‘বিশেষ ক্ষেত্রে’ অনেকে পাসপোর্ট হাতে পেলেও বেশির ভাগ গ্রাহক নির্ধারিত সময়ে পাসপোর্ট হাতে না পাওয়ায় হতাশা ও ক্ষোভ রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রিন্টার মেশিনে ত্রুটি থাকায় এবং ভেরিফিকেশন রিপোর্ট না পাওয়ায় নির্ধারিত সময়ে গ্রাহকরা পাসপোর্ট পেতে বিলম্ব হয়ে থাকে।
জানা যায়, সাধারণ ক্যাটাগরিতে ৩ হাজার ৪৫০ টাকা জমা দিয়ে নির্ধারিত ২১ কর্মদিবসের মধ্যে গ্রাহকদের পাসপোর্ট ডেলিভারি দেওয়ার বিধান থাকলেও সেটি দেড় থেকে দুই মাস এবং জরুরি ক্যাটাগরিতে ৬ হাজার ৯০০ টাকা জমা দিয়ে নির্ধারিত ৭ কর্মদিবসের মধ্যে ১০ থেকে ১৫ দিনে গ্রাহকরা পাসপোর্ট ডেলিভারি পেয়ে থাকে।
সাইফুদ্দিন নামে এক গ্রাহক বাংলানিউজকে বলেন, নিয়মানুযায়ী ব্যাংকে ৩ হাজার ৪৫০ টাকা জমা দিয়ে পাসপোর্ট অফিসে আমার ছেলের জন্য পাসপোর্টের আবেদন করি।
আক্ষেপ করে তিনি আরও বলেন, পুলিশ ভেরিফিকেশনের পরেও আমার ছেলের পাসপোর্ট নির্ধারিত সময়ে পাইনি। পরে বিভিন্নভাবে যোগাযোগ করে প্রায় দেড় মাস পর পাসপোর্ট হাতে পাই।
শুধু সাইফুল নয় এরূপ আরও অনেকে নির্ধারিত সময়ে পাসপোর্ট না পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
প্রিন্টারের সমস্যার কারণে গ্রাহকদের পাসপোর্ট ডেলিভারি দিতে একটু সমস্যা হয়েছিলো জানিয়ে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস পাঁচলাইশের উপ-পরিচালক মো. আল আমিন মৃধা বাংলানিউজকে বলেন, ‘কিছু পাসপোর্ট নির্ধারিত সময়ে আমরা গ্রাহকদের হাতে তুলে দিতে পারিনি। প্রিন্টারের সমস্যার কারণে পাসপোর্ট ডেলিভারির জট লেগে গিয়েছিলো। সেটি ধীরে ধীরে কেটে উঠছে। ’
তিনি আরও বলেন, ‘ভেরিফিকেশন রিপোর্টের সমন্বয়ের ভিত্তিতে বর্তমানে জরুরি ক্যাটাগরিতে ১০ দিনের মধ্যে এবং সাধারণ ক্যাটাগরিতে এক মাসের মধ্যে গ্রাহকদের পাসপোর্ট ভেলিভারি দেওয়া হচ্ছে। তবে বিশেষ প্রয়োজনে গ্রাহকদের নির্ধারিত সময়ে পাসপোর্ট দেওয়া হচ্ছে। ’
জানা যায়, চলতি বছরের ০১ জুলাই থেকে সোমবার (০৭ অক্টোরর) পর্যন্ত মাসের পাঁচলাইশ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে ২৯ হাজার ৫৪৪টি আবেদন জমা পড়ে। এরমধ্যে সাধারণ ক্যাটাগরিতে জমা পড়েছে ২৩ হাজার ৬৬৩টি, জরুরি ভিত্তিতে ৫ হাজার ৮০৯টি এবং অফিসিয়াল ৭২টি। এসব আবেদনের মধ্যে ২৬ হাজার ৭৫৪টি পাসপোর্ট বিভিন্ন সময়ে গ্রাহকদের ডেলিভারি দেওয়া হয়। মোট আবেদনের মধ্যে রি-ইস্যুর আবেদনও রয়েছে।
অন্যদিকে, এসব পাসপোর্টের আবেদনের প্রেক্ষিতে জেলা পুলিশের বিশেষ শাখায় (ডিএসবি) পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্টের জন্য ১০ হাজার ৫৪৭টি এবং নগর পুলিশের বিশেষ শাখায় (এসবি) ৩ হাজার ৯৪০টি আবেদন পাঠানো হয়। এরমধ্যে ডিএসবি থেকে ৯ হাজার ২৮০টি এবং এসবি থেকে ৩ হাজার ৩৫২টি আবেদনের পজেটিভ রিপোর্ট পাসপোর্ট অফিসে পাঠানো হয়।
এই পাঁচলাইশ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস থেকে নগরের পাঁচলাইশ, চান্দগাঁও, কোতোয়ালী, চকবাজার, বাকলিয়া, কর্ণফুলী থানা এবং দক্ষিণ জেলার বোয়ালখালী, আনোয়ারা, পটিয়া, চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, বাঁশখালী ও লোহাগাড়া উপজেলার বাসিন্দারা সেবা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। নগরসহ চট্টগ্রামের অন্য থানা ও উপজেলার গ্রাহকরা মনসুরাবাদ পাস অফিস থেকে সেবা নিয়ে থাকেন।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে উপ-পরিচালক মো. আল আমিন মৃধা বলেন, ‘গ্রাহকরা নির্দিষ্ট নিয়ম অনুসারে আবেদন করলেই আবেদনকারীর যাবতীয় তথ্য সেন্টাল সার্ভারে আপ করে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে ক্যাটাগরির ভিত্তিতে আবেদনকারীর ভেরিফিকেশনের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ’
পাসপোর্ট ডেলিভারি পেতে পাসপোর্ট অফিসের কোন গাফিলতি নেই বলেও জানান এ কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৮, ২০১৮
এসবি/টিসি