ইতিমধ্যে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) এ প্রকল্পের অনুমোদনও দিয়েছে। পানি শোধনাগার নির্মাণস্থানের জন্য ভূমির অনুমোদনও মিলেছে।
ভান্ডালজুড়ি পানি সরবরাহ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মুহম্মদ মাহবুবুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, ইতিমধ্যে প্রকল্পের অনুমোদন থেকে জমির অনুমোদন-সব মিলেছে। আমরা আগামী বছরের শেষের দিকে প্রকল্পের কাজ শুরু করতে চাচ্ছি।
প্রকল্পের কাজ শেষ হতে অবশ্য চার-পাঁচ বছর লেগে যাবে বলে জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।
এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ওয়াসার ব্যয় হবে ১ হাজার ৩৬ কোটি টাকা। প্রকল্পের জন্য কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংক ৭৫৪ কোটি টাকা ঋণ দেবে। ২৬২ কোটি টাকা দেবে বাংলাদেশ সরকার। বাকি ২০ কোটি টাকা ওয়াসা নিজস্ব তহবিল থেকে খরচ করবে।
প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে যে পানি উৎপাদিত হবে, তার ৭৫ ভাগ সরবরাহ করা হবে শিল্পাঞ্চলের জন্য। বাকি ২৫ ভাগ বরাদ্দ থাকবে আবাসিকের গ্রাহকদের জন্য।
২০১৬ সালের ৫ জানুয়ারি একনেকে প্রকল্পটি অনুমোদন পায়। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ওয়াসার দৈনিক ৬ কোটি লিটার পানি উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
চট্টগ্রাম ওয়াসা সূত্র জানায়, কর্ণফুলীর নদীর বাম তীরে গড়ে ওঠা বিভিন্ন আবাসিক এলাকা, সরকারি ও বেসরকারি শিল্প প্রতিষ্ঠান, কোরিয়ান ইপিজেডসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় পানি সরবরাহের জন্য এই প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছে। একনেকে অনুমোদন পাওয়ার প্রেক্ষিতে প্রকল্পের কাজ সময়মতো শুরু করার জন্য ইঞ্জিনিয়ারিং কনসালট্যান্ট নির্বাচনের জন্য আরএফপি (রিকোয়েস্ট ফর প্রপোজাল) মূল্যায়ন করা হযেছে। এতে দাতা সংস্থার অনাপত্তি পাওয়া গেছে।
সেই অনুযায়ী প্রকল্পের প্রকৌশল পরামর্শক নিয়োগের ক্রয় প্রস্তাব মন্ত্রিসভা কমিটিতে অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
এছাড়া প্রকল্পের পানি শোধনাগার নির্মাণস্থানের ৪১ দশমিক ২৬ একর ভূমি অধিগ্রহণ প্রস্তাব প্রধামন্ত্রী কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে। যা জেলা প্রশাসন কর্তৃক প্রাক্কলনের পর্যায়ে আছে। পাশাপাশি পটিয়া এলাকায় রিজার্ভার নির্মাণকাজে ৪ দশমিক ৯৭ একর ভূমি জেলা প্রশাসন চূড়ান্ত করেছে।
বোয়ালখালীর জ্যৈষ্ঠ গ্রামের ভান্ডালজুড়ি খালের পাড়ে এই প্রকল্পের শোধনাগার তৈরি করা হবে। সেখান থেকে কর্ণফুলী নদীর বাম তীরে অবস্থিত শিল্পকারখানা ও আবাসিক এলাকায় পানি যাবে।
তিন প্যাকেজে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে। প্রথম প্যাকেজে পানি নির্মাণ শোধনাগার গড়ে তোলা হবে। এরপর ট্রান্সমিশন, কনভেয়েন্স ও ডিস্ট্রিবিউশন পাইপলাইন নির্মাণ করা হবে। শেষ প্যাকেজে কোরিয়ান ইপিজেডে ও পটিয়ায় পানির রিজার্ভার নির্মাণ করা হবে।
বর্তমানে চট্টগ্রাম ওয়াসা নগরীর পানি চাহিদার ৪২ শতাংশ মেটাতে পারে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে চট্টগ্রাম শহরের বিশেষত কর্ণফুলী নদীর বাম তীরে বসবাসরত জনসাধারণ ও বিভিন্ন শিল্প কারখানার উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেছে চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক একে এম ফজলুল্লাহ।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৭
টিএইচ/টিসি/এমজেএফ