ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

‘ইলেকট্রনিক সিল’ বাতিল চেয়ে ২ চেম্বার সভাপতির চিঠি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৯ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০১৮
‘ইলেকট্রনিক সিল’ বাতিল চেয়ে ২ চেম্বার সভাপতির চিঠি বন্দর থেকে বেসরকারি আইসিডিতে কনটেইনার আনা-নেওয়ায় ইলেকট্রনিক সিল বাতিল চান ব্যবসায়ী নেতারা

চট্টগ্রাম: আমদানি-রপ্তানি পণ্যভর্তি কনটেইনার বন্দর থেকে আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে ইলেকট্রনিক সিল ও লক সেবা বিধিমালা বাতিল চেয়ে প্রধানমন্ত্রী বরাবর চিঠি দিয়েছে চট্টগ্রাম চেম্বার ও মেট্রোপলিটন চেম্বার।

মঙ্গলবার (১০ জুলাই) চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম ও মেট্রোপলিটন চেম্বার সভাপতি খলিলুর রহমান এ চিঠি পাঠান।

মাহবুবুল আলম বলেন, আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম আরও গতিশীল করতে এ অঞ্চলে প্রাইভেট আইসিডি বা অফডক স্থাপন করা হয়।

 জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (কাস্টমস) কর্তৃক চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে আমদানি বা রপ্তানি পণ্য চট্টগ্রাম জেলায় অবস্থিত আইসিডি বা অফডকে পরিবহনের ক্ষেত্রে গত ২৬ জুন ইলেকট্রনিক সিল ও লক সেবা বিধিমালার প্রজ্ঞাপন জারি করে।  উক্ত বিধিমালার মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে জেলার বেসরকারি আইসিডিগুলোতে আমদানি বা রপ্তানি পণ্য পরিবহনে ইলেকট্রনিক সিল ও লক সেবা প্রদানের উল্লেখ করা হয়।
এ বিধিমালার অধীনে প্রতি কনটেইনারে ইলেকট্রনিক সিল ও লক সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে ৪৮ ঘণ্টার জন্য প্রতি কাভার্ডভ্যান বা ট্রাক ৬০০ টাকা এবং ৪৮ ঘণ্টার পর প্রতি ঘণ্টার জন্য ৫০ টাকা হারে ফি নির্ধারণ করা হয়।

তিনি বলেন, আইসিডির কার্যক্রম শুরুর পর থেকে অদ্যাবধি চট্টগ্রাম বন্দর ও প্রাইভেট আইসিডিগুলোর মধ্যবর্তী স্থানে কোনো ধরনের চুরির ঘটনা ঘটেনি। কনটেইনার স্থানান্তরকালে মধ্যবর্তী স্থানে কোনো শুল্ক বা কর ফাঁকির প্রচেষ্টাও দেখা যায়নি। চট্টগ্রাম বন্দর ও প্রাইভেট আইসিডিগুলোর মধ্যে প্রতিদিন বিপুলসংখ্যক কনটেইনার স্থানান্তরিত হয়। উল্লেখিত লক সেবা চালু হলে বন্দরের কার্যক্রমে অহেতুক সময়ক্ষেপণ হবে এবং ব্যয় বাড়বে যা প্রকারান্তরে ভোক্তাসাধারণের ওপরই বর্তাবে।  

তাই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের বৃহত্তর স্বার্থে উল্লেখিত বিধিমালাটি বাতিলের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্টদের যথাযথ নির্দেশনা দেওয়ার জন্য ব্যবসায়ী সমাজের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছি।  

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার সভাপতি খলিলুর রহমান বলেন, ইলেকট্রনিক সিল ও লক সেবা বিধিমালা-২০১৮ দেশের ব্যবসা ব্যয় আরেক দফা বাড়াবে। এ অঞ্চলে আমাদের ব্যবসা ব্যয় সর্বোচ্চ বলা হচ্ছে। এ অবস্থায়, সেবার নামে প্রতিটি আমদানি-রপ্তানি পণ্যের কনটেইনার পরিবহনে প্রথম ৪৮ ঘণ্টায় ৬০০ টাকা, পরবর্তী প্রতি ঘণ্টায় ৫০ টাকা করে হাজার টাকা বাড়তি খরচ করতে হলে বছরে কয়েক শত কোটি টাকা ব্যবসা ব্যয় বাড়বে।

জাহাজ কোম্পানি বুলেট সিল করেই আমদানি-রপ্তানি পণ্যবাহী কনটেইনার পরিবহন করে যা আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত। প্রস্তাবিত সেবা পৃথিবীর কোথাও আছে বলে জানা যায় না। বিষয়টির সঙ্গে শুল্ক কর্তৃপক্ষ পরিচিত।

বর্ণিত বিধিমালা সময়ক্ষেপণ, বন্দরে কনটেইনার-কাভার্ডভ্যান বা ট্রাক  জট বেড়ে চলমান পরিবহন সমস্যা আরও ভয়াবহ করে রপ্তানি প্রবাহ বহুলাংশে ধীরগতি হবে, বিনিয়োগের পরিবেশ বিনষ্ট করবে। ব্যবসায়ী মহল বাড়তি ব্যয় কাঁধে নেবে না, জনদুর্ভোগ বাড়বে। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা না করে গৃহীত বিধিমালা সরকারের চলমান ব্যবসাবান্ধব ও ব্যয় কমানোর নীতি পরিপন্থি, যা বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে সরকারি নীতির সঙ্গে মানায় না।

নীতি সহায়তা বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর স্বার্থে হওয়া কাম্য উল্লেখ করে এ ব্যবসায়ী নেতা বলেন, যেকোনো ব্যবসা ব্যয় বৃদ্ধির পেছনে ২০২১ সালে ৫০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সরকারকে বিব্রত করতে স্বার্থান্বেষী মহল তৎপর কি না খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। প্রাইভেট একটি সংস্থাকে প্রস্তাবিত সেবাদানের একচেটিয়া ঠিকাদারি দেওয়া হলে বন্দরের দক্ষতা অর্ধেকে নেমে আসবে এবং জাতীয় নিরাপত্তা হুমকিতে পড়বে। তাই অনতিবিলম্বে ব্যবসা-বিনিয়োগ পরিপন্থি এ বিধিমালা বাতিলের নির্দেশ দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে আহ্বান জানিয়েছি।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৫ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০১৮
এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।