ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

৩০ বছর ডুবে থাকা স্লিপওয়েতে ৩৬ কোটি টাকা সাশ্রয়

আল রাহমান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৮
৩০ বছর ডুবে থাকা স্লিপওয়েতে ৩৬ কোটি টাকা সাশ্রয় চট্টগ্রাম বন্দরের ‘বে ক্লিনার-১’ মেরামত হচ্ছে ১ হাজার ২০০ টন ক্ষমতার স্লিপওয়েতে। ছবি: বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: ৩০ বছর ডুবে থাকা চট্টগ্রাম বন্দরের স্লিপওয়ে ১৬ কোটি টাকায় সংস্কার করে ২০১৪ সালের ২১ জুন উদ্বোধন করেন নৌমন্ত্রী শাজাহান খান। সেই থেকে এ পর্যন্ত বন্দরের ছোট ছোট ২৭টি জাহাজ মেরামত হয়েছে সেই স্লিপওয়েতে। এর ফলে বন্দরের সাশ্রয় হয়েছে ৩৬ কোটি টাকার বেশি।

নগরের বারিকবিল্ডিং মোড় এলাকায় বন্দরের নৌ প্রকৌশল কারখানায় ১ হাজার ২০০ টন, ৮০ টন ও ৫০ টনের তিনটি স্লিপওয়ে বর্তমানে চালু রয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ১২০০ টন ক্ষমতার স্লিপওয়েতে মেরামত করা হয়েছে পাইলট ভ্যাসেল (পিভি) দিশারি-৬, বিএলভি লুসাই, এমভি মশক, পিভি দিশারি-৭, পিভি রক্ষী, পিভি দিশারি-২, এমভি ফোয়ারা, এমভি ঝর্না।

বর্তমানে কাজ চলছে বে ক্লিনার-১ জাহাজের। এখানে তৈরি করা হয়েছে একটি নতুন বার্জও।

৮০ টন ক্ষমতার স্লিপওয়েতে কাজ হয়েছে পন্টুন বার্জ নম্বর ১১, ১৭, ১২ ও ২ এর। বর্তমানে কাজ চলছে ১৪ নম্বর বার্জের। ৫০ টন ক্ষমতার স্লিপওয়েতে এমএল রাঁধুনি-১ ও ২, জরিপ ১৫, অ্যাম্বুল্যান্স শিপ, সিকিউরিটি বোট ১, ২ ও ৩, নিউমুরিং লঞ্চ, এমএল সন্দ্বীপ, জরিপ-৮, আল বরকত, জরিপ ১৫ এর। বর্তমানে কাজ চলছে জরিপ-১০ এর।  

বন্দরের নৌ-প্রকৌশল বিভাগের দায়িত্বে থাকা ডেপুটি চিফ ইঞ্জিনিয়ার (মেরিন) মো. এমদাদুল হক বাংলানিউজকে এসব বিষয় নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, যুগোশ্লেভিয়ার কারিগরি সহায়তায় ১ হাজার ২০০ টনের স্লিপওয়েটি তৈরি হয়েছিল ১৯৮৪ থেকে ২০১৪ সালের মে পর্যন্ত এটি অকেজো ছিল। এ সময় অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী অন্য বিভাগে যেমন বদলি হয়ে গেছেন তেমনি অনেকে অবসরে চলে গেছেন। বর্তমানে ১১ জন কর্মকর্তা ও ১০৮ জন কর্মচারী আছেন এ বিভাগে। এর মধ্যে নতুন নিয়োগ পাওয়া ৬৩ জন খালাসি-লস্করও রয়েছে। যদিও ডক মাস্টারের পদটি শূন্য। তাই আমরা একটি জনবল কাঠামো (অর্গানোগ্রাম) প্রস্তাব করেছি।

৫০ টন ক্ষমতার স্লিপওয়েতে ‘জরিপ-১০’ জাহাজের মেরামতকাজ চলছে।  ছবি: বাংলানিউজঅপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের শক্তিশালী টাগ বোটগুলো মেরামত করার উপযোগী করে একটি আধুনিক স্লিপওয়ে নির্মাণের জন্য বুয়েটের মাধ্যমে সমীক্ষা করার প্রস্তাব দিয়েছি। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলে নতুন স্লিপওয়ে নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু হবে।

নৌ-প্রকৌশল বিভাগের একজন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, তিন বছর পর পর যেকোনো জাহাজ ডকে তুলতে হয়। কর্ণফুলীর পানিতে লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়ায় এটা জরুরি হয়ে পড়েছে। বন্দরে নিজস্ব ৪৫টি ভ্যাসেল ও ৩০টি পন্টুন রয়েছে। এগুলো রক্ষণাবেক্ষণ ও দেখভালই নৌ-প্রকৌশল বিভাগের কাজ। একটি জাহাজ যদি ৩ মাস করেও স্লিপওয়েতে থাকে তবে বছরে ১২টি জাহাজের মেরামত কাজ করা সম্ভব বর্তমানে। এ হিসেবে আরও দুইটি স্লিপওয়ে নির্মাণ করা দরকার।

তিনি বলেন, ভরা জোয়ারের সময় রেলের মতো ছোট ছোট চাকা যুক্ত স্লিপওয়ের (একটি বড় ট্রলি) নদীতে লাইনের ওপর নামিয়ে দেওয়া হয়। এরপর জাহাজটি পজিশন মতো বসানো হয়। তারপর ১ হাজার ২০০ টন ক্ষমতার উইনস মেশিন দিয়ে স্লিপওয়েটি টেনে কূলে এনে মেরামত কাজ ও রং করা হয়। ডক মাস্টার ছাড়া কাজটা করা কঠিন।    

বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৮
এআর/টিসি          

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।