ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

শান্তিরক্ষায় কাজ করছেন বাংলাদেশি নারী পাইলটরাও

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৩৮ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০১৮
শান্তিরক্ষায় কাজ করছেন বাংলাদেশি নারী পাইলটরাও বিমানবাহিনীর ঘাঁটি জহুরুল হকে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী দিবসের উদ্বোধন করেন অতিথিরা। ছবি: সোহেল সরওয়ার

চট্টগ্রাম: বাংলাদেশ শুধু বিশ্ব শান্তিরক্ষায় মডেল নয় বিভিন্ন ক্ষেত্রে পথিকৃৎ হিসেবে কাজ করছে। নারীর ক্ষমতায়ন, বিশেষ করে শান্তিরক্ষায় নারী অংশগ্রহণে বাংলাদেশ যে উদাহরণ সৃষ্টি করেছে তা বিশ্ব সর্বজন সমাদৃত ও স্বীকৃত। আমাদের নারী কর্মকর্তারা পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন।

মঙ্গলবার (২৯ মে) সকালে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর ঘাঁটি জহুরুল হকের আলাউদ্দিন অডিটোরিয়ামে জাতি সংঘ আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ২৪ পদাতিক ডিভিশন চট্টগ্রামের জিওসি মো. জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশই প্রথম যেখানে দুইটি কনটিনজেন্টে প্রধান ছিলেন নারী।

এ মুহূর্তে আমাদের নারী পাইলটরা শান্তিরক্ষী হিসেবে নিয়োজিত আছেন। এটা বাংলাদেশের জন্য অসম্ভব গৌরবের বিষয়।
এর জন্য দেশের প্রতিটি মানুষ গর্ববোধ করতে পারেন।    

শান্তিরক্ষী দিবসে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ২৪ পদাতিক ডিভিশন চট্টগ্রামের জিওসি মো. জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার।  ছবি: সোহেল সরওয়ার

শান্তির প্রতীক পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে ‘পিস কিপার্স ডে’ সমাবেশের উদ্বোধন করেন অতিথিরা। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে নীল ও সাদা পতাকা এবং বেলুনে সাজানো হয় পুরো ঘাঁটি এলাকা। অনুষ্ঠানে প্রদর্শিত হয় বিভিন্ন দেশে শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর সদস্যদের কর্মযজ্ঞের ওপর নির্মিত তথ্যচিত্র।

১ লাখ ৫৬ হাজার ৪০০ জন শান্তির দূত

স্বাগত বক্তব্যে বিমানবাহিনী ঘাঁটি জহুরুল হকের এয়ার অধিনায়ক মোরশেদ হাসান বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়নে বাংলাদেশ গর্বিত অংশীদার। ১৯৮৮ সালে ইরান-ইরাক শান্তি মিশনে যোগ দেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা। ১৯৯৩ সালে নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী, ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ পুলিশ শান্তি মিশন পরিবারের সদস্য হয়। এ পর্যন্ত ৪০টির বেশি দেশে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৪০০ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ দিয়েছেন। বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় এ পর্যন্ত আমাদের ১৪২ জন বীর সন্তান জীবন উৎসর্গ করেছেন। ২২৩ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষা মিশনে আহত হয়েছেন।

বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চলের কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল আবু আশরাফ ।  ছবি: সোহেল সরওয়ার

৬০ হাজার ৭৬০ ঘণ্টা শান্তি উড্ডয়ন

তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর ৪৯৯ জন শান্তিরক্ষী ছয়টি দেশে নিয়োজিত আছেন। একটি পরিবহন বিমান ও ছয়টি হেলিকপ্টার নিয়োজিত রয়েছে। বাংলাদেশ বিমানবাহিনী আজ পর্যন্ত ৬০ হাজার ৭৬০ ঘণ্টা শান্তি উড্ডয়ন সম্পন্ন করেছে। শান্তিরক্ষী মিশনে এ কর্মযজ্ঞ বিমানবাহিনীর পেশাদারিত্বের পরিচয় বহন করে।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিমানবাহিনী ঘাঁটি জহুরুল হকের এয়ার অধিনায়ক মোরশেদ হাসান ।  ছবি: সোহেল সরওয়ার

২০০৪ সাল থেকে নারী সদস্যরা বিশ্ব শান্তি রক্ষায় উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছেন। এ পর্যন্ত ১ হাজার ৪৩৫ জন বাংলাদেশি নারী শান্তিরক্ষী যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলে প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করছেন। তন্মধ্যে বিমানবাহিনীর ৬৫ জন মিশনে অংশ নিয়েছেন। বর্তমানে বিমানবাহিনীর ১৫ জন নারী শান্তিরক্ষী রয়েছেন। এর মধ্যে দুইজন নারী পাইলট রয়েছেন। যা জাতিসংঘের ইতিহাসে এক নবদিগন্ত উন্মোচন করেছে। যা বাংলাদেশে নারীর অগ্রযাত্রা ও ক্ষমতায়নের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।       

শান্তিরক্ষার ৭০ বছর

চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চলের কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল আবু আশরাফ বলেন, শান্তিরক্ষীরা বিশ্ব পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করেছেন। ১৯৪৮ সালের এ দিনে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের কার্যক্রমের সূচনা হয়। ৭০ বছর পূর্ণ করেছে এ কর্মসূচি। এবারের প্রতিপাদ্য ‘সেভেনটি ইয়ারস অব সার্ভিস অ্যান্ড সেক্রিফাইস’। বাংলাদেশকে এখন শান্তিরক্ষা কর্মসূচিতে রোল মডেল হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

নৌবাহিনীর পক্ষে শান্তিরক্ষা মিশনে প্রথম ব্যাচে অংশ নিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০১০ সাল থেকে জাতিসংঘের একমাত্র মেরিটাইম টাস্কফোর্স লেবাননে কাজ করছে। উন্নত দেশের নৌবাহিনীর পাশাপাশি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ অংশ নিচ্ছে।          

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৮ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০১৮
এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।