নগরের অলিগলিতে ছড়িয়ে থাকা এমন ৭৫ দুঃখী মাকে একজায়গায় করে মা দিবস উদযাপন করেছে সম্মিলিত মানবিক জাগরণ (সমাজ) নামের একটি সংগঠন। এটি তাদের দ্বিতীয় আয়োজন।
অনুষ্ঠানের জন্য আনুষ্ঠানিকতা নয়।
গ্লাডিওলাস ও লালগোলাপের স্টিক দিয়ে বরণ করে নেন অচেনা সন্তানেরা। পরম মমতায় তাদের রক্তচাপসহ নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা করেন তরুণ চিকিৎসকেরা। ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ওষুধপত্রও তুলে দেন হাতে। মৌসুমি ফল তরমুজ, কমলা, পেঁপেসহ রকমারি ফল দিয়ে আপ্যায়ন। সকালের নাশতা, মধ্যাহ্নভোজের পাশাপাশি ছিল মা’কে নিয়ে গান। এসব গান শুনে মায়েরা কেউ হেসেছেন, কারও চোখ ভিজে যায়।
আরও জানতে পড়ুন: বৃদ্ধাশ্রমে অসুস্থ মা, চিকিৎসক ছেলে লন্ডনে
দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা শেষ হয়। বিদায়ের আগে সবার হাতে তুলে দেওয়া হয় রোদ-বৃষ্টি থেকে বাঁচতে ছাতা, শাড়ি আর নিত্যব্যবহার্য কিছু সামগ্রী। বিনিময়ে মায়েরাও দু’হাত তুলে, মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়েছেন সন্তানদের।
অন্য রকম এ আয়োজনে অংশ নেন সমাজের সমন্বয়কমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট শুভাশিস শর্মা, হাসিনা মহিউদ্দিন, নিলু নাগ, দিনা জালাল, কনক বিশ্বাস তুলি, নাজিমুদ্দিন এনেল, ডা. প্রীতি বড়ুয়া, ডা. লিটন দাশ, ডা. সুজন ধর, ডা. প্রণব বিশ্বাস, ডা. সজিব তালুকদার প্রমুখ।
চিকিৎসাসেবা দেন ডা. শর্মিলী বড়ুয়া, ডা. আনিকা ইবনাত, ডা. সজিব তালুকদার, ডা. অপূর্ব ধর, ডা. সৌমেন, ডা. এসকে পাল, ডা. সঞ্জয় দাশ। মায়ের গান শোনান শিল্পী অমিত সেনগুপ্ত, সৌমেন ভট্টাচার্য ও প্রসেনজিৎ। সমন্বয় করেন অনুপম দেবনাথ পাবেল, অ্যাডভোকেট রুবেল কুমার দেব অপু ও রাজীব দত্ত রাজু।
অনুপম দেবনাথ পাবেল বাংলানিউজকে বলেন, আমরা যদি ছিন্নমূল মা’কে পুনর্বাসন করতে পারতাম তবেই খুশি হতাম। আমাদের সাধ আছে সাধ্য নেই। তবে আমরা বিশ্বাস করি, একদিন সব দুঃখী মায়ের মুখে হাসি ফুটবেই।
তারুণ্যের উচ্ছ্বাসের ‘সমীপে মা’
গান-কবিতার যুগলবন্দিতে মাকে নিবেদিত বিভিন্ন কবির কবিতা ও গানের অংশবিশেষে সাজানো ‘সমীপে মা’ শিরোনামে তারুণ্যের উচ্ছ্বাসের অনবদ্য বাচিক প্রযোজনাটি। সোমবার (১৩ মে) সন্ধ্যায় নগরের জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হলো।
বিশ্ব মা দিবসকে কেন্দ্র করে বাচিক শিল্প চর্চা কেন্দ্র ‘তারুণ্যের উচ্ছ্বাস’র এ প্রযোজনাটির তৃতীয় মঞ্চায়ন অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে কথামালা ও আবৃত্তিতে ছিলেন আবৃত্তিশিল্পী রণজিৎ রক্ষিত। তিনি মাকে নিবেদন করে বেশ কিছু কবিতা আবৃত্তি করেন। এরপর তারুণ্যের উচ্ছ্বাসের শিল্পীরা পরিবেশন করেন ৩৫ মিনিটের বাচিক প্রযোজনা ‘সমীপে মা’।
এ প্রযোজনায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শামসুর রাহমান, সুবোধ সরকার, শুভ দাশগুপ্ত, নচিকেতাসহ বিভিন্ন কবির কবিতা ও গানের সমন্বয়ে চমৎকার পরিবেশনায় দর্শকদের মুগ্ধ করেন।
প্রযোজনাটির গ্রন্থনা ও নির্দেশনায় ছিলেন আবৃত্তিশিল্পী মো. মুজাহিদুল ইসলাম। নেপথ্যে আবহ সুর করেছেন কোলকাতার শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। আবহ প্রক্ষেপণে ছিলেন মিঠু তলাপাত্র। প্রযোজনায় অংশ নিয়েছেন আল তুষি, শ্রাবণী দাশগুপ্তা, সেজুঁতি দে, অরমান হাফিজ ও মো. মুজাহিদুল ইসলাম। তারুণ্যের উচ্ছ্বাসের এ প্রযোজনাটি এর আগে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোলকাতা এবং আসামের শিলচরে মঞ্চস্থ হয়েছিল।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫২ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০১৮
এআর/টিসি