ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

মৃত্যু ঘটাতে হবে রাজনৈতিক অপশক্তির

তপন চক্রবর্তী, ব্যুরো এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০১৮
মৃত্যু ঘটাতে হবে রাজনৈতিক অপশক্তির জাতীয় সংসদ নির্বাচন/ প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রাম: একাদশ সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে নৌকা প্রতীক পেতে আগ্রহী ৪ হাজার ২৩ জন। এদের মধ্যে যারা প্রার্থী মনোনীত হবেন, তাদের জয় নির্ভর করছে ভোটারদের ওপর।

ভোট দেয়ার ক্ষেত্রে একটি ভুল সিদ্ধান্ত হুমকির মুখে ফেলতে পারে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে। জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে তাই আবারও স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তিকে ক্ষমতায় আনতে না পারলে জাতির জন্য ভয়াবহ পরিস্থিতি অপেক্ষা করবে বলে মন্তব্য করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

এই পরিস্থিতিতে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে কেউ নৌকার বিরোধিতা করলে বা বিদ্রোহী হলে তাকে সংগঠন থেকে আজীবন বহিষ্কার করার কথাও বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে তার বিরুদ্ধে কুত্সা না রটানো এবং মিথ্যাচার না করার আহ্বানও জানান তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বাংলানিউজকে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের কথা তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে। তাদের প্রকৃত সত্য জানাতে হলে নিজেকেও মনে-প্রাণে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করতে হবে। সমৃদ্ধ ও আলোকিত বাংলাদেশ গড়তে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী জনপ্রতিনিধিকেই যেন জনরায় দেয়া হয়, সেটাই আমরা প্রত্যাশা করি।

আওয়ামী লীগের বর্তমান সাংগঠনিক পরিস্থিতি সম্পর্কে দলের উপদেষ্টা সমাজবিজ্ঞানী ড. অনুপম সেন বাংলানিউজকে বলেন, ১৯৮১ সালে নেতৃত্বে এসে দলকে সংগঠিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ জয়, পুতুলসহ তার পরিবারের সদস্যরা অনেক অসহায় সময় পার করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রাণনাশের চেষ্টায় বার বার হামলা চালানো হয়েছে। এসব দুঃসহ স্মৃতি ভুলে যায়নি বাংলার মানুষ।

যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে ক্ষমতায় এসে বারবার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে চেষ্টা করেছে, তারা আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে জানিয়ে তিনি বলেন, এ অবস্থায় নৌকার পক্ষে জনমত সৃষ্টি করতে হবে। অবহেলা করলে ১৯৯১ ও ২০০১ সালের নির্বাচনের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে বলেও আশঙ্কা তার।

দলের বেশ ক’জন উপদেষ্টা বাংলানিউজের সাথে আলাপকালে বলেছেন, ৩০ ডিসেম্বরের সংসদ নির্বাচন বানচাল করার জন্য ৭১ এর পরাজিত শক্তি ও ৭৫ এর ১৫ আগস্টের সুবিধাভোগীরা প্রাসাদ ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। তারা এদেশের উন্নয়ন, মানুষের ভাত ও ভোটের অধিকার চায় না। জনগণকে সাথে নিয়ে আওয়ামী লীগ সবসময় গণতন্ত্র ও সংবিধান রক্ষায় সচেষ্ট ছিল এবং এখনও আছে। আগামি নির্বাচনকে দলের জন্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে নিজেদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি না করে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তিকে ক্ষমতায় আসার পথ বন্ধ করে দেয়ার আহ্বান জানান তারা।

প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে এলাকায় জনপ্রিয়তা নেই, কিংবা কর্মী-সমর্থক ও দলে কোণঠাসা বর্তমান এবং সাবেক এমপি-মন্ত্রীদের আবারও মনোনয়ন দেয়া হলে আওয়ামীলীগকে তার খেসারত দিতে হবে বলেও মন্তব্য করেছেন তারা।

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচন বানচাল করার জন্য বিএনপি ও তার ছায়াতলে আশ্রিত স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি নানা রকম ছক তৈরী করছে। তারা এখন আগুন নিয়ে খেলার মহড়া দিচ্ছে। সংবিধান, গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা রক্ষার স্বার্থে ৭১ সালের মতই তাদেরকে প্রতিঘাত করার জন্য আমরা মাঠে প্রস্তুত।

তিনি বলেন, ড.কামাল হোসেন, আ স ম আবদুর রব, কাদের সিদ্দিকী, মাহামুদুর রহমান মান্না স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের পতাকাবাহী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তারা আজ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিকিয়ে দিতে একাত্তরের পরাজিত শক্তি এবং ৭৫ এর ১৫ আগস্টের বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সুবিধাভোগীদের সাথে হাত মিলিয়ে এদেশকে পাকিস্তান বানাতে চায়। বিএনপি-জামায়াত এবং কামাল হোসেন-রব-কাদের সিদ্দিকী গংরা বাঙালি জাতিসত্তার প্রত্যক্ষ শত্রু। তাই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে আবারও ক্ষমতায় আনতে হবে। ভোটারদের কাছে এ বার্তা পৌঁছে দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন বাংলানিউজকে বলেন, সব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে আগামি জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অর্থবহ করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বোচ্চ উদারতা দেখিয়েছেন। দলীয় ঐক্য সুদৃঢ় থাকলে কোন অপশক্তি নৌকার বিজয় ঠেকাতে পারবে না। এ বিশ্বাসবোধ থেকে জনগণের সাথে মিশে যেতে হবে। স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি আবারও ক্ষমতায় এসে যেন জ্বালাও-পোড়াও করতে না পারে, সেজন্য সবাইকে সচেষ্ট থাকতে হবে, মৃত্যু ঘটাতে হবে রাজনৈতিক অপশক্তির।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০১৮
টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।