ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

এক্সেস রোডের নরক-যন্ত্রণার শেষ কখন?

সুবল বড়ুয়া, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪০ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০১৮
এক্সেস রোডের নরক-যন্ত্রণার শেষ কখন? নগরের আগ্রাবাদ-হালিশহর এক্সেস রোডের বেশির ভাগ সড়ক ক্ষতবিক্ষত ও খানাখন্দে ভরা।

চট্টগ্রাম: ‘খানাখন্দে ভরা আগ্রাবাদ এক্সেস রোড। গত সাত-আট মাস ধরে খুব কষ্টে এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করছি। সড়কের বড় বড় গর্তে পেরিয়ে বাসগুলো কোনমতে যাতায়াত করলেও ছোট গাড়িতে চলাচল করা খুব কষ্টের। অনেক সময় যাত্রীদের নামিয়ে সড়কের বড় গর্তগুলো পার হতে হয়।’

নগরের আগ্রাবাদ এক্সেস রোডের বেহাল সড়ক নিয়ে নগরের হালিশহর জি ব্লকের বাসিন্দা আবদুর রউফ বাংলানিউজকে এসব কথা বলেন।

এক্সেস রোডের সংস্কার কাজ ঢিমেতালে চলছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘শুষ্ক মৌসুমে যদি এক্সেস রোড সংস্কারের কাজ শুরু করতো, তাহলে এতোদিন দুর্ভোগ কিছুটা কমতো।

বর্ষা মৌসুমের আগে সড়ক সংস্কারের কাজ ধরে আমাদের আরও কষ্ট বাড়িয়ে দিলো। এরপরেও সড়ক সংস্কার ও সম্প্রসারণ হোক।
কিন্তু সড়কে কাজ চলছে ঢিমেতালে। বৃষ্টি হলেই রাস্তার বড় বড় গর্তগুলোতে পানি জমে যায়। তখন এ সড়ক দিয়ে চলাচল করতে আমাদের নরক যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়। ’

এক্সেস রোডের দুইপাশে এখন ড্রেন সংস্কারের কাজ চলছে উল্লেখ করে আবদুর রউফ আরও বলেন, ‘রাস্তার একপাশ ধরে কাজ শুরু করলে দুর্ভেোগ কম হতো।   বিন্তু এখন রাস্তার দুইপাশে একই সাথে ড্রেন সংস্কারের কাজ চলছে। এতে রাস্তার ওপর দু্‌ই পাশেই মাটি তুলে রেখেছে। একদিকে ভাঙা সড়ক, অন্যদিকে রাস্তার ওপর মাটি রাখায় এখন প্রায় সময় এ সড়কে তীব্র যানযট সৃষ্টি হচ্ছে। একবার জ্যাম লাগলে তা তিন-চার ঘণ্টার আগে মুক্তি মেলে না। ’

‘প্রায় বছর খানেক থেকে এ সড়ক দিয়ে দুর্বিষহ কষ্টে আমরা দিনপার করছি। দেখার যেন কেউ নেই। ’ যোগ করেন আবদুর রউফ।

নগরের আগ্রাবাদ-হালিশহর এক্সেস রোডের বেশির ভাগ সড়ক ক্ষতবিক্ষত ও খানাখন্দে ভরা।  সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত।

জানা যায়, জাইকা ও বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে আইসিজিপি’র আওতায় ৪১ কোটি ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ব্যয়ে আগ্রাবাদ-হালিশহর এক্সেস রোডের ২ দশমিক ৩৮ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের কাজ ২০১৭ সালের ২০ নভেম্বর শুরু হয়।

কিন্তু এলাকাবাসীর অভিযোগ, এক্সেস রোড সম্প্রসারণের কাজ শুরুর ছয় মাস পার হলেও তেমন কোন অগ্রগতি নেই। কাজ চলছে অনেকটা ঢিমেতালে।

নগরের আগ্রাবাদ-হালিশহর এক্সেস রোডের বেশির ভাগ সড়ক ক্ষতবিক্ষত ও খানাখন্দে ভরা। সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। রাস্তার দুইধারে কিছু অংশে চলছে ড্রেন সংস্কারের কাজ। বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে প্রায় সময় সড়কের গর্তগুলোতে পানি জমে থাকে। বিশেষ করে এ সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী নগরের আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকা, রহমানবাগ গুলবাগ, শান্তিবাগ, বেপারিপাড়া, হালিশহর, বড়পুল ও  ছোটপুল এলাকার লাখো বাসিন্দাসহ পথচারীদের দুর্ভোগের শেষ নেই।

হালিশহর এলাকার বাসিন্দা মো. রাশেদুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বাংলানিউজকে বলেন, ‘এক্সেস রোড সম্প্রসারণের নামে আমাদের যন্ত্রণা বেড়েছে। কাজ শুরু করেছে গতবছরের নভেম্বর মাসে। কিন্তু এখনো এক্সেস রোডের গর্তগুলোও ভরাট করতে পারে নি। প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে আমাদের চলাচল করতে হয়। সিএনজি অটোরিকশাগুলো খুব কষ্টে রাস্তার বড় গর্তগুলো পার হয়। অনেক সময় বড় গর্তগুলো পার হতে যানবাহন আটকে যায়। এতে তীব্র যানযটের সৃষ্টি হয়। একদিকে সড়কে বড় বড় গর্ত এবং অন্যদিকে তীব্র যানযট। এসব মিলে আমরা ‍অনেকটা নরক যন্ত্রণার মধ্যে আছি। প্রতিদিন স্কুল-কলেজ ও অফিসগামী লোকজনের খুব কষ্ট পোহাতে হচ্ছে। এ সুযোগে যানবাহনগুলো যাত্রীদের কাছে বেশি ভাড়া আদায় করছে।  সামনের বর্ষার দিনগুলোতে আমরা হয়তো ঘর থেকেও বের হতে পারবে না।  এ সড়কের সীমাহীন দুর্ভোগ কাটাতে শিগগিরই কোন ‌উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে বিনীত প্রার্থনা জানাচ্ছি। '

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪১ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০১৮

এসবি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।