ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

পুরনো অবকাঠামো রেখে ব্রিজ ঢালাইয়ের প্রস্তুতি!

সুবল বড়ুয়া, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১২ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০১৮
পুরনো অবকাঠামো রেখে ব্রিজ ঢালাইয়ের প্রস্তুতি! চকবাজারের ধুনির পুলে পুরনো রিটেইনিং ওয়ালসহ অবকাঠামো অপসারণ না করেই নতুন ব্রিজ ঢালাইয়ের প্রস্তুতি। ছবি: সোহেল সরওয়ার

চট্টগ্রাম: নগরের চকবাজারের ধুনির পুলে পুরনো রিটেইনিং ওয়ালসহ অবকাঠামো অপসারণ না করেই নতুন ব্রিজ ঢালাইয়ের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, পুরনো সেতুটির অবকাঠামো অপসারণ করা না হলে খালের পানি প্রবাহে বাধা সৃষ্টি হবে। এতে চকবাজার, বাকলিয়া এলাকায় জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

জানা যায়, জলাবদ্ধতা নিরসনে নগরের চকবাজারের চাকতাই খালের ওপর ১৪ দশমিক ২ মিটার লম্বা ধুনির পুল নির্মাণের উদ্যোগ নেয় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। এডিপি’র ৩ কোটি ৬৭ লাখ ২০ হাজার টাকা ব্যয়ে বড় পরিসরে এ ধুনির পুল নির্মিত হচ্ছে।

প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ শুরু হয় গত ১ মার্চ। ২০১৯ সালের ১ মার্চ প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ শেষ হবে।
চকবাজারের ধুনির পুলে পুরানো রিটেইনিং ওয়ালসহ অবকাঠামো অপসারণ না করেই নতুন ব্রিজ ঢালাইয়ের প্রস্তুতি।   ছবি: সোহেল সরওয়ারক্ষোভ প্রকাশ করে খায়রুল ইসলাম নামে চকবাজারের এক স্থানীয় বাংলানিউজকে বলেন, বর্ষার আগে ধুনির পুলের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। নতুন ব্রিজ নির্মিত হওয়ায় আমরা সকলেই খুশি হয়েছি। কিন্তু ব্রিজ নির্মাণে মানসম্পন্ন কাজ হচ্ছে না। খালের ওপর পুরনো ব্রিজের রিটেইনিং ওয়ালসহ নানা অবকাঠামো রেখেই নতুন ব্রিজ ঢালাইয়ের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। পুরনো এসব অবকাঠামো থেকে গেলে খালে পানি প্রবাহের বাধা সৃষ্টি হবে। চকবাজার, কেবি আমান আলী রোড, বাকলিয়া, সৈয়দশাহ রোড, বড় কবরস্থানসহ পাশ্ববর্তী পুরো এলাকার পানি চলাচলে বাধা সৃষ্টি হবে। ব্রিজ ঢালাই হয়ে গেলে পরবর্তীতে এসব পুরনো অবকাঠামো কি আর সরানো যাবে?

বিষয়টি স্থানীয় কাউন্সিলরকে জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

বড় পরিসরে ধুনির পুল নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়ায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে সোহেল নামে আরেক ব্যক্তি বাংলানিউজকে বলেন, নতুন করে ব্রিজটি নির্মিত হলে আমাদের চকবাজার, বাকলিয়া এলাকার দীর্ঘদিনের দুঃখ জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাবো। কিন্তু ব্রিজটি মানসম্পন্নভাবে নির্মাণ করা না হলে আমাদের দুর্ভোগ আরও বাড়বে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের তদারকি বাড়ানোর আহ্বানও জানান তিনি।

বুধবার (১৮ জুলাই) সকালে নগরের  চকবাজার এলাকায় নির্মাণাধীন ধুনির পুলে গিয়ে দেখা যায়, ব্রিজ নির্মাণের জন্য কেবি আমান আলী রোডে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। যদিও পথচারীদের রাস্তা পারাপারের জন্য ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। খালের দু’পাশে রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ করা হয়েছে। ব্রিজ ঢালাইয়ের প্রস্তুতি হিসেবে খালের ওপর লোহা দিয়ে ব্রেসিং করা হয়েছে।

চকবাজারের ধুনির পুলে পুরানো রিটেইনিং ওয়ালসহ অবকাঠামো অপসারণ না করেই নতুন ব্রিজ ঢালাইয়ের প্রস্তুতি।  ছবি: সোহেল সরওয়ারস্থানীয়দের অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে চসিকের ১৬ নম্বর চকবাজার ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইয়েদ গোলাম হায়দার মিন্টু বাংলানিউজকে বলেন, ‘স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, ধুনির পুলে পুরনো অবকাঠামো রেখে ব্রিজের ঢালাই দেওয়া হলে খালে পানি প্রবাহে সমস্যা সৃষ্টি হবে। সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল বিভাগকে বিষয়টি আমি জানিয়েছি। তারা বলছেন, ব্রিজের ঢালাইয়ের পর পুরনো অবকাঠামোগুলো সরিয়ে নেওয়া হবে। ’   

চসিকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, যেহেতু বর্ষাকাল চলছে। সেহেতু এখন খাল বন্ধ রেখে পুরনো অবকাঠামোগুলো অপসারণ করা তো সম্ভব নয়। তাই এসব রেখে দেওয়া হয়েছে। বর্ষার পর তা সরিয়ে ফেলা হবে। সপ্তাহখানেকের মধ্যেই ধুনির পুলের ঢালাই কাজ শেষ করা হবে। এতে পানি প্রবাহের তেমন কোন সমস্যা হবে না বলেও জানান এ প্রকৌশলী।  

ছাদ ঢালাই শেষে পুরনো অবকাঠামো সরিয়ে নেওয়া হবে জানিয়ে চসিকের প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল মহিউদ্দিন আহমদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘ধুনির পুল নির্মিত হলে চকবাজার, বাকলিয়া এলাকার লোকজন সুবিধা ভোগ করবে। ব্রিজের ঢালাই কাজ শেষ হওয়ার পর পর্যায়ক্রমে ব্রিজের পুরনো অবকাঠামোগুলো সরিয়ে নেওয়া হবে। ব্রিজ নির্মাণের জন্য স্থানীয় ও পথচারীদের সাময়িক কষ্ট পেতে হচ্ছে। ’    

এর আগে ৩ মে চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন এ ধুনির পুলের নির্মাণকাজ পরিদর্শনে যান। এসময় জনভোগান্তি কমাতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পুল, অ্যাপ্রোচ ও ড্রেন নির্মাণের কাজ শেষ করার নির্দেশনা দেন সিটি মেয়র।

বাংলাদেশ সময়: ২১১০ ঘণ্টা,  জুলাই ১৮, ২০১৮
এসবি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।