ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

জমিয়াতুল ফালাহ ময়দানের প্রথম জামাতে মুসল্লির ঢল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩১৮ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০১৮
জমিয়াতুল ফালাহ ময়দানের প্রথম জামাতে মুসল্লির ঢল জমিয়াতুল ফালাহ জাতীয় মসজিদ ময়দানে ঈদুল ফিতরের প্রথম জামাত। ছবি: উজ্জ্বল ধর

চট্টগ্রাম: আষাঢ়ের বৃষ্টিস্নাত সকাল। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য আর বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। শনিবার (১৬ জুন) ঈদুল ফিতরের প্রথম ও প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে নগরের জমিয়াতুল ফালাহ জাতীয় মসজিদ ময়দানে। দুই দফা নামাজে এই ময়দানে লাখো মুসল্লির সমাগম ঘটেছে।

সকাল ৮টায় জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদ ময়দানে প্রথম ও প্রধান ঈদ জামাতে ইমামতি করেন ষোলশহর জামেয়া আহমদিয়া ছুন্নীয়া আলেয়া মাদ্রাসা চট্টগ্রামের মুহাদ্দিছ আল্লামা সৈয়দ আবু তালেব মোহাম্মদ আলাউদ্দিন আল কাদেরি।

জমিয়াতুল ফালাহ জাতীয় মসজিদ ময়দানে ঈদুল ফিতরের প্রথম জামাত।                     <div class=

ছবি: উজ্জ্বল ধর" src="http://cdn.banglanews24.com/media/imgAll/2016October/bg/bg-e320180616093859.jpg" style="margin:1px; width:100%" />পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায়ের জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, ব্যবসায়ী-শিল্পপতিসহ নগরের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা সাধারণ মানুষ এক কাতারে দাঁড়ান।

প্রথম জামাতে পুরো ময়দান জুড়ে মুসল্লিদের ভিড় ছিল।

ময়দান ছাপিয়ে দুই মূল ফটকের বাইরেও সামনের সড়কে বসে অনেকে নামাজ আদায় করেছেন।

জমিয়াতুল ফালাহ ময়দানে দ্বিতীয় জামাতে ইমামতি করেন জাতীয় মসজিদ জমিয়তুল ফালাহ্’র হাফেজ মাওলানা আহমদুল হক।

জামাত আদায় শেষে একে অপরের সঙ্গে আলিঙ্গনের মাধ্যমে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়।  ছবি: উজ্জ্বল ধর এদিকে, জমিয়াতুল ফালাহ ময়দানে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে নগর পুলিশ। তিনটি প্রবেশপথে আর্চওয়ে বসানো হয়। মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশির পর মুসল্লিদের জমিয়াতুল ফালাহ ময়দানে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়েছে।

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদে নামাজ আদায় করেছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল নোমান, সাবেক সিটি মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মীর মো. নাসির উদ্দিন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান, নগর জাতীয় পার্টির আহবায়ক সোলায়মান আলম শেঠ প্রমুখ।

গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে ঈদের জামাত আদায় করতে আসছেন মুসল্লিরা।  ছবি: উজ্জ্বল ধরচসিকের তত্ত্বাবধানে নগরের ৪১ ওয়ার্ডে এবার ১৬৬টি স্থানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। অন্যদিকে, নগরেরর ৮৯ স্থানে কেন্দ্রীয় ঈদ জামাত কমিটির তত্ত্বাবধানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। কেন্দ্রীয় ঈদ জামাত কমিটির উদ্যোগে সকাল সাড়ে ৮টায় প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেশিয়াম হলে। এতে ইমামতি করেন বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হযরতুল আল্লামা ড. সাইয়েদ মুহাম্মদ আবু নোমান।

চসিক, কেন্দ্রীয় ঈদ জামাত কমিটি এবং এলাকাভিত্তিকসহ নগরের মোট ৪ শতাধিক স্থানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে পুলিশ জানিয়েছে।  

প্রথম জামাতে ঈদের নামাজ শেষে খতিব দেশের মানুষের সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায় আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ জানান। এছাড়াও মোনাজাতে খতিব দেশ, জাতি ও সকল ধর্মের সুখ-শান্তি এবং মানুষের জানমাল হেফাজতের জন্য আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ জানান।

মোনাজাতে ইমাম বলেন, আল্লাহ, আপনি আমাদের এবাদত বন্দেগি কবুল করুন। যারা এই জামাতে এসে হাত তুলেছেন কেউ যেন আপনার রহমত থেকে বঞ্চিত না হয়। বিশ্বের সকল মুসলমানের প্রতি আপনি রহমত নাজিল করুন। আমাদের মধ্যে অনেকে মা-বাবা, আত্মীয়স্বজন হারিয়েছেন। তাদের প্রতি আপনি রহমত নাজিল করুন। আমাদের সব গুণাহ আপনি মাফ করে দিন।

নগরের দ্বিতীয় বৃহত্তম ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে নগরের আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদে। এছাড়াও চসিকের তত্ত্বাবধানে বাকলিয়া চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন স্টেডিয়াম, লালদিঘী শাহি জামে মসজিদ, জালালাবাদ আরেফিননগর সিটি করপোরেশন কেন্দ্রীয় কবরস্থান জামে মসজিদ, হজরত শেখ ফরিদ চশমা ঈদগাহ ময়দান, চকবাজার সিটি করপোরেশন জামে মসজিদে, মা আয়েশা সিদ্দিকা চসিক জামে মসজিদে (সাগরিকা জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামসংলগ্ন) ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

নগরের ৪১টি ওয়ার্ডের প্রতি ওয়ার্ডে কাউন্সিলরদের তত্ত্বাবধানে একটি করে প্রধান ঈদ জামাত ও অন্যান্য ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

প্রত্যেক জামাতে নামাজ আদায় শেষে মুসল্লিরা একে অপরের সঙ্গে আলিঙ্গন করেন। অনেকে পিতা-মাতাসহ মুরব্বীদের কবর জিয়ারত করে বাসায় ফিরেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৯১৫ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০১৮

এসবি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।