ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবায় কমিউনিটি ক্লিনিক

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১৮
গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবায় কমিউনিটি ক্লিনিক কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাস্থ্যসেবা নিচ্ছে মানুষ

চট্টগ্রাম: বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সদর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে আমির হামজাপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিক। সেখানে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন সরকারি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মীরা।

কয়েক বছর আগেও এলাকার লোকজনকে চিকিৎসাসেবা নিতে উপজেলা সদর কিংবা জেলা সদরে আসতে হতো। কমিউনিটি ক্লিনিকের কল্যাণে এখন বাড়ির পাশেই চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন তারা।

দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে স্থাপন করা কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো এভাবেই সহজ করেছে চিকিৎসাসেবা। বদলে দিয়েছে গ্রামীণ চিকিৎসার চিত্র।

প্রথমদিকে সচেতনতার অভাবে কমিউনিটি ক্লিনিকে সেবাগ্রহীতাদের ভিড় না থাকলেও এখন বাড়ছে। ক্লিনিকের মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলের মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা।

সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত সারাদেশে ১৩ হাজার ১৩৬টি কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হয়। প্রতিটি ক্লিনিকে দিনে গড়ে ৩০-৩৫ জন মানুষ স্বাস্থ্যসেবা নিচ্ছেন। এসব ক্লিনিকে ৩০ প্রকার ওষুধ বিনামূল্যে বিতরণের পাশাপাশি স্বাস্থ্য, পরিবার-পরিকল্পনা ও পুষ্টি বিষয়ক পরামর্শ দেওয়া হয়।

চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্র জানায়, গত তিন বছরে চট্টগ্রামের ৫০৪টি কমিউনিটি ক্লিনিকে ৩১ লাখ লোককে বহির্বিভাগে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে মাত্র ২৯ হাজার রোগীকে বিভিন্ন হাসপাতালে রেফার করা হয়। সব মিলিয়ে ৯৮ শতাংশ মানুষ কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন।

কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে সময়মত প্রতিষেধক টিকাদান যেমন- যক্ষা, ডিপথেরিয়া, হুপিং কাশি, পোলিও, ধনুষ্টংকার, হাম, হেপাটাইটিস-বি, নিউমোনিয়াসহ শিশু ও বয়স্কদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হয়। পাশাপাশি মহিলা ও শিশুদের অপুষ্টি কমাতে সেবা দেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।

সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী বাংলানিউজকে বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকের প্রতি এখন গ্রামীণ মানুষের আস্থা বাড়ছে। অনেক কমিউনিটি ক্লিনিকে আমি গিয়ে দেখেছি, মানুষ এখান থেকে নিশ্চিন্তে সেবা নিচ্ছে।

তিনি জানান, ম্যালেরিয়া, যক্ষা, কুষ্ঠ, কালাজ্বর, ডায়রিয়াসহ অন্যান্য সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা এবং সেগুলোর সীমিত চিকিৎসা সুবিধা রয়েছে কমিউনিটি ক্লিনিকে। এছাড়া সাধারণ জখম, জ্বর, ব্যথা, কাটা, পোড়া, দংশন, বিষক্রিয়া, হাঁপানি, চর্মরোগ, কৃমি, চোখের রোগ, দাঁত ও কানের সাধারণ রোগের ক্ষেত্রে লক্ষণভিত্তিক প্রাথমিক চিকিৎসা এসব কমিউনিটি ক্লিনিকে দেয়া হয়।

‘অস্থায়ী পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি সংক্রান্ত বিভিন্ন উপকরণ, যেমন-কনডম, ইসিপি (ইমার্জেন্সি কন্ট্রাসেপটিভ পিল) ইত্যাদি সার্বক্ষণিক সরবরাহ ও বিতরণ নিশ্চিত করা হয়েছে এসব ক্লিনিকে’ জানান সিভিল সার্জন।

১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগ সরকার গঠন করার পর সারাদেশে সাড়ে ১৩ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া হয়। ২০০১ সাল পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার ৭২৩টি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করা হয়।

২০০১ সালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় এসে এ প্রকল্পের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। এরপর ২০০৯ সালে আওয়ামীলীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় এলে প্রকল্পটি আবারও চালু করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১৮
টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।