ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

‘জাল কাগজ’ তৈরি করে ব্যবসা আত্মসাতের চেষ্টা!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৮
‘জাল কাগজ’ তৈরি করে ব্যবসা আত্মসাতের চেষ্টা!

চট্টগ্রাম: ‘জাল কাগজ’ তৈরি করে পৈতৃক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও সম্পত্তি আত্মসাতের চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে মশি উল আলম স্বপন নামে এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে।

এ অভিযোগে মশি উল আলম স্বপনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম আদালতে একটি মামলাও (সিআর ১০১/২০১৮) দায়ের করেছেন তার ছোট ভাই মনছুর উল আলম ভূঁইয়া।

আদালত মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সদরঘাট থানা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বাদীর আইনজীবী ডিএম সাজ্জাদ ফয়সাল।

মশি উল আলম স্বপন লক্ষ্মীপুর জেলার সদর থানার বণিকপুর এলাকার মো. খুরশিদ আলম ভূঁইয়ার ছেলে।

ডিএম সাজ্জাদ ফয়সাল বাংলানিউজকে বলেন, জাল কাগজ তৈরি করে মশি উল আলম স্বপন অন্য ভাই ও বোনদের বঞ্চিত করে পৈতৃক সম্পত্তি আত্মসাৎ করার চেষ্টা করছেন।

অন্য ভাই-বোনদের পক্ষে মনছুর উল আলম ভূঁইয়া আদালতে মামলা করেছেন। আদালতের নির্দেশে সদরঘাট থানা পুলিশ এ ঘটনা তদন্ত করছে।

জানা যায়, মো. খুরশিদ আলম ভূঁইয়া সদরঘাট থানার স্ট্যান্ড রোডে অবস্থিত চট্টগ্রাম বন্দরের শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটর মেসার্স কেএম এজেন্সির মালিক। ২০০৭ সালের ২৩ জুন মো. খুরশিদ আলম ভূঁইয়া মারা যান। মো. খুরশিদ আলম ভূঁইয়ার সাত সন্তান রয়েছেন-মতি উল আলম ভূঁইয়া, মাহবুব উল আলম ভূঁইয়া, মসি উল আলম ভূঁইয়া, মেজবাহ উল আলম ভূঁইয়া, মনছুর উল আলম ভূঁইয়া, খুরশীদা আফরোজ ও মুর্শিদা আফরোজ। এদের মধ্যে মুর্শিদা আফরোজ মারা গেছেন।

মশি উল আলম স্বপনের ভাই মেজবাহ উল আলম ভূঁইয়া বাংলানিউজকে বলেন, বাবা (মো. খুরশিদ আলম ভূঁইয়া) জীবিত থাকতে তার সঙ্গে ব্যবসা পরিচালনায় সহযোগিতা করতেন মশি উল আলম স্বপন। সেই সুবাদে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সবকিছু দেখভাল করতেন তিনি। পরে বাবা মারা যাওয়ার পর আমরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের হিসাব চাইলে গড়িমসি করেন। পরে জানতে পারি তিনি বাবার ব্যবসায়িক লাইসেন্স ও মালিকানা হস্তান্তরের একটি জাল কাগজ তৈরি করে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে নিজের নামে লাইসেন্স করে নিয়েছেন।

তিনি বলেন, ২০০৭ সালের ২৩ জুন বাবা মারা যান। পরে আমরা সবাই ব্যবসায়িক হিসাব চাওয়ায় পেছনের তারিখে আনরেজিস্ট্রার্ড একটি ব্যবসায়িক লাইসেন্স ও মালিকানা হস্তান্তরনামা করেন। সেটি যে জাল তা প্রমাণ হয়ে গেছে। এ কাগজে যাদের সাক্ষী করা হয়েছে তারাও জানতেন না। পরে সাক্ষীরা হলফমানামূলে তা আমাদের জানিয়েছেন।

এদিকে বন্দরের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ম্যানেজ করে কেএম এজেন্সির লাইসেন্স ও মালিকানা নিজ নামে করে ফেলেছেন বলে অভিযোগ করেছেন মেজবাহ উল আলম ভূঁইয়া।

তিনি বলেন, ২০১৭ সালের ১৯ অক্টোবর কেএম এজেন্সির লাইসেন্স ও মালিকানার বৈধ অধিকার নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ দিলেও ২০১৮ সালের ৯ মে মশি উল আলম স্বপনকে কেএম এজেন্সির বৈধ মালিক হিসেবে একটি নোটিশ দেন চট্টগ্রাম বন্দরের ট্রাফিক অফিসার (প্রশাসন)।

জানতে চাইলে এসব অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি করেছেন মশি উল আলম স্বপন।

তিনি বলেন, এটা আমাদের পারিবারিক বিষয়। এটা নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। অন্যরা হিংসা থেকে অভিযোগ করতেই পারে। আমার কাছে সব ডকুমেন্ট আছে। বাবা বেঁচে থাকতে কেএম এজেন্সির লাইসেন্স ও মালিকানা আমার নামে হস্তান্তরনামা করে গেছেন।

তিনি বলেন, বাবার বিভিন্ন ঋণ ছিল সেগুলো আমি শোধ করেছি। তার বিনিময়ে তিনি প্রতিষ্ঠানের মালিকানা আমাকে দিয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৮
এসকে/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।