ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ভোটের মাঠে আত্মবিশ্বাসী আওয়ামী লীগ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৮
ভোটের মাঠে আত্মবিশ্বাসী আওয়ামী লীগ

চট্টগ্রাম: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাঠে আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠছে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও সমর্থকেরা। উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় আবারও ভোটাররা নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের নির্বাচিত করবেন-এমনটাই ভাবছেন তারা।

পুনঃতফসিল অনুযায়ী জামায়াতে ইসলামী ছাড়া সব রাজনৈতিক দলই এবার নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। বিএনপিসহ ঐক্যফ্রন্ট এবং ২০ দলীয় জোট নির্বাচনে যাওয়ায় আওয়ামী লীগের এ আত্মবিশ্বাস নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।

তাদের মতে, আগামী ৩০ ডিসেম্বরের অংশগ্রহণমূলক এ নির্বাচনে সরকারের ভেতর ঘাপটি মেরে থাকা ব্যক্তিরা দলীয় ব্যানারে কাজ করলেও তাদের অবস্থান থাকতে পারে বিরোধী শিবিরে। নৌকার স্লোগান তুলে তাদের সমর্থকরা ভোট দিতে পারে অন্য নির্বাচনী প্রতীকে।

তাই প্রার্থী মনোনয়নে দলকে সজাগ থাকতে হবে।

১৯৯১ সালে এরশাদ সরকারের পতনের পর ধারণা করা হয়েছিল, বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয় নিশ্চিত। সেসময় বিএনপি ২৯২ আসনে প্রার্থী দিয়েছিল। আর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়াকে কেন্দ্র করে কোন্দলের সৃষ্টি হয়। অনেক আসনের একাধিক প্রার্থী এলাকায় প্রচারণা চালিয়ে নিজেকে নৌকার কাণ্ডারি দাবি করেন। ফলে সেই নির্বাচনে স্বাধীনতার পক্ষের দলটির ভরাডুবি হয়।

যদিও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যারা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সংসদ নির্বাচনে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হলে ‘খবর’ আছে।

বুধবার (১৪ নভেম্বর) আওয়ামী লীগের সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকারের সময় দলের মনোনীত প্রার্থীর বিরোধিতা কেউ করলে তাকে সঙ্গে সঙ্গেই আজীবনের জন্য বহিষ্কার করে দেওয়া হবে বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন।

আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বাংলানিউজকে বলেন, দলকে ভালোবেসে যে কেউ মনোনয়ন চাইতে পারেন। তবে দলীয় মনোনয়ন বোর্ড যাকে যোগ্য মনে করবে, তাকেই প্রার্থী ঘোষণা করা হবে। এখানে কারও অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসে ভোগার সুযোগ নেই। চূড়ান্ত মনোনয়নে যিনি নৌকার প্রার্থী হবেন, তাকে যেকোনো মূল্যে জয়ী করে আনতে নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার নির্দেশনা দেওয়া আছে।

এদিকে গত সাড়ে ৪ বছরে হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি দেয়নি বিএনপি। খালেদা-তারেকের বিরুদ্ধে সাজার রায়েও বিএনপি সহিংসতা দেখায়নি। বিক্ষোভ, অনশনের মতো অহিংস কর্মসূচি পালন করে তারা জনমত আদায়ের চেষ্টা চালিয়েছে। তবে বুধবার (১৪ নভেম্বর) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় তারা নিজেদের শক্তিশালী অবস্থানের কথা জানান দিয়েছে।

জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে নির্বাচন কমিশন (ইসি) প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের ঠেকাতে দলটির শক্তিশালী প্রার্থীদেরও স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করতে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে অনেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সমাজবিজ্ঞানী ড. অনুপম সেন বাংলানিউজকে বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম কিনেছেন ৪ হাজার ২৩ জন। ৩০০ আসনের মধ্যে প্রতি আসনেই গড়ে ১০ জনের বেশি প্রার্থী। এতে আশাহত হওয়ার কারণ নেই।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের শাসনামলে সব ক্ষেত্রেই ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। এ উন্নয়নের অংশীদার জনগণ। যারা নিজ নিজ এলাকার জন্য কাজ করেছেন, তারা প্রার্থী হতে চান।

তবে প্রার্থীদের অনেকের সঙ্গে কথা হয়েছে জানিয়ে ড. অনুপম সেন বলেন, এবারের নির্বাচনকে হালকাভাবে দেখার সুযোগ নেই। প্রার্থীরাও বলছেন, সব দল অংশগ্রহণ করায় নির্বাচন হবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১৮
টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।