শনিবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির উদ্যোগে নাসিমন ভবনের দলীয় কার্যালয় মাঠে সাবেক হুইপ ও নগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সৈয়দ ওয়াহিদুল আলমের শোকসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ভাষা আন্দোলন ও স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে যেখানে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল সেখানে স্বৈরাচার সরকার পরাজিত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আজকের বাংলাদেশকে নিরাপদ বলা যায় না। আওয়ামী লীগ প্রস্তুতি নিচ্ছে সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন করার, গায়েবি মামলা দিয়ে নেতাকর্মীদের হয়রানি করার। ইভিএম মেশিন দিয়ে ভোট কারচুপির নির্বাচন করার। বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে নির্বাচন করার। কিন্তু আমাদের প্রস্তুতি হচ্ছে দেশের জনগণ। বেগম জিয়াকে জেলে রেখে আসন্ন যে নির্বাচনের প্রক্রিয়া চলছে তা হবে না। বেগম জিয়াকে মুক্ত করেই এদেশে নির্বাচন হবে।
তিনি বলেন, সৈয়দ ওয়াহিদুল আলম খুব সাধারণ জীবনযাপন করতেন। রাজনীতিবিদদের কাছে মানুষ যে ধরনের জীবনযাপন আশা করে ওয়াহিদুল আলম ছিলেন তার থেকে ব্যতিক্রম। তিনি মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছিলেন।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, ১৯৭৮ সালে শহীদ জিয়া যখন জাতীয়তাবাদী যুবদল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তখন থেকেই কেন্দ্রীয় কমিটিতে আমি ও ওয়াহিদুল আলম একসঙ্গে কাজ করেছিলাম। তিনি দলের জন্য ৪০ বছর ধরে বিশ্বস্ততার সঙ্গে কাজ করেছেন। ওয়াহিদুল আলম ছিলেন বাস্তবিক অর্থেই গণমানুষের নেতা, মাটি ও মানুষের নেতা।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বেগম রোজী কবীর বলেন, সৈয়দ ওয়াহিদুল আলম শুধু জনপ্রিয় নেতাই ছিলেন না, তিনি ছিলেন কর্মিবান্ধব নেতা। দল ও দলের নেতাকর্মীদের দুঃসময়ে তিনি সবসময় পাশে থাকতেন। এ গুণী ব্যক্তি আমাদের মধ্যে তার কর্মের গুণে বেঁচে থাকবেন। দল ও দেশের বিভিন্ন সংকটকালে তার সাহসী ভূমিকা বিএনপি নেতাকর্মীরা আজীবন স্মরণ রাখবে।
চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খন্দকার বলেন, সৈয়দ ওয়াহিদুল আলম ছিলেন সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি। তার কর্মের প্রতি ছিলেন দায়িত্বশীল। তার কর্মগুণে তিনি চট্টগ্রামবাসীর হৃদয়ে বহুদিন বেঁচে থাকবেন।
চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এসএম ফজলুল হক ফজু বলেন, সৈয়দ ওয়াহিদুল আলম ছিলেন অনুকরণীয় ব্যক্তিত্বের অধিকারী। দলের প্রতি তার আনুগত্য ও রাজনৈতিক দৃঢ়তা ছিল অপরিসীম।
সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, সরকার আরেকটি ৫ জানুয়ারি মার্কা নির্বাচন করার জন্য নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা দিয়ে বিকাশ এমপিরা আজকে যাত্রা পার্টিতে পরিণত হয়েছে। এখন দেশের যে অবস্থা চলছে, মনে হচ্ছে কবরস্থানও পাহারা দিতে হবে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবের রহমান শামীম বলেন, সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করেছে শুধু নিজেদের রক্ষা করার জন্য। ক্ষমতার অপব্যবহার করে সরকার যে অপশাসন, অন্যায়-দুর্নীতি করেছে তার বিরুদ্ধে যাতে কেউ কথা বলতে না পারে। শুধু তাই নয় এ আইনে কোনো সরকারি কর্মকর্তার গোপন তথ্য বা দুর্নীতির খবর প্রকাশ করলে ১৪ বছরের কারাদণ্ড ও ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করার বিধান রাখা হয়েছে।
দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি জাফরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সৈয়দ ওয়াহিদুল আলম নির্লোভ ও নিরহংকারী ব্যক্তি ছিলেন। হাটহাজারীর এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম নেওয়া সৈয়দ ওয়াহিদুল আলম তার চিন্তা চেতনা দিয়ে চট্টগ্রামের উন্নয়নে আজীবন কাজ করে গেছেন।
নগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক এসএম সাইফুল আলম ও ইয়াছিন চৌধুরী লিটনের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গাজী শাহজাহান জুয়েল, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য সামশুল আলম, সাথী উদয় কুসুম বড়ুয়া, নগর বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আবু সুফিয়ান, চাকসু ভিপি নাজিম উদ্দিন, সৈয়দ ওয়াহিদুল আলমের কন্যা ব্যারিস্টার শাকিলা ফারজানা, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বুলবুল, উত্তর জেলা বিএনপির এমএ হালিম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম মামুন মিয়া প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৮
জেইউ/টিসি