তারা হলেন-বর্তমান সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (একাংশ) কার্যকরী সভাপতি মঈনউদ্দিন খান বাদল, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি, সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ।
এই আসনে মহাজোট থেকে দুইবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন বাদল।
কিন্তু আসনটিতে দুইভাগে বিভক্ত আওয়ামী লীগের একটি পক্ষ এবার অনেকটা প্রকাশ্যেই বাদলের বিরোধিতা করছেন। মনোনয়নপ্রত্যাশী মোছলেম উদ্দিন ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি এস এম আবুল কালামকে নিয়ে বিভক্ত উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
মোছলেম গ্রুপের দাবি, দলের জন্য ত্যাগী নেতা মোছলেম উদ্দিনকে মনোনয়ন দেয়া হলে তিনি জয়ী হতে পারবেন। বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (বাংলাদেশ জাসদ) এর নিবন্ধন না পাওয়ায় বাদলকে নৌকা প্রতীক না দেয়ার কথাও বলছেন তারা।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহের সময় মঈনউদ্দিন খান বাদলকে ‘স্বতন্ত্র’ প্রার্থী এবং বোয়ালখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে সংগ্রহ করা মনোনয়নপত্রে ‘জাসদ’ প্রার্থী উল্লেখ করা হয়।
এ প্রসঙ্গে মঈনউদ্দিন খান বাদল বলেন, জোটের প্রার্থী হিসেবে আমি নৌকা মার্কায় নির্বাচন করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছি। নির্বাচন কমিশনের বিধান অনুযায়ী অনিবন্ধিত দলগুলো জোটের নিবন্ধিত দলের প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে পারবে। প্রধানমন্ত্রী দলীয় মনোনয়ন কার্যক্রম শেষ করে জোটের বিষয়টি দেখবেন।
বঙ্গবন্ধুর সহচর মোছলেম উদ্দিন আহমদ মহানগর যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠনের দায়িত্বও পালন করেছেন। তিনি বলেন, আশা করছি জননেত্রী শেখ হাসিনার মনোনয়ন পেয়ে আমি বিজয়ী হতে পারবো।
এদিকে মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসিও এই আসন থেকে মনোনয়ন চাওয়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগকে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে। যদিও তিনি ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৯ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৫ সালের ১৪ জুলাই তিনি মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। চট্টগ্রাম-৯ আসনের বিভিন্ন ওয়ার্ডে তিনি উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। শিক্ষার বিস্তারে রেখেছেন অগ্রণী ভূমিকা।
নুরুল ইসলাম বিএসসি বাংলানিউজকে বলেন, দুটি সংসদীয় আসন চট্টগ্রাম-৮ ও ৯ এর জন্য আমি মনোনয়ন ফরম নিয়ে জমা দিয়েছি। যে আসন থেকেই আমাকে প্রার্থী করা হোক না কেন, বিজয় ছিনিয়ে আনতে পারবো।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ, সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালামেরও আগ্রহ আছে চট্টগ্রাম-৮ আসনের প্রতি। এবার মনোনয়ন পেলে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী বলে জানালেন তিনি। অবশ্য চট্টগ্রাম-৯ আসনের মনোনয়ন ফরমও সংগ্রহ করে জমা দিয়েছেন ওয়েল গ্রুপ অফ ইন্ডাষ্ট্রিজ এর চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম। ২০০৮ সালেও তাকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল। পরে জোটের প্রার্থীকে দেয়া হয় মনোনয়ন।
পাশাপাশি এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইছেন নুরুল ইসলাম বিএসসির ছেলে মুজিবুর রহমান মুজিব, নগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক রেজাউল করিম চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আবদুল কাদের সুজন, জোবাইরা নার্গিস খান, এসএম কফিল উদ্দিন, নওশাদ মাহমুদ চৌধুরী, আশেক-এ রাসুল খান এবং মঈনউদ্দিন খান বাদলের স্ত্রী সেলিনা খান বাদল। সেলিনা খান বাদল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আহমদুল্লাহ-যর্তুমা ট্রাস্টের চেয়ারম্যান।
শেষ পর্যন্ত চট্টগ্রাম-৮ আসন থেকে নৌকা প্রতীক কে পাচ্ছেন, তা নিশ্চিত হতে অপেক্ষা করতে হবে আরও কয়েকদিন।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আওয়ামীলীগের জন্য এবারের নির্বাচন একটি চ্যালেঞ্জ। কোন গ্রুপিং বা দ্বন্দ্ব জিইয়ে রেখে কেউ পার পাবে না। দলীয় সভানেত্রী যাকে নৌকা প্রতীক দেবেন, তার পক্ষে সবাইকে কাজ করতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১৮
এসি/টিসি