মঙ্গলবার (২৮ আগস্ট) জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৩তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভা ও মেজবানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তৃণমূলের দাবির প্রেক্ষিতে তিনি এসব কথা বলেন।
লোহাগাড়া উপজেলা সদরে আয়োজিত সমাবেশে আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘এমপি মন্ত্রী নেতা আমার কাছে বড় পরিচয় নয়।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রিয় এ নেতা বলেন, ‘আমার দুর্ভাগ্য জীবদ্দশায় আমি বঙ্গবন্ধুকে দেখার সুযোগ হয়নি। পৃথিবীর দেশে দেশে বিভিন্ন রাষ্ট্র নায়কদের হত্যা করা হয়েছিল। কিন্তু ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড ক্ষমতার জন্য ছিল না। এই হত্যাকাণ্ড ছিল পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে, একটি সদ্য স্বাধীন দেশের মানচিত্রকে মুছে দিতে, মুজিবাদর্শকে মুছে ফেলার, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে মুছে ফেলার। শুধু এটা নয়, হত্যাকারীরা মুজিবাদর্শকে মুছে ফেলতে ১৯৭৫ সালের ৩রা নভেম্বর বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট চার সহকর্মী জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করেছে অন্ধকার কারাগারে। ’
তিনি আরও বলেন, ‘ওই সময় খুনি জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর জন্য মিলাদ পড়াতে পর্যন্ত দেয়নি আমাদের। উল্টো ১৫ আগস্টকে নাযাত দিবস পালনের নামে নঘ্ন উল্লাস করেছিল। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর যখন মুজিবের নাম নিলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর নির্মম নির্যাতন নিপীড়ন শুরু হয়েছিল তখনই লাখো নেতাকর্মী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরে আনেন। ওই সময় কথা দিয়েছিলাম, আমরা জাতির পিতা হত্যার বিচার করবই। আমরা কথা রেখেছি, পিতা হত্যার বিচার আংশিক পেয়েছি। খুনি জিয়া, মোস্তাক, খালেদার এতো নির্যাতন দমন নীপিড়নের পরও আওয়ামী লীগকে নিছিন্ন করা যায়নি। কেননা আওয়ামী লীগ নেতা, এমপি কিংবা মন্ত্রীর দল নয়। এটা বঙ্গবন্ধুর খুনের পরপরই প্রমাণিত হয়েছে। এরপরও আজ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শির উচু করে দাঁড়িয়ে আছে শুধু মাত্র কর্মীদের ভালোবাসা ও ত্যাগের ওপর ভিত্তি করে। ’
সভায় প্রধান বক্তা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, ‘লোহাগাড়ার নেতাকর্মীরা দল ক্ষমতায় থাকার পরও কঠিন সময় পার করছেন। আপনাদের মনের ভাষা আমরা বুঝি। লোহাগাড়ার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এখন ডাবল জামায়াত ফেস করছেন। এখানে তৃণমূলের প্রার্থীকে নৌকার প্রতীক দিতে ইতোমধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলের হাইকমান্ডকে বার্তা দেওয়া হয়েছে। হাউব্রিড-জামাতি ঘরনার কাউকে আর আমরা এমপি হতে দিতে পারিনা। ’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক এমপি দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী চেমন আরা তৈয়ব বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর রক্তের ঋণ শোধ করতে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। এই সাতকানিয়া-লোহাগাড়ায় যিনি গত দুই দশক ধরে শেখ হাসিনার বার্তা নিয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ফেরি করে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে যাচ্ছেন সেই আমিনুল ইসলাম আমিনকে নৌকার প্রার্থী হিসেবে তৃণমূলের মত আমি দেখতে চাই। আশা করি নেত্রী তৃণমূলের লাখো নেতাকর্মীর মনের ভাষা বুঝে আগামীতে আমিনকে নৌকা প্রতীক দিয়ে আপনাদের কাছে পাঠাবেন। ’
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খোরশেদ আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন হিরুর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক নুরুল আবছার, উপ দপ্তর সম্পাদক বিজয় বড়ুয়া, সাতকানিয়া পৌরসভার মেয়র ও দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোহাম্মদ জোবায়ের, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জানে আলম প্রমুখ।
সভায় উপজেলার নয় ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২২৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০১৮
এসবি/টিসি