ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

জলাবদ্ধতা নিরসন চসিকের কাজ নয়, তবুও পাশে আছি

তপন চক্রবর্তী, ব্যুরো এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০২ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০১৮
জলাবদ্ধতা নিরসন চসিকের কাজ নয়, তবুও পাশে আছি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। ছবি: বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামবাসীর দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (সিডিএ) প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছেন। যেখানে জলাবদ্ধতা নিরসনে সিডিএ কী কী কাজ করবে তার স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে।

প্রকল্পটি অনুমোদনের পর প্রায় ১ বছর পার হয়ে গেছে। বর্ষার আগেই নগরজুড়ে জলাবদ্ধতার কারণে দুর্ভোগে পড়া মানুষের অনেকেই বিভ্রান্ত হয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে (চসিক) দুষছেন।

জলাবদ্ধতা নিরসনের কাজটি এখন আর আমাদের হাতে নেই। তারপরও নগরবাসীর দুর্ভোগ নিরসনে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
জনগণের পাশেই আছি।

বুধবার (১৩ জুন) বাংলানিউজের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন একথা বলেন।

আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনের দায়িত্ব এখন চসিকের নয়। এটা সিডিএ’র কাজ। জলাবদ্ধতা নিরসনে সিটি করপোরেশনকে কাজ করার কোনো এখতিয়ার বা দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। সিডিএ প্রকল্পটি নিয়েছে এবং তারাই এর বাস্তবায়ন করবে।

মেয়র বলেন, প্রকল্প অনুমোদনের পর সিডিএ’র পক্ষ থেকে গত বছর দাবি করা হয়, প্রকল্পটির কাজ শুরু হলে এবছরেই নগরের ৭০ থেকে ৮০ ভাগ এলাকা জলাবদ্ধতামুক্ত হবে। কিন্তু বর্ষাকাল এখনো  শুরুই হয়নি, অথচ গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে দেখা গেছে নগরের অনেক জায়গায় গত বছরের চেয়ে এবার জলাবদ্ধতা অনেক বেশি। কিছু কিছু নতুন এলাকাতেও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি বলেন, আমি অনেক জায়গায় যাই, অনেকে অনেক কথা বলেন। বিভিন্ন পরামর্শ দেন। সিটি করপোরেশনের সমালোচনাও করেন। কিন্তু আমাদের সীমাবদ্ধতার কথা তো তাদের বুঝতে হবে। নগরে কোন প্রতিষ্ঠান বা কোন সংস্থা কোন কাজটি করছে, কার কী দায়িত্ব এ বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা রাখতে হবে। কিন্তু তারা ধারণা না রেখেই ভুল সমালোচনা করছেন।

'নগরবাসীকে সঠিক তথ্যটি জানাতে সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে'--একথা জানিয়ে আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, চট্টগ্রাম মহানগরে যারা বসবাস করেন, যারা সম্মানিত সিটি ডুয়েলার আছেন, তাদের অনেকেই সঠিক তথ্যটি জানেন না। না জানার কারণে অনেক সময় জলাবদ্ধতা নিরসন সিটি করপোরেশনের দায়িত্ব মনে করে অহেতুক সমালোচনা করেন।

তিনি বলেন, সিটি করপোরেশনের দায়িত্ব রাস্তাঘাট সংস্কার করা, নালা-নর্দমা তৈরি করা, নতুন নতুন আরসিসি ড্রেন নির্মাণ করা, যেখানে ফুটপাত নেই সেখানে ফুটপাত তৈরি করা, সড়কবাতি দিয়ে আলোকায়নের কাজ করা, বাসা-বাড়ির বর্জ্য নিয়মিত সংগ্রহ করে দ্রুত ও যৌক্তিক সময়ে অপসারণ করা। এসব আমরা করছি। শহরটাকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রেখে সুন্দর এবং পরিবেশবান্ধব রাখার চেষ্টা করছি।

কিন্তু এর বাইরে খাল থেকে মাটি তোলা, ড্রেন থেকে মাটি অপসারণ এসব কাজ করা কিন্তু চসিকের দায়িত্ব নয়, এটা সিডিএ’র দায়িত্ব। এখন সিডিএ এসব কাজ করতে গিয়ে যে ভোগান্তিটা হচ্ছে, এজন্য চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে যাতে ভুল না বুঝে সে জন্য কার কাজ কী, কার দায়িত্ব কী এসব জানাতে সংবাদ মাধ্যমে গণবিজ্ঞপ্তি দিয়েছি।

জনদুর্ভোগের কথা চিন্তা করে নিজের চীন সফর বাতিল করেছেন উল্লেখ করে মেয়র বলেন, জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের সহানুভূতি জানাতে, তাদের দুর্ভোগটা ভাগাভাগি করে নিতে গুরুত্বপূর্ণ চীন সফরটি বাতিল করেছি। আজকেও নগরের আগ্রাবাদ, পোর্ট কানেকটিং রোড, নিমতলা এলাকায় পায়ে হেঁটে পরিদর্শন করেছি। জনগণের সঙ্গে কথা বলে তাদের ধৈর্য ধরার জন্য বিনয়ের সঙ্গে অনুরোধ করেছি।

তিনি বলেন, দুর্ভোগ কমাতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। আগ্রাবাদ এলাকায় জাইকার সহযোগিতায় প্রায় দেড়শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক উঁচু করে পাশে বড় আরসিসি ড্রেন নির্মাণের কাজ চলছে। আগামী বছরের মে মাসে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন শেষ হলে এ এলাকার বাসিন্দারা স্বস্তি পাবেন বলে আমি আশাবাদী।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২০ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০১৮
টিসি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।