ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চট্টগ্রামের ৫ আসনে মুখোমুখি বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থীরা

জমির উদ্দিন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৮
চট্টগ্রামের ৫ আসনে মুখোমুখি বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থীরা বিএনপির ৫ হেভিওয়েট প্রার্থী

চট্টগ্রাম: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের ৫ আসনে বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তাদের মুখোমুখি অবস্থানের কারণে দলীয় শিবিরে বিরাজ করছে অস্থিরতা।

চট্টগ্রাম-১০ আসনে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান। এ আসন থেকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীও মনোনয়নপত্র নিয়েছেন।

আবদুল্লাহ আল নোমানের ব্যক্তিগত সচিব নুরুল আজিম হিরু বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে কারচুপির কারণে অল্প ভোটের ব্যবধানে নোমান হেরে যান। তারপরও ১০ বছর ধরে তিনি ওই এলাকায় কাজ করেছেন।

এলাকাবাসীর সুখে-দুখে সবসময় তিনি পাশে থেকেছেন। একজন যোগ্য প্রার্থী  হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তাই চট্টগ্রাম-১০ আসন থেকে তিনি মনোনয়ন পাবেন বলে আশা করছেন। ওই আসন থেকে মনোনয়ন দেয়া না হলে-তিনি নির্বাচন করবেন না।

তবে এর মধ্যে এলাকার ভোটারদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন আবদুল্লাহ আল নোমান। নির্বাচনে প্রার্থী হলে তাকে নগরের ৮, ১১, ১২, ১৩, ১৪, ২৪, ২৫ ও ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটারদের ভোটে জিততে হবে। দলের জন্য নোমানের ত্যাগের কথাও কারও অজানা নয়। তিনি বামধারার ছাত্ররাজনীতি করে কারাভোগ করেছেন। মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন। স্বাধীনতার পর মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর সঙ্গে রাজনীতি করেছেন।

নোমান বিএনপিতে যোগ দেন জিয়াউর রহমানের আমলে। ওই সময়ে তিনি মনোনীত হয়েছিলেন শ্রমিক দলের সহ-সভাপতি। তারপর নানা উত্থান-পতনেও তিনি এ দল ছেড়ে যাননি। এরশাদ সরকারের আমলে কারাভোগ করেছেন। দলের টালমাটাল অবস্থায় খালেদা জিয়াকে ছেড়ে যাননি। শ্রমিক দলের সভাপতি, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও যুগ্ম মহাসচিব ছিলেন তিনি। এখন পালন করছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব।

চট্টগ্রাম-১০ ও ১১ আসনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। চট্টগ্রাম-১০ আসন থেকে নোমানকে প্রার্থী করা হলে চট্টগ্রাম-১১ আসনে আমীর খসরুকে মনোনয়ন দিতে পারে দল। তবে এ দু’টি সংসদীয় এলাকায় কাজ করেছেন খসরু। নেতা-কর্মীদের মধ্যেও তার বেশ জনপ্রিয়তা আছে।

বিএনপির নেতাকর্মীদের দাবি, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী জয়ী হবেন। তিনি চট্টগ্রাম স্টক অ্যাক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রেখেছেন । সাগর উপকূলে দীর্ঘ বেড়িবাঁধ নির্মাণেও তার অবদান আছে। শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নেও তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে সহায়তা করেছেন।

চট্টগ্রাম-৮ আসন থেকে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন সাবেক মন্ত্রী এম মোরশেদ খান, নগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান ও নগর বিএনপি নেতা এরশাদ উল্লাহ। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আছেন মোরশেদ খান।

১৯৮৬ সালে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মোরশেদ খান। এরপর আরও তিনবার (ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬, জুন ১৯৯৬ ও ২০০১) সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৯২-৯৬ পর্যন্ত মন্ত্রীর পদমর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত ছিলেন। একই সঙ্গে বাংলাদেশ স্পেশাল কমিটি অন ফরেন অ্যাফেয়ার্সের চেয়ারম্যানও ছিলেন। মোরশেদ খান ২০০১-০৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

চট্টগ্রাম-১৬ আসনে (বাঁশখালী) বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে ৪বার নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি জাফরুল ইসলাম চৌধুরীর নামও আলোচনায় এসেছে।

১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে বিএনপির ব্যানারে বাঁশখালীর সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন জাফরুল ইসলাম চৌধুরী। এরপর ১৯৯৬ সালের ১২ জুলাই, ২০০১ সালের ১ অক্টোবর ও সর্বশেষ ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন জাফরুল। তিনি ২০০১ সালের নির্বাচনে সংসদ সদস্য হওয়ার পর প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি এবার মনোনয়ন পেলে বাঁশখালীর মূল সমস্যাগুলো চিহিৃত করে এলাকাবাসীকে কর্মমুখী করে তোলার কথা জানান। এলাকার দারিদ্র্য ঘুচিয়ে জীবন ও জীবিকার সঙ্গে এলাকাবাসীকে সম্পৃক্ত করার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছেন বাংলানিউজের কাছে।

চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন সাবেক মেয়র মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন। এছাড়া তার ছেলে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মীর হেলাল উদ্দিনও মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। এ আসনে আরও প্রার্থী হতে চান এস এম ফজলুল হক, চাকসুর ভিপি নাজিম উদ্দিন।

তবে মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনই সবচেয়ে বেশি আলোচনায়। ১৯৭৭ সালের প্রথম দিকে জিয়াউর রহমানের হাত ধরেই তিনি রাজনীতিতে আসেন। এরপর নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি পালন করেছেন নানা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।

মীর হেলালের দাবি, দলের জন্য দীর্ঘদিন ধরে তিনি কাজ করছেন, তৃণমূলকে সংগঠিত করেছেন । তাই তাকে হাটহাজারী আসন থেকে প্রার্থী করা হলে, জয় পাবে ধানের শীষ।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৮
জেইউ/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।