ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

‘চট্টলদরদী’ প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করছেন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০১৮
‘চট্টলদরদী’ প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করছেন জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের সমঝোতা (এমওইউ) স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন আবদুচ ছালাম। ছবি: উজ্জ্বল ধর/বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: ‘২০০৮ সালের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে পদ্মা সেতুর পর চট্টগ্রামে একক বৃহৎ মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন। চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়নে ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকার প্রকল্প এরই একটি অংশ। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে নগরীর দুঃখখ্যাত জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাবে।’

সোমবার (০৯ এপ্রিল) সকালে রেডিসন ব্লু চিটাগাং বে ভিউতে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) আয়োজনে ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন প্রকল্প’র সমঝোতা (এমওইউ) স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বক্তারা চট্টলদরদী প্রধানমন্ত্রীর এ উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষে ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কন্সট্রাকশন ব্রিগেডের উপ-মহাপরিচালক লেফটেনেন্ট কর্নেল শাহরিয়ার আহমেদ ও সিডিএর পক্ষে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হাসান বিন শামস জলাবদ্ধতা নিরসনে এ মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে সমঝোতা (এমওইউ) সই করেন।

জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের সমঝোতা (এমওইউ) স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন  আ জ ম নাছির উদ্দিন।  ছবি: উজ্জ্বল ধর/বাংলানিউজ

সমঝোতা স্বাক্ষরের এ দিনটি স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে উল্লেখ করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, ‘২০০৮ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নগরবাসীকে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই চট্টগ্রামের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী অক্ষরে অক্ষরে তা বাস্তবায়ন করছেন এবং জলাবদ্ধতা প্রকল্প বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া এ সুযোগটা আমাদের কাজে লাগাতে হবে। নগরীকে বাসযোগ্য করে গড়ে তুলতে হবে। ‘

সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বলেন, চট্টগ্রাম শহরকে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই এ প্রকল্পের খোঁজখবর নিয়েছেন। মনিটরিং কমিটি গঠন করে প্রকল্প বাস্তবায়নের নির্দেশনা দিয়েছেন। চট্টগ্রামের মানুষকে ভালবেসে প্রধানমন্ত্রী পরিকল্পনা অনুযায়ী এ মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে উদ্যোগ নিয়েছেন। ইতিমধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়নে একনেকের মাধ্যমে বরাদ্ধও দিয়েছেন। দেশে ক্ষমতার পরিবর্তন হবে, প্রধানমন্ত্রী আসবেন; যাবেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতো চট্টলদরদী প্রধানমন্ত্রী আর পাওয়া যাবে না।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, ‘বিরূপ রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে আমার বাবা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ১৭ বছর চট্টগ্রামের উন্নয়নে কাজ করেছেন। এরমধ্যে তিনি ২ বছর জেলে ছিলেন। শুধুমাত্র ৫ বছর রাজনৈতিককাল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মেয়রের দায়িত্বে ছিলেন। এছাড়াও বৈরী সময়ে বাবাকে প্রশাসন পরিচালনা করতে হয়েছিলো। কিন্তু আজকে সেই পরিস্থিতি নেই। আগে দাবি আদায়ে আন্দোলন করতে রাজপথে নামতে হতো। কিন্তু বর্তমানে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে তার মনোনিত ব্যক্তিবর্গ সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম এবং নগরপিতা আ জ ম নাছির উদ্দিন দাবি সৃষ্টি করার আগেই প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে।  এর একমাত্র কারণ বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্ব। তাইতো বিশ্বের উন্নত সিঙ্গাপুর সরকার সেই দেশের ফুলের নাম দিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সম্মান দেখিয়ে নাম রেখেছেন শেখ হাসিনা অর্কিড। ৯ বছরে প্রধানমন্ত্রী উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের সামগ্রিক চিত্র পাল্টে দিয়েছেন। নিজের টাকায় পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করে প্রধানমন্ত্রী তা প্রমাণ করেছেন।  একসময় এ বাংলাদেশে জঙ্গীবাদসহ নানা অপকর্মকে পৃষ্টপোষকতা করা হতো। ধবংসের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিলো। কিন্তু সৌভাগ্যের বিষয় ২০০৮ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা এই দেশ হাতে নিয়েছেন। যোগ্য‍পিতার যোগ্যকন্যা তিনি। এর আগে সিডিএ কর্তৃপক্ষে রাজনৈতিক নেতৃত্ব ছিলো না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তা করেছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে তাল মিলিয়ে সিডিএর মাধ্যমে নতুন নতুন প্রকল্প হাতে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের উন্নয়ন করছেন বলেও মত প্রকাশ করেন তিনি।  

জলাবদ্ধতা প্রকল্পের সমঝোতা স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ব্যারিস্টার নওফেল।  ছবি: উজ্জ্বল ধর/বাংলানিউজ

আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘চট্টগ্রামকে বলা হয়, বাংলাদেশের সিংহ দুয়ার। এজন্য বলা হয়, চট্টগ্রাম বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে। কেমন হবে আগামীর বাংলাদেশ, কেমন হবে আগামীর চট্টগ্রাম। একজন স্বপ্নবান নেতার পক্ষেই সম্ভব। আর স্বপ্নবানটা কে, স্বপ্নটা কি? এ প্রসঙ্গে প্রয়াত ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি এপিজে আব্দুল কালাম বলেছেন, তুমি যদি ঘুমিয়ে দেখো, তা স্বপ্ন নয়; যা তোমাকে ঘুমাতে দেয় না, সেটিই স্বপ্ন। কেমন হবে আগামীর বাংলাদেশ। এ স্বপ্ন বাস্তবায়নে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ঘুমাতে দেয় না। তাই শুধু স্বপ্ন দেখলে হয় না; স্বপ্ন দেখা এবং বাস্তবায়নের মতো নেতৃত্ব দরকার। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে অর্থনৈতিক মন্দাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে উন্নীত হয়েছে। একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে তা সম্ভব হয়েছে। যিনি স্বপ্ন বাস্তবায়নে ঘুমান না। শেখ হাসিনা মানেই বাংলাদেশ। বাংলাদেশকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য আগামী ডিসেম্বরের নির্বাচনে আমরা যেকোন মূল্যে শেখ হাসিনাকে আবারো জয়যুক্ত করবো। ’

চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এমএ সালাম বলেন, জাতিরপিতা বলেছিলেন সোনার বাংলা গড়তে হলে সোনার মানুষ চাই। স্বাধীনতাকে স্বার্থক করতে সোনার মানুষ প্রয়োজন। সোনার মানুষ তো আর জুয়েলারিতে পাওয়া যাবে না। সেই সোনার মানুষ হতে হবে আমাদের। আমরা যে, যেখানে দায়িত্ব পালন করছি, নিজ নিজ অবস্থান থেকেই দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশকে আরও এগিয়ে নিতে হবে। আগামী নির্বাচনে আবারো আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনতে হবে। ’

সমঝোতা স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন একুশে পদকপ্রাপ্ত গুণীজন ও প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. অনুপম সেন, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আলম চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান প্রমুখ।

জলাবদ্ধতা প্রকল্পে শতভাগ সহযোগিতা করবে চসিক: নাছির

জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি দিতে এগিয়ে এসেছে সেনাবাহিনী

বাংলাদেশ সময়: ২২২৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০১৮

এসবি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।