প্রশ্নফাঁসের দায়ে আটক হওয়া পটিয়া আইডিয়াল স্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থী নুরুল আলম এসব কথা বলেন।
ফেসবুকে ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে প্রশ্নটি পাওয়ার পর মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা ৫৫ মিনিটে আমার একই স্কুলের কয়েকজন বন্ধুর ইনবক্সে দিয়ে দিই জানিয়ে নুরুল আলম বাংলানিউজকে আরও বলেন, ‘সাইমন আবির, নয়ন, আবির, সাজ্জাদকে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ওই প্রশ্নটি দিই।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে আটক নুরুল আলম বলেন, ‘সিএনএনডি, সিটিজি সেল বাজার, আইডিয়াল স্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থী গ্রুপসহ আরও বেশ কয়েকটি ফেসুবক আইডি ও ম্যাসেঞ্জার গ্রুপের মাধ্যমে এসএসসির প্রশ্ন পাওয়া যাচ্ছে। পরে আমরা পরীক্ষার্থীরা তা সংগ্রহ করতাম। ’
‘পদার্থ বিজ্ঞান প্রশ্নটি নিতে আহমেদ সাইয়েম নামে ওই আইডি থেকে ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে আমার কাছ থেকে প্রথমে ১ হাজার টাকা দাবি করছিলো। পরে ৬০০ টাকায় প্রশ্নটি দিয়েছে বলেও জানান নুরুল আলম।
মঙ্গলবার সকাল সোয়া নয়টার দিকে নগরীর জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদের পাশের সড়কে শ্যামলি পরিবহনের একটি বাস থেকে স্মার্টফোনে ফাঁস হওয়া প্রশ্ন ও উত্তরপত্র দেখার সময় পটিয়া আইডিয়াল স্কুলের ৫৬ জন শিক্ষার্থীকে ধরে ফেলেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মোরাদ আলী।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘ওই বাসে থাকা আইডিয়াল স্কুলের পরীক্ষার্থীরা পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ের প্রশ্ন ও উত্তরপত্র দেখছিলো। সেই মুহূর্তে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে দুইটি বড় ট্যাপ, ৫টি স্মার্ট ফোন ও ২টি উত্তরপত্র লেখা খাতা উদ্ধার করা হয়। পরে মানবিক দিক বিবেচনায় বাসে থাকা একই স্কুলের বিজ্ঞান ও ব্যবসা শাখার ৫৬ জন পরীক্ষার্থীকে বাওয়া স্কুল কেন্দ্রে পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ দেয়া হয়েছিল। ’
পরীক্ষা শুরুর প্রায় এক ঘণ্টা আগে স্মার্টফোনে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে পাওয়া খ সেটের পদার্থবিজ্ঞানের প্রশ্নটির সাথে পরীক্ষা কেন্দ্রের প্রশ্নের হুবহু মিল থাকার কথা জানিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. হাবিবুর রহমান।
চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শওকত আলম বাংলানিউজকে জানান, প্রশ্নফাঁস ও অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে যাচাই-বাচাই করে বাওয়া স্কুল কেন্দ্রের ২৪ পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। অভিযুক্ত আইডিয়াল স্কুলের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগের বিষয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানান তিনি।
জেলা প্রশাসক মো. জিল্লুর রহমান জানান, ছোট ছোট শিশুদের কাছে স্মার্টফোনের মাধ্যমে পরীক্ষা শুরুর আগে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে দেয়া হচ্ছে। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধবংস করতে একটি চক্র সক্রিয়। তাদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে। প্রশ্নফাঁসে জড়িত আইডিয়াল স্কুলের পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে লিখিত জবানবন্দি নেয়া হয়েছে। বেশ কিচু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। প্রশ্নফাঁসে জড়িত থাকার দায়ে ৯ জনকে আটকের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের বহনকারী বাসে থাকা আইডিয়াল স্কুলের শিক্ষিকাকে কোহিনুর আক্তারকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইসিটি মামলা হচ্ছে। প্রশ্নফাঁসে জড়িত সিন্ডিকেটের মূলহোতাকে ধরতে প্রশাসন কাজ করছে। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৮
এসবি/টিসি