ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে হবে নিজেদের স্বার্থেই

চট্টগ্রাম প্রতিদিন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৯ ঘণ্টা, মে ২২, ২০১৮
জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে হবে নিজেদের স্বার্থেই বিশ্ব জীববৈচিত্র্য দিবস উপলক্ষে মানববন্ধন

চট্টগ্রাম: বিশ্ব জীববৈচিত্র্য দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ রসায়ন সমিতি চট্টগ্রাম অঞ্চল এবং পরিবেশবাদী নাগরিক সংগঠন ‘পিপলস ভয়েস’র উদ্যোগে মানববন্ধন ও নাগরিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (২২ মে) বিকেল তিনটায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব চত্বরে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

সমাবেশে বায়োডাইভারসিটি রিসার্চ গ্রুপ অব বাংলাদেশ (বিআরজিবি) সভাপতি অধ্যাপক ড. বদরুল আমিন ভূঁইয়া বলেন, যে বাতাস আমরা গ্রহণ করি, যে পানি আমরা পান করি এবং যে খাদ্য আমরা খাই, সবই জীববৈচিত্র্যের ওপর নির্ভরশীল।

কিন্তু বর্তমান সময়ে ভয়ানক বিপর্যয়ের মুখে আছে আমাদের জীববৈচিত্র্য। জীববৈচিত্র্য একটি দেশের অমূল্য সম্পদ।
অসচেতনতার কারণে আমরা এর ক্ষতি সাধন করছি। জীববৈচিত্র্য রক্ষায় আমাদের বন বাঁচাতে হবে। বাঁচাতে হবে আমাদের নদী, খাল ও জলাশয়গুলো। সব ধরনের উদ্ভিদ ও প্রাণীকে নিরাপদ করতে পারলেই নিরাপদ জীবনযাপন সম্ভব। নিজেদের স্বার্থেই আমাদের এ প্রকৃতিকে বাঁচাতে হবে।

হালদা গবেষক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলী আজাদী সমাবেশে বলেন, চট্টগ্রামের দুই প্রধান নদী কর্ণফুলী ও হালদা। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে নদী দুটি লোভের শিকার হয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। কর্ণফুলীকে রক্ষায় একে পুরোপুরি অবৈধ দখলমুক্ত করতে হবে। হালদা একটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের অনন্য নদী। এর স্বকীয়তা অক্ষুণ্ন রেখেই সব কার্যক্রম নিতে হবে যেন নদীটি তার বৈশিষ্ট্য কোনোভাবেই না হারায়।

পিপলস ভয়েসের উপদেষ্টা অধ্যাপক মো. ইদ্রিস আলী বলেন, পৃথিবীব্যাপী বন উজাড় হচ্ছে। বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইড বাড়ছে। সাগর-মহাসাগর হচ্ছে অম্ল দূষণে দূষিত। আর আমাদের দেশে পরিবেশের নানামাত্রিক দূষণ তো আছেই। আমরা কর্ণফুলী ও হালদাকে বাঁচাতে চাই। আমরা চাই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি বসবাসের উপযোগী পরিবেশ রেখে যেতে।

‘সেলিব্রেটিং টোয়েন্টি ফাইভ ইয়ারস অব অ্যাকশন ফর বায়োডাইভারসিটি’ স্লোগানে এবার উদযাপিত হয়েছে ২৫তম বিশ্ব জীববৈচিত্র্য দিবস।

পিপলস ভয়েসের উপদেষ্টা ডা. একিউএম সিরাজুল ইসলাম বলেন, হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে যেমন শাস্তি নির্ধারণ করা আছে ঠিক তেমনি যারা নদী দখল ও দূষণ করছে এবং পাহাড় কাটছে তাদের বিরুদ্ধেও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নির্ধারণ করতে হবে। কারণ তারা যা করছে তাতে সাধারণ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

পিপলস ভয়েস সভাপতি শরীফ চৌহান বলেন, জীববৈচিত্র্য রক্ষায় কঠোর ভাবে পাহাড় দখল ও কাটা, নদী দখল ও দূষণ বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এমন কোনো প্রকল্প নেওয়া যাবে না। পরিবেশের ওপর প্রভাব বিস্তারকারী অসংখ্য প্রকল্প সারা বিশ্বেই নেওয়ার পর এর ক্ষতিকর প্রভাব প্রকট হয়ে উঠেছে। এরপরও এ ধরনের আর কোনো প্রকল্প গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

সমাবেশে বক্তব্য দেন হালদা গবেষক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলী আজাদী, বাংলাদেশ রসায়ন সমিতির চট্টগ্রাম অঞ্চলের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. এম জামাল উদ্দিন আহমেদ, সাংস্কৃতিক সংগঠক রাশেদ হাসান ও অ্যাডভোকেট রেহানা বেগম রানু।

উপস্থিত ছিলেন বোধন আবৃত্তি স্কুলের অধ্যক্ষ রণজিৎ রক্ষিত, শিক্ষাবিদ অজিত কুমার আইচ, উদীচী কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুনীল ধর, লেখক-গবেষক তুষার কান্তি বসাক, সংস্কৃতি সংগঠক হাবিব বিপ্লব ও পিপলস ভয়েসের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মুহাম্মদ আতিকুর রহমান।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৭ ঘণ্টা, মে ২২, ২০১৮
এআর/টিসি

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।