মঙ্গলবার (২২ মে) দুপুরে চমেক হাসপাতালের পরিচালকের কক্ষে বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি একথা বলেন।
জালাল উদ্দিন বলেন, ‘চমেক হাসপাতালে আর্থিক সংকট রয়েছে।
চমেকের ৪টি প্রধান সমস্যার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে বড় সমস্যা জায়গার অভাব, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী সংকট, অর্থের স্বল্পতা ও যন্ত্রপাতির স্বল্পতা রয়েছে। চমেক হাসপাতালে ৫০০ শয্যার হলেও প্রতিদিন রোগী ভর্তি হন ৩ হাজারেরও বেশি। এর মধ্যে ৬০০ ভর্তি হয় শিশু, সাড়ে ৩০০ জন হৃদরোগী ও ৫০০ রোগী ভর্তি হন আঘাতজনিত সমস্যা নিয়ে। ’
এ স্বল্পতাকে কাটিয়ে ওঠার জন্য ৩টি আলাদা হাসপাতাল তৈরি করতে সরকারকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে জানিয়ে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জালাল উদ্দিন বলেন, ‘সরকারের কাছে প্রস্তাব করেছি, চট্টগ্রামে একটি ৬০০ শয্যার শিশুহাসপাতাল, ৫০০ শয্যার একটি ট্রমা হাসপাতাল ও ৩৫০ হৃদরোগীর জন্য একটি হাসপাতাল প্রয়োজন। এই দেড় হাজার রোগী চমেক হাসপাতাল থেকে ওইসব স্থানে স্থানান্তর হলে চট্টগ্রামে রোগীদের ভোগান্তি থেকে মুক্তি যেমন মিলবে, তেমনি ভালো চিকিৎসাসেবাও দেওয়া সম্ভব হবে। ’
‘সরকার প্রস্তাবটি গ্রহণ করে এরই মধ্যে একটি শিশু হাসপাতাল ও চমেক হাসপাতালের জন্য ৫০০ শয্যার আরেকটি ভবন তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আশা করছি, খুব শিগগির এসব ভবনের কাজ শুরু হবে’ --যোগ করেন জালাল উদ্দিন।
চট্টগ্রামে ১০০ শয্যার একটি ডেন্টাল হাসপাতাল নির্মাণে সরকার পরিকল্পনা নিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ হাসপাতাল নির্মাণের জন্য চমেক থেকে জায়গা দিয়েছি। এ ছাড়া চীন সরকারের অর্থায়নে ক্যাম্পাসে একটি একক বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ’
তিনি বলেন, ‘ক্যাম্পাসে ৬ তলা আউটডোর বিল্ডিংকে ১০ তলা করা হচ্ছে। এটির কাজ দেড় বছরের মধ্যে শেষ হবে। কার্ডিয়াক সার্জারির ৫ তলা ভবনটিও সম্প্রসারণ করে ১০ তলা করা হচ্ছে। বর্ধিতাংশের কাজ শেষ হলে রোগীদের স্থান সংকুলান হবে। ’
চমেকে প্রায় ৩ হাজার নার্স ও ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী প্রয়োজন দাবি করে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জালাল উদ্দিন বলেন, ‘চমেকে ১৫০০ নার্স প্রয়োজন। ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারীও ১৫০০ দরকার। অথচ কর্মচারী আছে মাত্র ৪০০জন। লোকবল সংকটের কারণে রোগীরা ভালো মানের চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন না। ’
আইনি জটিলতার কারণে কয়েক বছর ধরে চমেকে লোকবল নিয়োগ হচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আইনগত জটিলতা এখন দূর হয়েছে, শিগগির ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ দিতে পারবো। এ ছাড়া সরকার নতুন করে নার্স দেবে বলেছে। আশা করি, অচিরেই চমেক হাসপাতালে রোগীরা ভালো মানের চিকিৎসাসেবা পাবে। ’
অর্থোপেডিক বিভাগের সমস্যার কথা স্বীকার করে জালাল উদ্দিন বলেন, ‘এ বিভাগে রোগীদের সুস্থ হতে অনেক সময় লাগে। এ কারণে একজন রোগীকে চিকিৎসা দিয়ে আরেকজনকে চিকিৎসা দেওয়া কঠিন। এছাড়া শয্যার বাইরে অনেক রোগী থাকার কারণে চিকিৎসকরাও ভালোভারে চিকিৎসাসেবা দিতে পারেন না। ৫জন রোগীকে যদি একজন চিকিৎসক দেখেন তাহলে ভালোভাবে সময় দিতে পারবেন। কিন্তু একজন ডাক্তারকে ৫০জন রোগী দেখতে হলে ভালো মানের সেবা কীভাবে দেবেন!’
বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘন্টা, মে ২২, ২০১৮
জেইউ/টিসি/জেএম