ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

আদালতের আদেশে জব্দ করা চেক ব্যাংকে উপস্থাপন!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১৮
আদালতের আদেশে জব্দ করা চেক ব্যাংকে উপস্থাপন!

চট্টগ্রাম: ব্যবসায়ী মো. রাকিবুল ইসলামের (৩৭) হারিয়ে যাওয়া চেক ব্যাংকে উপস্থাপন করেন এক নারী। পরে আদালতে মামলা করে সেই চেক জব্দ করে ব্যাংক কর্মকর্তার জিম্মায় দেওয়া হয়। জিম্মায় থাকা সেই চেক পুনরায় ব্যাংকে উপস্থাপন করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। 

এমন একটি ঘটনার তদন্ত শেষে ওই নারী ও এক ব্যাংক কর্মকর্তাসহ দুইজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

অভিযুক্ত দুইজন হলেন-মিরসরাই উপজেলার মিঠানালা এলাকার নিজামুদ্দৌলার মেয়ে হোসনে আরা বেগম পারুল (৩৬) এবং চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী সাতবাড়িয়া এলাকার মো. লেদু মিয়ার ছেলে মো. আবুল কালাম আজাদ (৪৬)।

অভিযুক্ত মো. আবুল কালাম আজাদ ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের সিডিএ অ্যাভিনিউ শাখার ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তিনি বর্তমানে ওই ব্যাংকের হালিশহর শাখার ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে কর্মরত আছেন।

পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো’র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মঈন উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, ব্যবসায়ীর হারিয়ে যাওয়া চেক ব্যাংকে উপস্থাপন করেছিলেন হোসনে আরা বেগম পারুল। পরে আদালতে মামলা করে সেই চেক জব্দ করে ব্যাংক কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদের জিম্মায় দেওয়া হয়। মো. আবুল কালাম আজাদের জিম্মায় থাকা সেই চেক পুনরায় ব্যাংকে উপস্থাপন করে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল তার প্রমাণ পাওয়া গেছে। আদালতে দুইজনকে অভিযুক্ত করে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে।

মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, ব্যবসায়ী মো. রাকিবুল ইসলামের ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের বারৈয়ারহাট শাখায় থাকা সঞ্চয়ী হিসাবের একটি চেক হারিয়ে যায়। হোসনে আরা বেগম পারুল সেই চেকে ২৮ লাখ টাকা উল্লেখ করে নগদ করার জন্য ইসলামী ব্যাংকের মুরাদপুর শাখায় উপস্থাপন করেন। যাচাইয়ের জন্য ব্যাংক কর্মকর্তারা মো. রাকিবুল ইসলামকে ফোনে চেকের বিষয়টি জানালে তিনি সেটি হারিয়ে গেছে বলে জানান এবং এটি নিয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি আছে বলে জানান। পরে মো. রাকিবুল ইসলাম আদালতে মামলা করে সেই চেক জব্দ করার আবেদন করেন। আদালত তা মঞ্জুর করলে জব্দ করা চেকটি ব্যাংক কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদের জিম্মায় দেওয়া হয়। পরে হোসনে আরা বেগম পারুল ব্যাংক কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদের যোগসাজস করে সেই চেক ফের ব্যাংকে উপস্থাপন করে ডিসঅনার করিয়ে নেন এবং মো. রাকিবুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে জানতে পেরে আদালতে হোসনে আরা বেগম পারুল ও ব্যাংক কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদকে অভিযুক্ত করে আদালতে একটি মামলা করেন মো. রাকিবুল ইসলাম।  

পিবিআই’র দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে উপস্থাপন করা হলে আদালত তা বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতে স্থানান্তর করার আদেশ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

বাদীর আইনজীবী মো. আবু আবদুল্লাহ আল হেলাল বাংলানিউজকে বলেন, পিবিআই তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। তদন্তে আসামিদের বিরুদ্ধে যে অপরাধের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে তা দুর্নীতি দমন আইনের তফসিলভুক্ত অপরাধ তাই আদালত মামলাটি বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতে স্থানান্তর করার আদেশ দিয়েছেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৮
এসকে/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।