ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

আনোয়ারা-সন্দ্বীপ

এগিয়ে আছেন জাবেদ, মিতার জন্য চ্যালেঞ্জ

নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০১৮
এগিয়ে আছেন জাবেদ, মিতার জন্য চ্যালেঞ্জ সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও মাহফুজুর রহমান মিতা

চট্টগ্রাম: আনোয়ারা ও কর্ণফুলি উপজেলা নিয়ে গঠিত চট্টগ্রাম-১৩ আসনে ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী প্রার্থী। মনোনয়ন দৌড়ে আছেন সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য ওয়াসিকা আয়শা খানসহ ৪ জন।

২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু বিএনপির সরওয়ার জামাল নিজামকে হারিয়ে সংসদ সদস্য হন।  মেয়াদ শেষ হওয়ার এক বছর আগে মৃত্যু হলে উপনির্বাচনে বিজয়ী হন তার ছেলে চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক সভাপতি সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ।

২০১৪ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য হন তিনি, করা হয় ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী।

৩ লাখ ৯৬ হাজার ভোটার অধ্যুষিত এই সংসদীয় আসনের অধীনে আছে রাষ্ট্রায়ত্ত সার কারখানা সিইউএফএল, কাফকো, কেইপিজেড।

জাবেদ সমর্থকরা জানান, গত ১০ বছরে এলাকায় কয়েক হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ হয়েছে। পারকী সৈকতে এক্সক্লুসিভ ট্যুরিস্ট জোন ঘিরে হোটেল, মোটেল, রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে বিশাল কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে। ২০২১ সালে শেষ হবে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণকাজ। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদকেই তারা আবারও নৌকার প্রার্থী হিসেবে পেতে চান।

সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বাংলানিউজকে বলেন, মরহুম বাবা আখতারুজ্জামান চৌধুরী এ এলাকার অবহেলিত ৫টি ইউনিয়ন নিয়ে কর্ণফুলী উপজেলা করার স্বপ্ন দেখেছিলেন। দেশের ৩৯০তম এ উপজেলা স্বীকৃতি পেয়েছে, বাবার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।

তিনি বলেন, এলাকার উন্নয়নের পাশাপাশি ভূমি মন্ত্রণালয়কে দুর্নীতিমুক্ত করার চেষ্টা করেছি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমার কাজের মূল্যায়ন করে দল থেকে মনোনয়ন দিলে আনোয়ারাকে মডেল উপজেলায় পরিণত করতে চাই।

বিএনপির দুর্গে আওয়ামীলীগ

মেঘনা নদীর মোহনায় জেগে ওঠা দ্বীপ সন্দ্বীপ। একটি পৌরসভা ও ১৫ ইউনিয়ন নিয়ে চট্টগ্রাম-৩ সংসদীয় এই আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামীলীগের মাহফুজুর রহমান মিতা।

স্বাধীনতা পরবর্তী ১০টি সংসদ নির্বাচনের ৫টিতেই এ আসনে বিএনপি বিজয়ী হয়। সর্বশেষ নির্বাচনে আসনটি তাদের হাতছাড়া হয়ে যায়। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয় পান মিতা।

প্রায় পৌনে ৪ লাখ মানুষের এই আসনে মোট ভোটার ২ লাখ ৩ হাজার ২৮৫ জন। পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৮৫৮ ও নারী ভোটার ১ লাখ ২ হাজার ৪২৭ জন।

শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন দিক থেকে অবহেলিত জনপদটিতে যাতায়াত ব্যবস্থাও অনুন্নত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১২ সালে সন্দ্বীপে এসে দ্বীপবাসীকে শতভাগ বিদ্যুৎ দেওয়ার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সম্প্রতি তা বাস্তবায়ন হয়েছে। সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে জাতীয় বিদ্যুৎ সঞ্চালন গ্রিডে যুক্ত হয়েছে সন্দ্বীপ। দ্বীপবাসী আশা করছে, এখানে শিল্প-কারখানা প্রতিষ্ঠা হলে তাদের জীবনমান উন্নয়ন হবে।

জানা গেছে, সন্দ্বীপ আসনে সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমান মিতার পাশাপাশি তার ব্যক্তিগত সহকারীও মনোনয়নপত্র নেন। এই তালিকায় আরও আছেন স্বাচিপের মহাসচিব ও বিএমএ নেতা ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী, পৌর মেয়র মো. জাফর উল্লাহ টিটু, উত্তর জেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মাইটভাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান লায়ন মো. মিজানুর রহমান মিজান, অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দিন জামশেদ, অ্যাডভোকেট রিদোয়ান বারী, শিল্পপতি শওকত হোসেন আজাদ, উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রাজিবুল আহসান সুমন এবং চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক সারোয়ার হাসান জামিল।

মনোনয়ন প্রত্যাশী বিএমএ নেতা ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী ২০০৮ সালে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে পরাজিত হন। বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে আনারস প্রতীক নিয়ে ২য় অবস্থানে ছিলেন ১৯৯১ ও ১৯৯৬ এর সংসদ সদস্য মরহুম মুস্তাফিজুর রহমানের পুত্র মাহফুজুর রহমান মিতা।

ভোটাররা বলছেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে নৌকার এ আসন ধরে রাখতে তৃণমূলে গ্রহণযোগ্যতা আছে এমন প্রার্থী বাছাই করতে হবে। তবে এখনও মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে আছেন মাহফুজুর রহমান মিতা।

সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমান মিতা বাংলানিউজকে বলেন, গত ৫ বছরে এলাকায় প্রায় ৬০০ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদন এনেছি। এর মধ্যে ১৪৪ কোটি টাকা ব্যয়ে সাবমেরিন কেবল স্থাপন, ২৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সন্দ্বীপের চারদিকে ব্লক বেড়িবাঁধ কাম মেরিন ড্রাইভ সড়ক নির্মাণ, ১০০ কোটি টাকায় শতাধিক অভ্যন্তরীণ সড়ক সংস্থার, ৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন ল্যান্ডিং জেটি স্থাপন, ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে হেলথ কমপ্লেক্স প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এই প্রথম সন্দ্বীপে বিদ্যুৎ আনতে সক্ষম হয়েছি।

মনোনয়ন পেলে এবারও নৌকার প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়ে উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার কথাও জানান মাহফুজুর রহমান মিতা।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০১৮
এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।