রোববার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে ওসেপের গ্রাহকদের বিক্ষোভ সমাবেশে আসা হোসনে আরা বাংলানিউজকে এভাবেই কষ্টের কথা জানান।
শুধু হোসনে আরা নন।
বৃদ্ধ সাবিনা খাতুন জানান, কাগজ কুড়িয়ে বিক্রি করে মাসে ৩০০ টাকা করে জমিয়েছিলাম। কত বেলা উপোস দিয়েছি, কিন্তু কিস্তির টাকা ভাঙিনি। আমার চার বছর ধরে জমানো টাকা নিয়ে পালিয়ে গেল ওরা।
‘সংসারের বাজারের টাকা চুরি করে মাসে ৩০০ টাকা করে দিয়েছিলাম ওসেপকে। স্বপ্ন দেখেছিলাম, কিছু একটা করার। এখন লাভ তো দূরে থাক আসলই পাচ্ছি না। ’ বললেন নূর নাহার।
আয়শা বেগমের স্বামী সিএনজি অটোরিকশা চালান। সংসারের টাকা থেকে বাঁচিয়ে ৮৪ হাজার টাকা সঞ্চয় করেছিলেন ওসেপে। বললেন, ‘স্বামীকে কী জবাব দেব! ওই টাকায় যদি ছেলেমেয়েদের নিয়ে ভালোমন্দ খেতাম তা-ও ভালো ছিল। ’
রাতের বেলা দারোয়ানি করেন ফজল আহমদ। তিনি বলেন, ‘পরিবারের সুখের আশায় দিনে ১০০ টাকা করে জমিয়েছিলাম। ২০ হাজার ১৬০ টাকা জমেছিল। আফসোস, আম-ছালা সব গেল। গরিবদের সঙ্গে চিটারি করলো ওসেপ। ’
রিকশাচালক মো. শফির ৬০ হাজার টাকা, আবদুস শহীদের ১৫ হাজার ২৫০ টাকা, মো. ফয়সলের ১৬ হাজার টাকা, নাজমা বেগমের ২২ হাজার ১০০ টাকা, ঝাউতলার মনোয়ারা বেগমের ৯৮ হাজার টাকা, ডিজেল কলোনির সামসুন নাহার ও তার মেয়ে নূরজাহান বেগমের ৩ লাখ টাকাসহ অসংখ্য গ্রাহকের টাকার দাবিতে বিক্ষোভে অংশ নেন।
ওসেপ গ্রাহক মো. আজগর আলী বাংলানিউজকে জানান, আমরা একটি জমা বই পেয়েছি যেটির গ্রাহক নম্বর ৫৭ হাজার ১৫৪। আমাদের বিশ্বাস অন্তত ৫০ হাজার নিম্নআয়ের মানুষের ৫০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ওসেপ। আমরা গরিব মানুষ। আমাদের কষ্টের টাকার লাভ চাই না। আমাদের আসল ফিরিয়ে দিতে হবে। আমাদের কাছে জমা বই, সরকারি স্ট্যাম্পে চুক্তিনামা সবই আছে।
তিনি বলেন, সমাজের অনেক প্রতিষ্ঠিত মানুষ ওসেপের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার ছবি আর সরকারি রেজিস্ট্রেশন নম্বর (১৫০০২) মুদ্রিত দেখে আমরা প্রতিষ্ঠানটিকে বিশ্বাস করেছিলাম। তাদের স্লোগান ছিল ‘ওসেপের সদস্য হব, নিজের জীবন নিজে গড়ব’। এখন তারা আমাদের পথে বসিয়ে দিল।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০১৮
এআর/এসি/টিসি