ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

কেটে ফেলার পরও জরায়ুতে ক্যান্সার!

জমির উদ্দিন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৫৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০১৮
কেটে ফেলার পরও জরায়ুতে ক্যান্সার! পরীক্ষার জন্য দেয়া প্রেসক্রিপশন ও রিপোর্ট

চট্টগ্রাম: অপারেশনের মাধ্যমে দিলরুবা খানম (ছদ্মনাম) জরায়ু কেটে ফেলা হয়েছে তাও তিনবছর হলো। তিন বছর পর শারীরিক কিছু সমস্যার কারণে মেডিসিন চিকিৎসকের শরাণাপন্ন হন ওই নারী। চিকিৎসক তাকে সার্ভিকোভ্যাগিনাল সাইটিলজি অর্থাৎ জরায়ুতে পুনরায় ক্যান্সার হয়েছে কিনা তা দেখার জন্য পরীক্ষা দেন।

পরীক্ষায় সেই নারীর আবারো জরায়ুতে ক্যান্সার হয়েছে বলে ধরা পড়ে! তিন বছর আগে যে জরায়ু অপারেশন করে ফেলে দেওয়া হয়েছে তাতে আবার ক্যান্সার ধরা পড়ার মতো এমন কাণ্ডটি ঘটিয়েছে চট্টগ্রাম নগরের সেভরন ডায়াগনস্টিক সেন্টার।

ভুক্তভোগী ওই নারীর ছেলে নাসির উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, ২০১৫ সালের দিকে অপারেশন জরায়ু কেটে ফেলা হয়।

তিন বছর পর শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে ৮ অক্টোবর (রোববার) একজন মেডিসিন চিকিৎসককে দেখানো হয়। তিনি পুনরায় জরায়ুতে ক্যান্সার হয়েছে কিনা পরীক্ষা করাতে বলেন ‘সেভরন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে’।
পরে পরীক্ষায় রিপোর্ট আসে তার জরায়ুতে ক্যান্সার হয়েছে।

বিশ্বাস করতে না পেরে নাসির তার মায়ের রিপোর্টটি নিয়ে দেখাতে যান তিন বছর আগে অপারেশন করা ডা. রওশন আরা বেগমের কাছে।
 
নাসির উদ্দিন বলেন, রওশন আরা দেখে-তো হতভম্ব। তিনি বলেন, ‘যার জরায়ু নেই তার জরায়ুতে ক্যান্সার হওয়া অসম্ভব’। পরে ডাক্তার আপা বিষযটি সেভরনে জানাতে বললে, তারা রিপোর্টটি ভুল হয়েছে বলেন। অর্থাৎ আমার মায়ের জরায়ুতে কোনো ক্যান্সার হয়নি। পরে রিপোর্টটি সংশোধন করে দেন।  

তিনি ক্ষোভ নিয়ে বলেন, ‘ভাগ্য ভালো ডাক্তার আপা ভুল ধরতে পেরেছিলেন। নয়-তো বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যেতো আমাদের।

এ বিষয়ে জানতে সেভরন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম মর্তুজার মোবাইল ফোনে বারবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে তার মোবাইল ফোনে খুদেবার্তা দিয়ে এ বিষয়ে জানতে চাইলেও তিনি কোনো উত্তর দেননি।

এদিকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো আরও দায়িত্ববান হওয়া উচিত। একের পর এক ভুল রিপোর্ট দিয়ে দেশের চিকিৎসা সেবাকে মানুষের কাছে অবিশ্বাসযোগ্য করে তুলছে তারা। এ জন্য তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন আজিজুল রহমান সিদ্দিকী বাংলানিউজকে, এ ধরনের ঘটনা কোনোভাবেই কাম্য নয়। ভুক্তভোগী অভিযোগ দিলে সেভরনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০১৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০১৮
জেইউ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।