ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

সাতকানিয়া-লোহাগাড়ায় ‘নৌকা’ পাচ্ছেন কে?

সরওয়ার কামাল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১৮
সাতকানিয়া-লোহাগাড়ায় ‘নৌকা’ পাচ্ছেন কে? আলোচনায় থাকা নদভী, আমিন, সুফিয়ান ও মোতালেব। ছবি: বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতের দুর্গ হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হতে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন ১৮ জন মনোনয়ন প্রত্যাশী।

এসব প্রার্থীরা দলীয় মনোনয়ন পেতে শুরু করেছেন জোর তদবির। আশাবাদী রয়েছেন মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রেও।

প্রার্থী হতে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন বর্তমান সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজাম উদ্দীন নদভী, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, রুপালী ব্যাংকের পরিচালক ও চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আবু সুফিয়ান, সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ মোতালেব।

এছাড়াও ফরম সংগ্রহ করেছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. মাইন উদ্দিন হাসান চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর একেএম সিরাজুল ইসলাম, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের মহিলা সম্পাদিকা অ্যাডভোকেট কামরুন নাহার, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. মিনহাজুর রহমান, চট্টগ্রাম চেম্বারের পরিচালক অহিদ সিরাজ চৌধুরী স্বপন, দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রী ববিতা বড়ুয়া, আওয়ামী লীগ নেতা আমান উল্লাহ জাহাঙ্গীর, মঈনুল ইসলাম মামুন, শহিদুল ইসলাম, মো. ইদ্রিস, মোস্তফা রফিকুল ইসলাম, দেলোয়ার হোসেন, এরশাদুল হক, এবং ফরিদুল ইসলাম।

১৮ জন মনোনয়ন প্রত্যাশী দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করলেও আলোচনায় রয়েছেন আবু রেজা মুহাম্মদ নদভী, আমিনুল ইসলাম, আবু সুফিয়ান ও এমএ মোতালেব।

আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, এ চার জনের যেকোন একজন নৌকার টিকিট পাচ্ছেন এটা একপ্রকার নিশ্চিত। ঘুরে ফিরে আলোচনায় রয়েছেন এ চার প্রার্থীই। দুই এক দিনের মধ্যে আসতে পারে ঘোষণা কে হচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী।

জামায়াতের দুর্গ হিসেবে দেশব্যাপী পরিচিত এ আসনে জিততে হলে প্রয়োজন শক্ত প্রার্থী। সাধারণ ভোটারের কাছে গ্রহণযোগ্য ও দলীয় নেতাকর্মীদের কাছে গ্রহণযোগ্য এমন প্রার্থী প্রয়োজন। এমনটাই মনে করেন দলীয় নেতাকর্মীরা।

জামায়াতে ইসলামী, বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতারাও নির্বাচন কমিশনের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে তাদের প্রার্থীতা জানান দিয়েছেন এ আসনে।

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী এমএ মোতালেব সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি বনফুল ও কিষোয়ান গ্রুপের চেয়ারম্যান।

এমএ মোতালেব বাংলানিউজকে বলেন, আমি দলীয় মনোনয়ন চেয়েছি। আমি আওয়ামী লীগের তৃণমূলের কর্মী। দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় সামাজিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত আছি। আমার প্রচুর সমর্থক রয়েছে। ব্যবসায়ী সমাজ রয়েছে যারা চায় আমি তাদের প্রতিনিধিত্ব করি।

তিনি বলেন, সবকিছু বিবেচনায় যদি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে মনোনয়ন দেন তাহলে আমি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।

আওয়ামী লীগের কোনো দলীয় পদে না থাকলেও ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেলে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দীন নদভী। পরে তাকে সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য করা হয়। এবারও তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে।

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী আবু সুফিয়ান দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে দীর্ঘদিন সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও রুপালী ব্যাংকের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী আবু সুফিয়ান বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমি যদি মনোনয়ন পাই তাহলে অবশ্যই জিতব। এলাকার মাদক, সন্ত্রাস, নাশকতা দূর করে শান্তি বিরাজ করতে কাজ করবো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের উন্নয়নের ধারবাহিকতা বজায় রাখতে কাজ করবো। ’

তিনি বলেন, ‘আমরা যেই মনোনয়ন পাই না কেন সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবো। ’

আওয়ামী লীগের আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী আমিনুল ইসলাম ছাত্রবস্থায় দায়িত্ব পালন করেছেন ছাত্রলীগের তৃণমূল থেকে একেবারে সর্বোচ্চ পর্যায়ে। ছিলেন ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি। পরে দুইবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।

এ বিষয়ে আমিনুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বৃহৎ রাজনৈতিক দল। দলে গণতান্ত্রিক চর্চা রয়েছে। আওয়ামী লীগ থেকে যে কেউ নমিনেশন চাইতে পারে, এটা তার গণতান্ত্রিক অধিকার কিন্তু দলীয় নমিনেশন দেবেন নেত্রী (শেখ হাসিনা)। তার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। উনার বাইরে গিয়ে কারো কথা বলার সুযোগ নেই। ’

তিনি বলেন, ‘দলীয় নমিনেশন দেওয়ার ক্ষেত্রে সাধারণ জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা, দলীয় নেতাকর্মীদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা, রাজনৈতিক নৈতিকতা এসব বিষয় গুরুত্ব দেওয়া হবে। অতীতে কে কোন দল করেছে, ১৯৭৫ পরবর্তী সময়ে কার ভূমিকা কেমন ছিল, দলীয় কাজে পাওয়া যায় কি না এসব বিষয় বিবেচনায় দলীয় নমিনেশন দেওয়া হবে। ’

তিনি বলেন, ‘দলের প্রতি ত্যাগ, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বিবেচনা করলে আমি নমিনেশন না পাওয়ার কোনো কারণ দেখিনা। কিন্তু দলের নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যা সিদ্ধান্ত দেবেন তা আমরা মেনে কাজ করবো। ’

দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আওয়ামী লীগ বৃহৎ গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। আওয়ামী লীগের হয়ে অনেকেই জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করার ইচ্ছা করতে চাইবেন। কিন্তু সুযোগ পাবেন তিনিই যার দলের জন্য ত্যাগ রয়েছে, শ্রম রয়েছে, তৃণমূলের নেতাকর্মীদের কাছে যিনি গ্রহণযোগ্য। ক্লিন ও ফ্রেশ ইমেজের প্রার্থী এবার দলীয় মনোনয়নে প্রাধান্য পাবেন।

দুই এক দিনের মধ্যেই হয়তো প্রার্থী ঘোষণা করা হবে বলেও জানান।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৮
এসকে/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad