এক পক্ষের অভিযোগ, টাকার বিনিময়ে সভাপতি-সম্পাদকের দুইজনের নাম দিয়ে সাতকানিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। তবে বিষয়টি প্রত্যাখান করে গঠনতন্ত্র মেনেই কমিটির অনুমোদন দেওয়ার কথা জানিয়েছেন দক্ষিণ জেলার ছাত্রলীগের দায়িত্বশীল নেতারা।
জানা যায়, বুধবার (২০ জুন) আগামী এক বছরের জন্য আব্দুল মান্নানকে সভাপতি ও তোফাজ্জল হোসাইন চৌধুরী তুহিনকে সাধারণ সম্পাদক করে সাতকানিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের অনুমোদন দেয় দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগ। এতে সংগঠনের সভাপতি এসএম বোরহান উদ্দীন ও সাধারণ সম্পাদক মো. আবু তাহের সই করেন।
এ কমিটিকে মেনে না নিয়ে পরদিন বৃহস্পতিবার (২১ জুন) আগামী ২ বছরের জন্য শফিউল আলম সোহেলকে সভাপতি ও ইয়ামিনুর রহমান ইমনকে সাধারণ সম্পাদক করে আরেকটি পাল্টা কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান ও তাওহিদুল ইসলাম জেকী এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন ও মো. বদরুদ্দোজা সই করেন।
দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এসএম বোরহান উদ্দীন বাংলানিউজকে বলেন, ‘সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুসারে আগামী এক বছরের জন্য সাতকানিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগ এবং স্থানীয় সংসদ সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে এ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এখানে দ্বন্দ্ব বা বিরোধের কিছু নেই। ’
তিনি আরও বলেন, ‘এ কমিটিকে মেনে না নিয়ে যে আরেকটি কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে সেটি ভুয়া ও ভিত্তিহীন। যেখানে বিবাহিতরাও স্থান পেয়েছে। গঠনতন্ত্রে এক বছর মেয়াদের নিয়ম থাকলেও তারা ২ বছরের মেয়াদ দিয়েছে। দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের যে ক’জন সই করে অনুমোদন দিয়েছে তারা সবসময় রাজনীতিতে ঝামেলা করে, রাজনীতি করে না। ’
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে এসএম বোরহান উদ্দীন বলেন, ‘কমিটি অনুমোদনের আগে তো সংগঠনের সকল সদস্যের মতামত নেওয়া সম্ভব নয়। ওয়াকিং কমিটির সভায় সেটি নিয়ে আলোচনা হবে। ’
সাতকানিয়ায় যারা দীর্ঘদিন থেকে ছাত্রলীগ করেছে, তাদের বাদ দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘সভাপতি-সম্পাদক সাতকানিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের যে কমিটি ঘোষণা করেছে, সেটি পকেট কমিটি। জেলা ছাত্রলীগের কার্যকরী কমিটির সভা ছাড়া এবং টাকার বিনিময়ে এ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। যেখানে প্রকৃত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা স্থান পায়নি। সাতকানিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা আমাদের কাছে এসেছে। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে আমরা পাল্টা কমিটি দিয়েছি। ’
তিনি আরও বলেন, ‘যারা এখনো দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের পুর্নাঙ্গ কমিটি দিতে পারেনি, তারা কিভাবে উপজেলা কমিটির অনুমোদন দেয়। এ কমিটি মেনে নেওয়া যায় না। ’
দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আবু তাহের বাংলানিউজকে বলেন, ‘গঠনতন্ত্র অনুসারে এক বছরের জন্য এ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। গঠনতন্ত্রের বাইরে গিয়ে পাল্টা কমিটি ঘোষণা করার কোন সুযোগ নেই। মনগড়া কমিটি কেউ মেনে নেবে না। পাল্টা কমিটিতে যাদের সভাপতি-সম্পাদক করা হয়েছে, তারা দু’জনেই বিবাহিত। যা ইতিমধ্যে ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ’
কেন্দ্রিয় কমিটি হওয়ার পর দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের পুর্নাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করার কথাও জানান তিনি।
দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন বাংলানিউজকে বলেন, ‘উপজেলা কমিটি অনুমোদনের আগে আমরা যারা জেলা কমিটির দায়িত্বে আছি, আমাদের কারো মতামত নেওয়া হয়নি। এমনকি উপজেলা আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীদের সাথে তারা সমন্বয় করেনি। তাই প্রকৃত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। ’
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৫ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১৮
এসবি/টিসি