নতুন প্রজন্ম এখন মাঠে নেমেছে অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকায়। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় তারাও হয়েছে সহযাত্রী।
গবেষণা ও কমিউনিকেশন স্ট্র্যাটেজি ডেভলপমেন্ট বিষয়ক প্রতিষ্ঠান ‘কলরেডি’ এক জরিপ চালিয়ে দেখেছে, দেশের ৫১ দশমিক ৩ শতাংশ তরুণই বর্তমান সরকারকে পুনরায় নির্বাচিত করতে চায়। তরুণ ভোটারদের মধ্যে ৬৮ দশমিক ৩ শতাংশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কর্মকাণ্ডে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। জরিপে অংশ নেওয়া তরুণদের মধ্যে ৫৩ দশমিক ৫ শতাংশ মনে করেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু হবে।
গবেষণামূলক এই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বর্তমানে দেশে ৮০ লাখ থেকে ১ কোটি তরুণ ভোটার আছে। জরিপে চট্টগ্রাম থেকে অংশ নেয়া ২০২ জনের মধ্যে বর্তমান সরকারকে চায় ৫৩ দশমিক ৫ শতাংশ। এই তরুণ প্রজন্ম চায় দেশের উন্নয়ন। তারা প্রত্যাশা করে দুর্নীতিমুক্ত দেশ ও সমাজ। প্রথমবারের মত ভোট দিতে যাওয়া ভোটাররা বলছেন, পাকিস্তান সমর্থকরা ৩০লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশকে তালেবানি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় তৎপর আজও। জামায়াত-শিবিরের জঙ্গী কর্মকাণ্ড, বিএনপির শাসনামলের দুঃশাসন মানুষ এখনও ভুলতে পারেনি। তাই স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করা এখন সময়ের দাবি।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, ২০১৪ সালে দেলাওয়ার হোসেন সাঈদী ও কাদের মোল্লার ফাঁসির রায়কে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে সহিংসতা, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, ২০১৫ সালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলের লাগাতার অবরোধের মধ্যে পেট্রোল বোমা হামলার কথা মনে পড়লেই বাঙালির মন খারাপ হয়, কাঁদে স্বজন হারানোর বেদনায়।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বাংলানিউজকে বলেন, মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী স্বাধীন দেশ গঠনে জাতির জনকের যে সুদূরপ্রসারী লক্ষ্য ছিল, তা বাস্তবায়ন করতে দেয়নি স্বাধীনতাবিরোধীরা। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মধ্যদিয়ে তারা বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছিল।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়তে উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় শামিল হয়েছে নতুন প্রজন্ম। খালেদা-তারেক ও জামায়াতের দুঃশাসন থেকে চিরতরে মুক্তি পেতে তারা রাষ্ট্রক্ষমতায় বঙ্গবন্ধুকন্যাকে দেখতে চায়। জীবনের প্রথম ভোটটিও তারা দেবে স্বাধীনতার পক্ষে-নৌকা মার্কায়।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা উপ কমিটির সদস্য এবং নির্বাচন পরিচালনা উপ কমিটির সদস্য নাজমুল করিম চৌধুরী শারুন বাংলানিউজকে বলেন, এবার যারা প্রথমবার ভোটার-তারা অনেক রাজনীতি সচেতন। আওয়ামীলীগের গত ১০ বছরে নেয়া অধিকাংশ পদক্ষেপই তরুণদের জন্য, তাদের ভবিষ্যতের জন্য। তারা ধ্বংসাত্মক রাজনীতি দেখতে চায় না, বিএনপি-জামায়াতের আগুন সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও জঙ্গীদের বাংলাদেশ আর দেখতে চায় না। তারা চায় সম্প্রীতি ও উন্নতির এক আধুনিক ডিজিটাল বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, আওয়ামীলীগ সরকারের উদ্যোগে দ্রুত ইন্টারনেট সেবা খুলে দিয়েছে সম্ভাবনার দ্বার। এর বদৌলতে বেকারত্ব দূরীকরণে শিক্ষিত যুবকরা ঘরে বসে আয়ের সুযোগ পাচ্ছে।
গার্মেন্টস খাতে বিনিয়োগ করতে বিদেশী উদ্যোক্তারা এখন বাংলাদেশমুখী। এই শিল্পে হয়েছে অনেক কর্মসংস্থান। বাস্তবায়ন হচ্ছে ‘গ্রিন গার্মেন্টস’ পরিকল্পনা। সরকার অ্যালিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, মেট্রোরেল ও বাস র্যাপিড ট্রানজিট তৈরিতে কাজ করছে। কোটা পদ্ধতি সংস্কার করে মেধাবীদের মূল্যায়ন করা হয়েছে।
নাজমুল করিম চৌধুরী শারুন আরও বলেন, নতুন প্রজন্ম আর কোনও রাজনৈতিক ঝুঁকি নিতে চায় না, তারা যা দৃশ্যমান তা-ই বিশ্বাস করে। গত ১০ বছরে বাংলাদেশের সব সেক্টরে রেকর্ড পরিমাণ উন্নয়ন হয়েছে। নতুন প্রজন্ম মনে-প্রাণে চায় একটি মর্যাদাপূর্ণ সমৃদ্ধ বাংলাদেশ, যা একমাত্র জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই সম্ভব। এই সুশাসন ও উন্নয়নের ধারাবাহিকতার জন্য তরুণ প্রজন্ম আগামী নির্বাচনে নৌকায় ভোট দিয়ে আবারো প্রমাণ করবে, তরুণদের আস্থা বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ও শেখ হাসিনার নৌকায়।
রাউজানের সংসদ সদস্য ফজলে করিম চৌধুরীর ছেলে ফারাজ করিম চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমান সরকারের দুই মেয়াদে ২ হাজার ১৩৫টি উন্নয়ন প্রকল্প নেয়া হয়। এসব প্রকল্পে প্রায় ১৮ লাখ কোটি টাকা ব্যয়ের অনুমোদনও দেয়া হয়। এ অর্থের বড় একটি অংশ বরাদ্দ হয়েছে রাস্তাঘাটসহ অবকাঠামো উন্নয়ন খাতে। এছাড়া কৃষি, আর্থ-সামাজিক ও প্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে দেয়া হয়েছে রেকর্ড সংখ্যক প্রকল্প।
তিনি বলেন, আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে না দিয়ে ভেবেচিন্তে দিতে হবে। দেশের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে নৌকা মার্কায় ভোট দিলেই দেশের উন্নয়ন হবে। নতুন প্রজন্ম স্বাধীনতার পক্ষে সে রায় দিতে প্রস্তুত।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০১৮
টিসি