ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

১৬০ বছর বাঁচতে চেয়েছিলেন রমা চৌধুরী

আল রাহমান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩, ২০১৮
১৬০ বছর বাঁচতে চেয়েছিলেন রমা চৌধুরী রমা চৌধুরীকে ২৪ বছর সেবা করেন প্রকাশক আলাউদ্দিন খোকন। ছবি: সোহেল সরওয়ার

চট্টগ্রাম: ১৬০ বছর বাঁচার আশা করেছিলেন ‘একাত্তরের জননী’ খ্যাত রমা চৌধুরী।

সোমবার (৩ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের আইসিইউর সামনে বাংলানিউজকে এ তথ্য জানান রমা চৌধুরীর বইয়ের প্রকাশক ও ২৪ বছরের সহচর আলাউদ্দিন খোকন। কথা বলার সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন এ তরুণ।

 

আরও খবর>>
** 
‘একাত্তরের জননী’ রমা চৌধুরী আর নেই

তিনি বলেন, আমি প্রকাশক হিসেবে দিদির (রমা চৌধুরীর) পাশে সবসময় ছিলাম। দুই যুগের বেশি সময় দিদির পাশে থেকে সহযোগিতা করেছি, সেবা করেছি।

যতটুকু পেরেছি করেছি। আমি জানি সবটুকু করতে পারিনি। আরেকটু বেশি করতে পারতাম। আরেকটু বেশি করতে পারলে হয়তো তাকে অনেক দিন বাঁচিয়ে রাখতে পারতাম। তার আশা ছিল ১৬০ বছর বাঁচবেন।

তিনি অনেকবার অসুস্থ হয়েছেন, প্রতিবার আশা ছিল ফিরে আসবেন। এবারও আশা করেছিলাম, ফিরে আসবেন। কারণ তার জীবনীশক্তি অনেক বেশি ছিল। বার্ধক্যজনিত অনেক রোগ একসঙ্গে আক্রমণ করায় তিনি আর আমাদের সঙ্গে থাকতে পারলেন না।

সোমবার (৩ সেপ্টেম্বর) ভোর চারটায় চমেক হাসপাতালের আইসিইউতে ৭৯ বছর বয়সে না ফেরার দেশে চলে যান রমা চৌধুরী।  

রমা চৌধুরীর ইচ্ছে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দিদি চেয়েছিলেন পুরো দেশ ঘুরে ঘুরে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস লিখবেন। ‘একাত্তরের জননী’ বইয়ের বাকি নয় খণ্ডের কাজ শেষ করবেন। দিদির ইচ্ছে ছিল তার মতো নির্যাতিত নারী ও সন্তানহারা মা’দের কথা তুলে ধরবেন সেই খণ্ডগুলোতে।  

আক্ষেপ করে আলাউদ্দিন খোকন বলেন, শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষাজুড়ে খালি পায়ে হেঁটে বই বিক্রি করে চলতেন। দিদি (রমা চৌধুরী) প্রাপ্য সম্মানটুকু পায়নি। তার একটি ছেলে বেঁচে আছে। তাকে সহযোগিতা করবে সরকার এ আশা রাখি।  যে সম্মানটুকু দিদিকে দেওয়া হয়নি তা দেওয়া উচিত।

আলাউদ্দিন খোকন বলেন, রমা চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে তিনবার যেতে চাননি। পরে যখন দেখা করেছিলেন তখন প্রধানমন্ত্রীকে বার বার বলেছেন, ‘আমি কিছু চাই না। ’

কিন্তু তার অনেক প্রয়োজন ছিল। গত এক বছর সরকার দিদির চিকিৎসাসেবা দিয়েছে।  যোগ করেন আলাউদ্দিন খোকন।

একপর্যায়ে রমা চৌধুরীর বইয়ের এ প্রকাশক বলেন, অসুস্থ অবস্থায় দিদি চিকিৎসার সুবিধার জন্য একটি বাসা চেয়েছিলেন। উনি কারও কাছ থেকে সহযোগিতা নেননি। বইয়ের মাধ্যমে সহযোগিতা চেয়েছিলেন। উনার অনেক বই ছিল। সরকার ও বিত্তশালীরা তার বই কেনার মধ্য দিয়ে সহযোগিতা করুক সেটি চেয়েছিলেন।   

বাংলাদেশ সময়: ২১৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৩, ২০১৮
এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।