একটা সময় যে মাঠে ছিল মশার প্রজনন ক্ষেত্র। নালার কালাপানিতে চাষাবাদ হতো সবজির।
সাড়ে ৮ একর জমির ওপর ৮ ফুট উঁচু দৃষ্টিনন্দন ফেন্সিংয়ের ভেতর ৮ হাজার রানিং ফুটের ওয়াকওয়ে। সাড়ে ৩ ফুট গভীর ৫০ হাজার বর্গফুটের কৃত্রিম লেক বা ওয়াটার বডি। মাঠজুড়ে সাড়ে পাঁচশ’ এলইডি লাইট। পাঁচ শতাধিক দেশি-বিদেশি উদ্ভিদরাজির মাঝে ২টি বড় ফোয়ারা। উত্তর পাশে ২টি, দক্ষিণ পাশে ২টি, পূর্ব পাশে দশতলা ভবনের ফটকের সামনে একটি, পশ্চিম পাশে আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালের সামনে একটি বড় আকারের ফটক রাখা হয়েছে। উত্তর-পূর্ব কোণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে পার্কের অতিথিদের জন্য রাখা হয়েছে আধুনিক শৌচাগার। মাঝ বরাবর আছে দুইটি মাল্টি পারপাস ছাউনি। যেখানে একটি ফোয়ারাগুলোর কনট্রোল রুম ও অপরটি পাম্প হাউস হিসেবে ব্যবহৃত হবে। দক্ষিণ-পূর্ব কোণে একটি বিদ্যুতের সাব স্টেশন। মাঠের প্রান্তে অতিথিদের বিশ্রামের জন্য রাখা হয়েছে কিছু স্থায়ী বেঞ্চ ও তিনটি দুই ধাপের গ্যালারি।
পার্কে বেড়াতে আসা সিজিএস কলোনির বাসিন্দা আবদুল হাকিম বাংলানিউজকে বলেন, বহুতলা কলোনি, সিডিএ আবাসিক এলাকা, ব্যাংক কলোনি, টিঅ্যান্ডটি কলোনি, পোস্ট অফিস কলোনিসহ ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা হওয়ায় জাম্বুরি পার্কটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। নানা বয়সী মানুষ এখানে বেড়াতে আসছেন। শরীর চর্চা করছেন। সব মিলে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে পার্কটি।
কৌতূহলী মানুষের চাপ সামলাতে পার্কটির মূল ফটক খুলে দেওয়া হচ্ছে বিকেল চারটায়। শুক্রবারসহ ছুটির দিনগুলোতে হচ্ছে উপচেপড়া ভিড়। এ সময় চারাগাছ, বাতি, সরঞ্জাম রক্ষায় হিমশিম খেতে হয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পাঁচ নিরাপত্তাকর্মীসহ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নাহিয়ান এন্টারপ্রাইজ-ইএসবি জেভি’র কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।
গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আহমেদ আবদুল্লাহ নূর বাংলানিউজকে বলেন, স্থাপত্য অধিদফতরের নকশায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হয়েছে জাম্বুরি পার্কের। এখন চলছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও রেকটিফিকেশনের কাজ। উদ্বোধনের আগেই এলাকাবাসীর আগ্রহের প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে পার্কটি। আশাকরি আগামী ৮ সেপ্টেম্বর গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন জাম্বুরি পার্কের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন।
তিনি বলেন, সোনালু, নাগেশ্বর, চাঁপা, রাধাচূড়া, বকুল, শিউলি, সাইকাস, টগর, জারুলসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে পার্কে। নিরাপত্তার জন্য ১৪টি ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা বসানো হয়েছে। মন্ত্রী মহোদয়ের নির্দেশনা হচ্ছে, পার্কটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে এবং পার্কের ভেতর কোনো ধরনের বাণিজ্যিক দোকানপাট থাকবে না।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, জলাবদ্ধতার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে সড়ক থেকে তিন-সাড়ে তিন ফুট উঁচু করা হয়েছে পার্কটি।
বাংলাদেশ সময়: ২১২২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০১৮
এআর/টিসি