ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চট্টগ্রাম সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক স্থাপনে চুক্তি সই

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১৩ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০১৮
চট্টগ্রাম সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক স্থাপনে চুক্তি সই ‘চট্টগ্রাম সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক’ নির্মাণে চসিকের সঙ্গে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের এমওইউ সই। ছবি: উজ্জ্বল ধর

চট্টগ্রাম: নগরের আগ্রাবাদে সিঙ্গাপুর-ব্যাংকক মার্কেটে ‘চট্টগ্রাম সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক’ স্থাপনে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সঙ্গে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের এমওইউ (সমঝোতা স্মারক চুক্তি) সই হয়েছে।

বুধবার (১৮ জুলাই) সকালে নগরের পাঁচতারকা হোটেল রেডিসন ব্লু’তে চুক্তি সই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।
আর খবর>>
**
৩০ কোটি টাকার ‘আইটি পার্ক’ নির্মাণে চসিক
অনুষ্ঠানে চসিকের পক্ষে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা ও বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসেনে আরা বেগম এমওইউতে স্বাক্ষর করেন।

‘চট্টগ্রাম সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক’ স্থাপনে এমওইউ সই অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।  ছবি: উজ্জ্বল ধর

সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে এ প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

পাশাপাশি নগরের আগ্রাবাদে সিঙ্গাপুর-ব্যাংকক মার্কেটে ‘চট্টগ্রাম সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক’ নির্মিত হলে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। বর্তমান ৫ তলা বিশিষ্ট সিঙ্গাপুর-ব্যাংকক মার্কেটকে ১১ তলায় উন্নীত করে সেখানে আইটি পার্ক নির্মাণ করা হবে। প্রায় ১ লাখ বর্গফুটের এ আইটি পার্কে অত্যধুনিক তত্ত্ব-প্রযুক্তির পাশাপাশি থাকবে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা।

হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বপ্ন দেখেছিলেন একটি সুখী ও সমৃদ্ধশালী সোনার বাংলা গঠনের কথা তুলে ধরে সিটি মেয়র আরও বলেন, জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতার স্বপ্নপূরণে প্রাণান্তকর প্রচেষ্টায় লিপ্ত। সেই প্রচেষ্টার অন্যতম অনুসঙ্গ ‘রূপকল্প ২০২১’ যেখানে স্থান পেয়েছিল ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের প্রত্যয়। বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক অথরিটি এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে যে চুক্তি সম্পাদিত হতে যাচ্ছে তা ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের অংশ মাত্র।   ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক অথরিটি একটি শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি বন্দরনগরী চট্টগ্রামের গুরুত্ব উপলব্ধি করে এ নগরীতে তথ্য প্রযুক্তির বিকাশ ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের অধীন আগ্রাবাদস্থ সিঙ্গাপুর ব্যাংকক মার্কেটে ৬ হতে ১১ তলা পর্যন্ত সম্প্রসারণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ৩০ কোটি টাকা বিনিয়োগের মাধ্যমে সম্প্রসারিত ৫টি ফ্লোরে সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক স্থাপন করা হবে। এ চুক্তি বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক অথরিটি কর্তৃক তথ্য প্রযুক্তির প্রচার ও প্রসারের ধারাবাহিক প্রচেষ্টারই ফসল। এ চুক্তির মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম তথ্য ও প্রযুক্তির অনন্য যুগে প্রবেশ করবে।

আ জ ম নাছির আরও বলেন, এটিই হবে চট্টগ্রাম শহরের মধ্যে সর্বপ্রথম এবং সর্বাধুনিক হাইটেক পার্ক। এ পার্কটি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করে তোলার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করার পাশাপাশি তথ্য প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট কর্মী বাহিনীর জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে। হাইটেক পার্ক সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট ও আইসিটি পণ্য উদ্ভাবনের মাধ্যমে  আমাদের কাঙ্খিত লক্ষে পৌঁছাতে সক্ষম হবে।

চট্টগ্রামে হাইটেক পার্ক সফটওয়্যার পল্লী’র নির্মাণের কথা উল্লেখ করে সিটি মেয়র বলেন এ প্রকল্পের আওতায় চান্দগাঁও বিএফআইডিসি রোডস্থ বড়ুয়া পাড়া এলাকায় চসিকেরর নিজস্ব ১১ একর জায়গা রয়েছে। এ জায়গাতেই বঙ্গবন্ধু পুত্র ‘শেখ কামাল আ্ইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার’ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষকে প্রস্তাব দেন।  

সভাপতির বক্তব্যে হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম বলেন, চট্টগ্রামকে হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ অতীতে যেমন গুরুত্ব দিয়েছে, বর্তমানেও দিচ্ছে। আগামীতেও তা সমান গুরুত্ব দিয়ে যাবে। আইসিটি’র জন্য চট্টগ্রাম একটি উত্তম জায়গা। বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে আইসিটি ছাড়া দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। এ সত্য অনুধাবন করে বর্তমান সরকার ধারাবাহিকভাবে ৬৪ জেলায় আইটি পার্ক, সফটওয়্যার টেকনোলজি সেন্টার, ট্রেনিং সেন্টার নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।

তিনি আরও বলেন, দেশের মোট জনসংখ্যার ৬৫ শতাংশ যুব সমাজ। এই যুব সমাজকে আইসিটি খাতে সঠিক ভাবে প্রশিক্ষিত করা গেলে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এতে দেশের রপ্তানি আয় বহুগুণ বেড়ে যাবে। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় লক্ষ্যমাত্রা ৬০ বিলিয়ন ডলার। সেই পরিকল্পনা নিয়েই সরকার দেশ জুড়ে হাই টেক পার্ক স্থাপনের মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।

পরে সিটি মেয়র, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এবং চসিক শীর্ষ কর্মকর্তাবৃন্দ চান্দগাঁও বড়ুয়াপাড়াস্থ চসিক’র নিজস্ব জায়গাটি সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে মেয়র হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষকে সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক নির্মাণের জন্য চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কাছে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাঠানোর পরামর্শ দিয়েছেন।

অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী একেএম ফজলুল্লাহ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. হানিফ সিদ্দিকী, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক প্রকল্প পরিচালক আজিজুল ইসলাম  প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১২ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০১৮

এসবি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।