড়ঝাঁপ সহ্য করা হবে না। তাদের দৌড়ঝাঁপ আমাদের ব্যথিত করে, আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়।   

সীতাকুণ্ডের বাসিন্দা ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার একেএম সরওয়ার কামাল বলেন, ১৯৭১ সালে ফোরক আহমদ ভূঁইয়ার নেতৃত্বে সীতাকুণ্ডে স্বাধীনতাকামী বাঙালিদের উপর হামলা হয়েছে। ঘর-বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তার এক ছেলে বাকের ভূঁইয়া এখন আওয়ামী লীগ নেতা ও আরেক ছেলে আবদুল্লাহ আল মাহমুদ ভূঁইয়া জামায়াত নেতা।

আক্ষেপ করে একেএম সরওয়ার কামাল বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় ফোরক আহমদ ভূঁইয়ার কারণে বাড়ি-ঘর হারিয়েছি। আর এখন যদি তার ছেলে এমপি হয় তাহলে আমাদের বেঁচে থাকাই দায় হবে। আওয়ামী লীগ নিয়ে সীতাকুণ্ডে ষড়যন্ত্র চলছে। যেভাবে রাজাকার পরিবারের সদস্য ও তাদের দোসররা আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ করা শুরু করেছে, আগামি ২৫ বছর পর এখানে হয়তো সব কিছু তাদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১৮
টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।